ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “হে আল্লাহ্ আপনিই প্রথম; আপনার আগে কিছু নেই। আপনিই শেষ; আপনার পরে কিছু নেই।”[সহিহ মুসলিম (২৭১৩)]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন: “আল্লাহ্ ছিলেন; তখন আল্লাহ্ ব্যতিত আর কিছু ছিল না।” অন্য বর্ণনায় আছে, “আল্লাহ্র পূর্বে কিছু ছিল না”[হাদিসদ্বয় ইমাম বুখারী সহিহ গ্রন্থে সংকলন করেছেন। ৩০২০ ও ৬৯৮২ নং হাদিস]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এ প্রশ্নের উৎস শয়তান থেকে।
এ প্রশ্নের সমাধান হচ্ছে:
ক. শয়তানের এ প্ররোচনার পিছনে না ছুটা।
খ. এ কথা বলা যে: ‘আমি আল্লাহ্র প্রতি ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনলাম’।
গ. শয়তান থেকে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
এ প্রসঙ্গে আরও বর্ণিত হয়েছে যে, বামদিকে তিনবার থুথু ফেলা ও সূরা ‘ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ পড়া।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ ، فَيَقُولَ : مَنْ خَلَقَ كَذَا وَكَذَا ؟ حَتَّى يَقُولَ لَهُ : مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ ، فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ وَلْيَنْتَهِ
শয়তান তোমাদের কারো নিকট আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং এ ধরণের ভাবনা থেকে বিরত হও। ( বুখারী ৩২৭ )
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মানুষ প্রশ্ন করতেই থাকবে, করতেই থাকবে। এক পর্যায়ে বলবে: এ সৃষ্টিগুলোকে তো আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন। তাহলে আল্লাহ্কে কে সৃষ্টি করেছে? যে ব্যক্তি এমন কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হবে সে যেন বলে, আমি আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনলাম।”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “তোমাদের কারো কাছে শয়তান এসে বলে, কে আসমান সৃষ্টি করেছে? কে জমিন সৃষ্টি করেছে? সে যেন বলে: আল্লাহ্। এরপর পূর্বের হাদিসের ন্যায় (আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনলাম) উল্লেখ করেছেন। সে বর্ণনাতে, رسله (রাসূলগণ) কথাটি অতিরিক্ত আছে। (অর্থাৎ আমানতু বিল্লাহি ওয়া রাসূলিহি। অর্থ- আমি আল্লাহ্র প্রতি ও রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনলাম)
(মুসলিম শরীফ)
(০২)
এই অবতীর্ন হওয়ার বিষয়ে আমাদের আকিদা হতে হবে যে এসময়ে আল্লাহর রহমত আমাদের নিকটতম হয়।
এর অর্থ হাকীকী অর্থে নেমে আসা নয়, বরং আল্লাহর বিশেষ রহমাত তখন নাজিল হয়। আল্লাহর বিশেষ তাওয়াজ্জুহ তখন নাজিল হয়।
(০৩)
এগুলো সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য,আল্লাহ তায়ালা এসব বৈশিষ্ট্য হতে পবিত্র।
(০৪)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এসব প্রশ্ন মাথায় আসা স্বাভাবিক,তবে তাহা মনে জায়গা না দিলে এটি ঈমানের জন্য ক্ষতিকর নয়।
জায়গা দিলেই তাহা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হবে।
,
এর থেকে কুফরি মূলক চিন্তা আসলে বা ইসলাম বিরোধী চিন্তা আসলে সেটি অবশ্যই ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلُوهُ: إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ، قَالَ: وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ.
সারমর্মঃ
একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)