আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
216 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)

1) আমি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ক্যাশে কাজ করতাম, যেখানে নগদ টাকা জমা উত্তোলন সংক্রান্ত কাজ করেছি। প্রতিষ্ঠানে সুদের কারবার থাকায় আমি জবটি ছেড়ে দিয়েছি এবং আল্লাহর কাছে তওবা করেছি, জীবনেও সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করব না এবং সুদসংক্রান্ত আয়-ব্যয়-ঋণে জড়াব না এখন আমার কাছে জবের বেতনের টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ডের কিছু টাকা আছে। উল্লেখ্য আমার কাছে টাকা ব্যাতিত আর কোন টাকা নেই। এখন আমি উক্ত টাকা হতে কি একটি হালাল ব্যবসায় করতে পারব ও উক্ত হালাল ব্যাবসায়ের ইনকামের টাকা ও বিনিয়োগের টাকা দিয়ে হালাল খরচ সমূহ করতে পারব কিনা?

2) বর্তমানে আমার কাছে জীবন-ধারণের জন্য এই অল্প এই টাকায় আছে এবং বেকার। তাই এই টাকায় আমার পরিবার চালাচ্ছি। তাই এই টাকা দিয়ে ব্যবসা, পরিবারের ভরণ-পোষন, এবং পরবর্তীতে কুরবানীর সময় কুরবানী দিতে পারব কিনা?

3) যেহেতু আমি ক্যাশ ডিপার্টমেন্টে কাজ করেছি। এখানে কতটুকু পরিমাণ হালাল-হারাম আছে তা আমার জানা নেই। যেহেতু ক্যাশ ডিপার্টমেন্টে জমা ও উত্তোলনের মাধ্যমে অনেক ব্যবসায়ীক লেনদেন সম্পন্ন হয়। আর, বীমা, ব্যাংক, এনজিও ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্যাশের চাকরির ইনকাম কতটুকু হারাম-হালাল?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
উক্ত টাকায় ব্যবসা করাও নাজায়েজ। 
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যবসা জায়েজ হবেনা, সেই ইনকমের টাকা আর বিনিয়োগের টাকা কোনোটাই ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা।
,
তবে কঠিন প্রয়োজন বশত এমনটি হলে উক্ত ব্যবসার লভ্যাংশ ব্যবহারের অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।   তারা বলেছেন যে এটি সেই ব্যবসায় তার পরিশ্রমের বিনিময়। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ مَخْلَدِ بْنِ خُفَافٍ قَالَ : ابْتَعْتُ غُلَامًا فَاسْتَغْلَلْتُه ثُمَّ ظَهَرْتُ مِنْهُ عَلٰى عَيْبٍ فَخَاصَمْتُ فِيهِ إِلٰى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَقَضٰى لِىْ بِرَدِّه وَقَضٰى عَلَىَّ بِرَدِّ غَلَّتِه فَأَتَيْتُ عُرْوَةَ فَأَخْبَرْتُه فَقَالَ : أَرُوْحُ إِلَيْهِ الْعَشِيَّةَ فَأُخْبِرُه أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْنِىْ أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَضٰى فِىْ مِثْلِ هٰذَا : أَنَّ الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ فَرَاحَ إِلَيْهِ عُرْوَةُ فَقَضٰى لِىْ أَنْ اٰخُذَ الْخَرَاجَ مِنَ الَّذِىْ قَضٰى بِه عَلَىِّ لَه

মাখলাদ ইবনু খুফাফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি দাস কিনেছিলাম এবং তার মাধ্যমে কিছু উপার্জনও করিয়েছিলাম। অতঃপর আমি তার মধ্যে একটি দোষ সম্পর্কে অবগত হলাম এবং শাসনকর্তা ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে আমি তার বিষয়ে অভিযোগ করলাম। তিনি বিচার করলেন যে, আমি তাকে ফেরত দিতে পারবো, তবে অবশ্যই তার দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই আমাকে ফেরত দিতে হবে। আমি ‘উরওয়াহ্ (রহঃ)-এর নিকট এ রায় জানালাম। তিনি বললেন, আমি সন্ধ্যাকালেই শাসনকর্তার নিকট যাবো এবং তাঁকে অবহিত করবো। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জাতীয় ঘটনায় রায় দিয়েছেন যে, উপার্জিত আয় তার তত্ত্বাবধান ব্যয় বলে সাব্যস্ত হবে। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) সন্ধ্যাকালেই ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে গেলেন। এমতাবস্থায় তিনি বিচার করলেন যে, উক্ত উপার্জিত আয় তিনি পূর্বে (প্রথমে) যাকে দেয়ার জন্য আদেশ করেছিলেন তার কাছ থেকে আমি যেন তা ফেরত নেই।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ২৮৭৯)

উক্ত সম্পদ দ্বারা ব্যবসা করে যে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছে বা হবে,তাহা গ্রহন করা জায়েজ নেই,এটিই অনেক ইসলামী স্কলারদের মত।

★তবে ইমাম শাফেয়ী ও মালেক রহঃ এর মতে সে ব্যাক্তি লভ্যাংশ নিজের পরিশ্রমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে  (নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৫১)। 
তবে তাদের মতেও এহেন ব্যবসার লাভ পরিত্যাগ করাই অধিকতর নিরাপদ ও তাক্বওয়াপূর্ণ 
,
(০২)
কোনোটিই করা জায়েজ নেই।
,
(০৩)
সূদ ভিত্তিক কোনো কোম্পানী ইত্যাদির ক্যাশের চাকুরী করা জায়েজ নেই।    
,
হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,    
উপরে উল্লেখিত সমস্ত বিধান শুধু ঐ ছুরতে,যখন উক্ত প্রতিষ্ঠান এর পুরাটাই সূদের কার্যক্রম হয়,বা অধিকাংশই সুদের হয়।
হ্যাঁ যদি সেই কোম্পানির কিছু সূদের কার্যক্রম হয়,অধিকাংশই হালাল  কার্যক্রম হয়,সেক্ষেত্রে সেই বেতন নেওয়া জায়েজ আছে,সেই বেতন দিয়ে ব্যবসা জায়েজ আছে।
সেই চাকুরীও জায়েজ আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (678,880 points)
সংযোজন করা হয়েছে   

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...