আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (32 points)
edited by
১/ স্বামী কি যে কোন কারনে বা কোন কারন ছাড়া তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে ?

২/এমন কোন কারন আছে কি ,যে কারনে তালাক দিলে স্বামী গুণাহগার হতে পারে ?

৩/ আমার বিয়ের কয়েকমাস পর আমার স্ত্রীর সাথে তার বোনের দেবরের ``ভাব" থাকার কথা কানে আসে ৷ এখন আমার কথা হল , বিয়ের পর যদি তার সাথে পর্দা না করার আক্রোশে তাকে তালাক দেওয়ার চিন্তা করি বা দিই তাহলে কি আমি জান্নাতের  ঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত হবো? ( প্রায় ১০ মাস হতে যাচ্ছে এখনো অন্যক্ষেত্রেও তাকে প্রোপার পর্দা করাতে পারিনি , এছাড়া তার কিছু কিছু বিষয়ে আমি অসন্তুষ্ট ৷ আমার বাপ মা ও বলে এই বউ নিয়ে তোর শান্তি হবে না ৷ )

৩/ তাকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে অনেকগুলো জোরালো কারণ (যেমন তার বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধায় অতিষ্ট, যে জিনিসগুলো আমি অপছন্দ করি সেগুলো থেকে বিরত থাকে না, নিজেকে সংশোধন করে না, আমার সুবিধা অসুবিধা বোঝেনা, তার ওপর এখন বিশ্বাস রাখতে পারি না, শ্বশুর বাড়ির লোকজনের উপরে সন্তুষ্ট না ইত্যাদি)  থাকলেও মনের ভিতর ওসওয়াসা  তৈরি হচ্ছে যে, আমি কি তার এই যে বেয়াইয়ের সাথে ভাব থাকার  সন্দেহের কারণেই মূলত তালাক দিতে চাচ্ছি  কিনা। সত্যিকার অর্থে ভিতর থেকে কেউ যেন বলছে, ❝অন্যান্য কারণ যেমন তেমন তোর মনে হয়তো ওর বেয়াই এর সাথে সম্পর্ক থাকার  সন্দেহের কারণেই মূলত তুই তালাক দিতে চাচ্ছিস❞।   কেননা আমাকে পূর্বে একটি প্রশ্নের  উত্তরে বলা হয়েছে যে , স্ত্রীর  কারো সাথে সম্পর্ক থাকার  সন্দেহে তালাক দিলে স্বামী  জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না  । এই ওসওয়াসা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী? তাহলে কি আমি শুধু এই ওসওয়াসার কারণে মনের ভিতর জান্নাতের ঘ্রাণ না পাওয়ার  যে ভয় বদ্ধমূল হয়েছে সে কারণে ইচ্ছা হলে  স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের উদ্যোগ নিতে পারবো না?

1 Answer

0 votes
by (677,400 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
স্বামী যে কোন কারনে বা কোন কারন ছাড়া তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।

শরীয়ত সম্মত কারন ছাড়া স্ত্রীকে তালাক দেয়া জায়েজ নেই।

বিনা কারণে তালাক আবেদন কারী মহিলা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

 ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ ﻃَﻼَﻗًﺎ ﻓِﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺑَﺄْﺱٍ ﻓَﺤَﺮَﺍﻡٌ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ . ‘

যে মহিলা বিনা কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়, তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’।

[আবুদাউদ হা/২২২৬; তিরমিযী হা/১১৮৭; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; মিশকাত হা/৩২৭৯, সনদ ছহীহ।].

ﺫﻫﺐ ﻓﻘﻬﺎﺀ ﺍﻟﺤﻨﻔﻴّﺔ ﻭﺍﻟﺤﻨﺎﺑﻠﺔ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐ ﻣﺤﺮّﻡٌ ﺷﺮﻋﺎً ﻭﻳﺄﺛﻢ ﻓﺎﻋﻠﻪ، ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻞ ﺫﻭﺍﻕ، ﻣﻄﻼﻕ ) ﻭﻷﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻛﻔﺮﺍً ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ، ﺣﻴﺚ ﺇﻥّ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ ﻧﻌﻤﺔ ﻣﻦ ﻧﻌﻢ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐٍ ﻛﻔﺮٌ ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ؛ ﻭﻛﻔﺮﺍﻥ ﺍﻟﻨﻌﻤﺔ ﺣﺮﺍﻡ، ﻓﻼ ﻳﺤﻞّ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺇﻻ ﻟﻀﺮﻭﺭﺓ .

فقه السنة (الطبعة الثالثة)، بيروت: دار الكتاب العربي، صفحة 242، جزء 2

ভাবার্থ-

হানাফি এবং হাম্বলী ফুকাহায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,বিনা কারণে তালাক প্রদাণ শরীয়তের দৃষ্টিকোণে হারাম।এবং তালাক প্রদাণকারী গোনাহগার। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ আমভাবে বলেছেন,আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক স্বাদ আস্বাদনকারীদের উপর লা'নত প্রদাণ করেন।কেননা তালাক প্রদাণ দ্বারা আল্লাহ তা'আলা র নিয়ামতকে অস্বীকার করা হয়। বিবাহ আল্লাহর নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নিয়ামত।আর বিনা কারণে তালাক প্রদাণ মানে বিবাহ নামক নিয়ামতকে পরিত্যাগ, অস্বীকার এবং অবহেলা করা। আর নিয়ামতকে অস্বীকার বা পরিত্যাগ করা হারাম।সুতরাং প্রয়োজন ব্যতীত তালাক হালাল হবে না।
ফিকহুস সুন্নাহ-২/২৪২

সুতরাং বিনা কারণে তালাক প্রদাণ করা হারাম।এর শাস্তি আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে অবশ্যই পেতে হবে।

আরো জানুনঃ

(০২)
যদি স্ত্রীর কোনো দোষ না থাকে,সংসারে কোনো ঝগড়াঝাটিও না হয়,স্বামী যদি এমনিতেই তথা শরীয়ত সম্মত কারন ছাড়া স্ত্রীকে তালাক দেয়,সেক্ষেত্রে তালাক দিলে স্বামী গুণাহগার হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনি তালাক দিলে তাহা জায়েজ হবে। 
আপনি জান্নাতের ঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত হবেননা।
তবে তালাক দেয়ার আগে পরামর্শ থাকবে,স্টেপ বাই স্টেপ নিম্নোক পন্থাগুলি অবলম্বন করার।

বিছানা পৃথক করে দেয়া,প্রয়োজনে আপনার হুকুম মানার আগ পর্যন্ত তাকে বাবার বাসায় রেখে আসা,এতেও কাজ মা হলে,মৃদু প্রহার,তাতেও কাজ না হলে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে স্ত্রীকে বুঝানো।

তাতেও কাজ না হলে সর্বশেষ তালাক প্রদান করতে পারেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে আপনি তালাক দিলে তাহা জায়েজ হবে। 
আপনি জান্নাতের ঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত হবেননা।

এখানে তালাক দেয়ার যথেষ্ট শরয়ী ওযর আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 105 views
...