আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (21 points)

আসসালামু আলাইকুম। নীচের প্রশ্নগুলোর বিস্তারিত উত্তর আশা করছি। জাযাকাল্লাহু খায়রান।

(১) কেউ যদি ইসলামের সব কিছুকে মেনে চলে কিন্তু কোনো একটা হারামকে হারাম জানা সত্ত্বেও হারাম মনে না করে বরং হালাল বলে মনে করে এবং সে হালাল মনে করেই হারাম কাজটি করতে থাকে, তাহলে কি সে কাফের হয়ে যাবে? দলিলসহ যদি বলতেন।

(২) এক আল্লাহর প্রতি এবং তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনাটাই কি ঈমান আনয়ন করার জন্য যথেষ্ট নয়? প্রত্যেকটা হারামকে কি হারাম বলে মনে করতেই হবে নয়তো সে কি কাফের হয়ে যাবে? (৩) কেউ একজন সারাজীবন ইসলামের সবকিছু মেনে চললো কিন্তু কোনো একটা হারামকে হারাম জানা সত্বেও সে হারাম বলে মানতে চাইলো না, তাহলে কি সে কাফের হয়েই থাকবে? কারণসহ যদি বলতেন।

(৪) অহংকার করে নয় বা ইসলামকে অবমাননা করার জন্য নয়, শুধুমাত্র কোনো একটা হারাম কাজে তার উপকার রয়েছে বলে, সে যদি ওই হারাম কাজটিকে হারাম জানা সত্বেও তার বোঝার সীমাবদ্ধতার কারণে হালাল বলে মনে করে তাহলেও কি সে কাফের হয়ে যাবে? কারণসহ যদি বলতেন। (৫) মূলত কী ধরনের চিন্তা করে হারাম কে হালাল বলে মনে করলে সে কাফের হবে? (৬) শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে কেউ যদি হারামকে হালাল মনে করে, তাহলেও কি সে কাফের হয়ে যাবে?

(৭) কোনো একটা হারামকে হারাম মনে করা সত্ত্বেও পূর্বে সেই হারাম কাজ করে উপকৃত হওয়ার কারণে, অনেক সময় শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে সেই হারাম কাজটিকে মন থেকে হারাম মনে করছে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে ভুগতে হয়, এতে কি ঈমান চলে যায়? কারণসহ যদি বলেতেন।

(৮) আল্লাহ সকল গুনাহ মাফ করতে পারে জেনেও কেউ যদি বিশ্বাস রাখে যে,------অমুক গুনাহটি একবার কেউ করে ফেললে সে কাফের হয়ে যাবে এবং আল্লাহর কাছে মাফ চাইলেও আল্লাহ তাকে আর কখনো মাফ করবে না-------তাহলে এই ধরণের আকিদা ইচ্ছাকৃতভাবে পোষণ করার কারণে ঈমানহারা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা? কারণসহ যদি বলেতেন।

(৯) কেউ যদি মুফতীদের ফতোয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে, শরীয়তের বিধানগুলোকে ইচ্ছাকৃত নিজের মতো উল্টা করে চিন্তা করে, এমনকি তা জায়েজ বিষয়কে নাজায়েজ করার পর্যায়ে চলে যায় এবং সেটা শুধু তার চিন্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বরং তার কাজকর্মেও যদি তা প্রকাশ পায়, তাহলে কি সে কাফের হয়ে যাবে? কারণসহ যদি বলেতেন।

(১০) কোনো একটা কাজ করলে কাফের হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও, কেউ যদি এমন চিন্তা করে কাজটি করা থেকে বিরত থাকে যে, যদি কোনো কারণে আল্লাহ তাকে কাফের হিসেবে গণ্য করে তাহলে তো সব শেষ। এখানে কাজটির জন্য কাফের হওয়ার সম্ভাবনা নেই তবুও আল্লাহ যদি কাফের হিসেবে গণ্য করে---- এরকম চিন্তা করা ঈমান হারানোর দিকে ধাবিত করে কিনা?(১১) কোনো কারণে যদি আল্লাহ কাফের হিসেবে গণ্য করে, এরকম চিন্তা করার মাধ্যমে আল্লাহর ন্যায়বিচারের প্রতি যদি কেউ আস্থা হারিয়ে ফেলতে থাকে, তাহলে তা ঈমানের ক্ষতি করতে পারে কিনা বা ঈমান হারানোর দিকে ধাবিত করে কিনা? কারণসহ যদি বলেতেন।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হালাল কে হারাম সাব্যস্ত করা এবং হারামকে হালাল সাব্যস্ত করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ তা'আলার।আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত অন্য কেউ হারাম কে হালাল এবং হালালকে হারাম সাব্যস্ত করতে পারবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَلاَ تَقُولُواْ لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَـذَا حَلاَلٌ وَهَـذَا حَرَامٌ لِّتَفْتَرُواْ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ لاَ يُفْلِحُونَ

