আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
145 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
edited by
আমার বাবার ইনকামে হালাল হারামের সংমিশ্রণ রয়েছে। আমি ব্যবসার জন্য আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিতে চাচ্ছি। যেহেতু বাবার ইনকামে হালাল হারামের সংমিশ্রণ রয়েছে সেহেতু আমি কোনো কিছু বিক্রি করার মাধ্যমে আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিতে চাচ্ছি। যেমন ধরেন, আমি আমার বাবার কাছে একটি আতর বিক্রি করলাম ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এবং আমার বাবাও এই লেনদেনে ইচ্ছা পোষণ করল।

১) এখন, আমি এই লেনদেনের মাধ্যমে যদি আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করি, তাহলে এই ব্যবসার মূলধন এবং উপার্জন আমার জন্য হালাল হবে কিনা ?

২) আর যদি, আমি আমার বাবার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করি এবং কিছু মাস বা বছর অতিক্রম হওয়ার পর আমার বাবা যদি আমার ঋণ মাফ করে দেয় তাহলে এই ব্যবসার মূলধন এবং উপার্জন আমার জন্য হালাল হবে কিনা?

৩) উপরের ১ নং বা ২ নং উপায়ের মাধ্যমে যদি আমার ব্যবসার মূলধন এবং উপার্জন আমার জন্য হারাম হয়, তাহলে আমি কি ভাবে হালাল উপায়ে আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (564,870 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


https://ifatwa.info/25087/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
হারাম টাকায় ব্যবসা করাও নাজায়েজ। 
,
তবে কঠিন প্রয়োজন বশত এমনটি হলে উক্ত ব্যবসার লভ্যাংশ ব্যবহারের অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।   তারা বলেছেন যে এটি সেই ব্যবসায় তার পরিশ্রমের বিনিময়। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ مَخْلَدِ بْنِ خُفَافٍ قَالَ : ابْتَعْتُ غُلَامًا فَاسْتَغْلَلْتُه ثُمَّ ظَهَرْتُ مِنْهُ عَلٰى عَيْبٍ فَخَاصَمْتُ فِيهِ إِلٰى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَقَضٰى لِىْ بِرَدِّه وَقَضٰى عَلَىَّ بِرَدِّ غَلَّتِه فَأَتَيْتُ عُرْوَةَ فَأَخْبَرْتُه فَقَالَ : أَرُوْحُ إِلَيْهِ الْعَشِيَّةَ فَأُخْبِرُه أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْنِىْ أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَضٰى فِىْ مِثْلِ هٰذَا : أَنَّ الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ فَرَاحَ إِلَيْهِ عُرْوَةُ فَقَضٰى لِىْ أَنْ اٰخُذَ الْخَرَاجَ مِنَ الَّذِىْ قَضٰى بِه عَلَىِّ لَه

মাখলাদ ইবনু খুফাফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি দাস কিনেছিলাম এবং তার মাধ্যমে কিছু উপার্জনও করিয়েছিলাম। অতঃপর আমি তার মধ্যে একটি দোষ সম্পর্কে অবগত হলাম এবং শাসনকর্তা ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে আমি তার বিষয়ে অভিযোগ করলাম। তিনি বিচার করলেন যে, আমি তাকে ফেরত দিতে পারবো, তবে অবশ্যই তার দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই আমাকে ফেরত দিতে হবে। আমি ‘উরওয়াহ্ (রহঃ)-এর নিকট এ রায় জানালাম। তিনি বললেন, আমি সন্ধ্যাকালেই শাসনকর্তার নিকট যাবো এবং তাঁকে অবহিত করবো। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জাতীয় ঘটনায় রায় দিয়েছেন যে, উপার্জিত আয় তার তত্ত্বাবধান ব্যয় বলে সাব্যস্ত হবে। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) সন্ধ্যাকালেই ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে গেলেন। এমতাবস্থায় তিনি বিচার করলেন যে, উক্ত উপার্জিত আয় তিনি পূর্বে (প্রথমে) যাকে দেয়ার জন্য আদেশ করেছিলেন তার কাছ থেকে আমি যেন তা ফেরত নেই।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ২৮৭৯)

উক্ত সম্পদ দ্বারা ব্যবসা করে যে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছে বা হবে,তাহা গ্রহন করা জায়েজ নেই,এটিই অনেক ইসলামী স্কলারদের মত।

★তবে ইমাম শাফেয়ী ও মালেক রহঃ এর মতে সে ব্যাক্তি লভ্যাংশ নিজের পরিশ্রমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে  (নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৫১)। 
তবে তাদের মতেও এহেন ব্যবসার লাভ পরিত্যাগ করাই অধিকতর নিরাপদ ও তাক্বওয়াপূর্ণ।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার ইনকামে হালাল হারামের সংমিশ্রণ থাকলে যদি হালালের পরিমাণই বেশি হয়,সেক্ষেত্রে আপনি উপরোক্ত কোনো ছুরত অবলম্বন না করেই এভাবে তার থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন।

আর যদি হারামের পরিমাণই বেশি হয়,সেক্ষেত্রে উপরোক্ত ২য় পদ্ধতি অবলম্বন নাজায়েজ। 
১ম পদ্ধতির এই আতর ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে টাকা হালাল করার যে প্রক্রিয়া নিতে চাচ্ছেন,এই প্রক্রিয়া অনেকটা ধোকা মূলক হওয়ায় এ পদ্ধতি অবলম্বন না করার পরামর্শ থাকবে। 

আপনি আপনার বাবা হতে টাকা ঋন নিয়ে পরে হালাল টাকা দিয়ে সেই টাকা পরিশোধ করবেন।

তদুপরি আপনি যদি এভাবে টাকাটা পরিশোধের নিয়তে ঋন হিসেবে না নিতে চান,আর অন্য কোনো সহীহ পদ্ধতি না পাওয়া যায়,এক্ষেত্রে আপনার বাবা হতে টাকা নেয়া ছাড়া যদি আপনার ব্যবসা করাও অসম্ভব হয়,আর আপনার জন্য এখন ব্যবসাও খুব জরুরী হয়,সেক্ষেত্রে ১ম পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 311 views
...