আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
148 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (30 points)
edited by
১.স্ত্রী রাগ করে বলছে বোনের বাসায় যাবো যাতে আপনার কপাল আর না পোড়ে । স্বামী বলছে গেলে একেবারে বের হয়ে যাবা আর জীবনেও আসবা না। খালি বেশি বুঝো না। স্ত্রী বলছে আমার আসা না আসায় আপনার কিছু যায় আসে না। আর গেলে এক বারে বের হয়ে যাবা আর জীবনেও আসবা না বলার পর স্ত্রী বলছে সে টা আর বলা লাগবে না। কোন তালাকের নিয়তে বলে নাই আমি জানি এই টাইপের কথা তো শর্তযুক্ত তালাকের কথাও না তাই তো শায়েখ?  আমি এখন বোনের বাসায় বা বাইরে যে কোন কাজে গেলে কি তালাক বা কোন সম্যসা হবে?

২. একবার ঝগড়ার সময় স্বামী কে বলছিলাম ৬ মাস দেখেন আমি আপনার বাবার কাছে বা শুধু আমি  ভাল না হলে আরেকটা বিয়ে করবেন। কিন্তু ওয়াসওয়াসায় পরে তালাক দিয়ে দিবেন বলছি কি না এমন ওয়াসওয়াসা আসলে স্বামী বলছে না বিয়ে করার কথা বলছো আরেকটা আমি তালাকের কথা শুনি নাই । পরে আমিও শিওর হইছি যে আমি আরেকটা বিয়ে করার কথা বলছিলাম। এখন সেখানে শ্বশুর, শাশুড়ী, ননদ ছিলো যেখানে আমি এবং আমার স্বামী শিওর সেখানে শ্বশুর, শাশুড়ী, ননদকে কি জিজ্ঞেস করতে হবে কি বলছিলাম?

৩. স্বামী খারাপ ব্যবহার করে খালি বলে তার কপাল পুড়ছে তাই রাগ করে আমি বলছি আল্লাহ যেন আপনার কপাল পুড়ায় দেয় এটা কি অভিশাপ হবে? আমি কস্ট পাচ্ছি তার আচরনে।

৪. শায়েখ একজনের সাথে বিয়ের কথা হইছিল কিন্তু বিয়ে হয় নাই। সেই ছেলে মেয়েটাকে এভাবে বলছে গার্জিয়ানে গার্জিয়ানে কি হইছে সঠিক  তো আমি জানি না। যদি গার্জিয়ান গার্জিয়ান ঠিক হয় তাহলে আমি নিজেই খুলনায় যাবো ( মেয়েটা ওখানে থাকতোো)।  এই কথায় মেয়েটা কি বলছিল মনে নাই । আচ্ছা বা সম্মতি সূচক কিছু বললে ও তো ইজাব কবুল হতো না।  কারণ এটা তো ইজাব কবুলের শব্দ  না। তাই না  শায়েখ ?

৫. ৪ নং প্রশ্নের বিষয়ে ওয়াসওয়াসা আসলে মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করি সে এমনটাই বলে যা প্রশ্নে আছে আর মেয়েটা সম্মতি সূচক কিছু বলে নাই ফোনে টাকা শেষ হয়ে কেটে গেছিল। মেয়েটা যে সম্মতিসূচক কিছু বলে নাই এটা মেয়ে শিওর কিন্তু মেয়ের মা পাশে ছিল তাকে জিজ্ঞেস করে কনফার্ম হওয়ার দরকার আছে কি?

 ৬.যেখানে মেয়ে টার মনে পড়ছে সে সম্মতি সূচক কিছু বলে নাই।  মেয়েটারও মনে পড়ছে উপরোক্ত কথাই ছেলেটা বলছিল বার বার তো মায়ের জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন নেই যেখানে আমার ঘটনা মনে পড়ছে?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★★শরিয়তের পরিভাষায় অস্পষ্ট বাক্যে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ (যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়।)
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে তালাক হবে।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
"গেলে একেবারে বের হয়ে যাবা আর জীবনেও আসবা না"

এটি কেনায়া বাক্য নয়,এটি শর্তযুক্ত তালাকের বাক্যও নয়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি এখন বোনের বাসায় বা বাইরে যে কোন কাজে যান,সেক্ষেত্রে  তালাক বা কোন সমস্যা হবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রে শ্বশুর, শাশুড়ী, ননদকে কিছুই জিজ্ঞাসা করতে হবেনা।

(০৩)
হ্যাঁ, এটি অভিশাপ হবে।

(০৪)
হ্যাঁ, এতে ইজাব কবুল হতো না।  কারন এটা ইজাব কবুলের শব্দ নয়।

(০৫)
তাকে জিজ্ঞাসা করে কনফার্ম হওয়ার দরকার নেই।

(০৬)
কাউকেই কিছুই জিজ্ঞাসা করতে হবেনা। 
সে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে।
কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...