তোমাদের মুখ থেকে সাধারনতঃ যেসব মিথ্যা বের হয়ে আসে তেমনি করে তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে বল না যে, এটা হালাল এবং ওটা হারাম। নিশ্চয় যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে, তাদের মঙ্গল হবে না।(সূরা নাহল-১১৬)

قُلْ أَرَأَيْتُم مَّا أَنزَلَ اللّهُ لَكُم مِّن رِّزْقٍ فَجَعَلْتُم مِّنْهُ حَرَامًا وَحَلاَلاً قُلْ آللّهُ أَذِنَ لَكُمْ أَمْ عَلَى اللّهِ تَفْتَرُونَ

বল, আচ্ছা নিজেই লক্ষ্য করে দেখ, যা কিছু আল্লাহ তোমাদের জন্য রিযিক হিসাবে অবতীর্ণ করেছেন, তোমরা সেগুলোর মধ্য থেকে কোনটাকে হারাম আর কোনটাকে হালাল সাব্যস্ত করেছ? বল, তোমাদের কি আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, নাকি আল্লাহর উপর অপবাদ আরোপ করছ?(সূরা ইউনুস-৫৯)

قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُواْ أَوْلاَدَهُمْ سَفَهًا بِغَيْرِ عِلْمٍ وَحَرَّمُواْ مَا رَزَقَهُمُ اللّهُ افْتِرَاء عَلَى اللّهِ قَدْ ضَلُّواْ وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ

নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা নিজ সন্তানদেরকে নির্বুদ্ধিতাবশতঃ কোন প্রমাণ ছাড়াই হত্যা করেছে এবং আল্লাহ তাদেরকে যেসব দিয়েছিলেন, সেগুলোকে আল্লাহর প্রতি ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে হারাম করে নিয়েছে। নিশ্চিতই তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং সুপথগামী হয়নি।(সূরা আন'আম-১৪০)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এক্ষেত্রে কাজটি যদি অকাট্য ভাবে প্রমানিত হারাম কাজ হয়,আর সে জেনে শুনে সেই হারাম কাজকে হালাল বিশ্বাস রেখে করে, সেক্ষেত্রে কাজটি করার দরুন তার ঈমান চলে যাবে। 

দলিল উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে কাজটি অকাট্য ভাবে হারাম বলে প্রমাণিত না হলে বা সে না জেনে সেটিকে হারাম মনে করে করলে সেই ব্যাক্তির ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
এক আল্লাহর প্রতি এবং তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনাটাই ঈমান আনয়ন করার জন্য যথেষ্ট।

(০৩)
এক্ষেত্রে সেটি যদি অকাট্য ভাবে প্রমানিত হারাম বস্তু হয়,আর সে তাহাকে যদি কথায় হালাল বলে ঘোষণা করে,সেক্ষেত্রে তার ঈমান চলে যাবে। 

দলিল উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

(০৪)
এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা। 
কেননা সে মুখে স্পষ্ট আকারে হারামকে হালাল বলেনি।
শুধু মন মনে কিছু ধারণা করেছে,মাত্র।

(০৫)
কোনো কাজ যদি অকাট্য ভাবে প্রমানিত হারাম হয়,আর কেহ যদি সেটিকে জেনে শুনে হালাল বলে ঘোষণা করে,সেক্ষেত্রে তার ঈমান চলে যাবে। 

(০৬)
এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা। 
কেননা সে মুখে স্পষ্ট আকারে হারামকে হালাল বলেনি।

(০৭)
এতে তার ঈমান চলে যাবেনা। 

কেননা শুধু শুধু সন্দেহের দরুন ঈমান চলে যায়না।

(০৮)
এই ধরণের আকিদা ইচ্ছাকৃতভাবে পোষণ করার কারণে ঈমানহারা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এটি আল্লাহর বিচারের উপর এক ধরনের বিশ্বাস মাত্র,শরীয়তের অকাট্য ভাবে প্রমানিত কোনো বিধানকে নিয়ে ঠাট্রা করা হয়নি,বা হারামকে হালাল বলা হয়নি।

(০৯)
এক্ষেত্রে সেটি যদি অকাট্য ভাবে প্রমানিত হালাল বস্তু হয়,আর সে তাহাকে যদি কথায়/কাজে হারাম বলে ঘোষণা করে,সেক্ষেত্রে তার ঈমান চলে যাবে। 

দলিল উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

(১০)
এরকম চিন্তা করা ঈমান হারানোর দিকে ধাবিত করেনা।

(১১)
তাহলে ঈমানের ক্ষতি করতে পারেনা বা ঈমান হারানোর দিকে ধাবিত করেনা।

কেননা এখানে কোনো কুফরি মূলক কাজ পাওয়া যায়নি। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...