আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (32 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।

কয়েকটি প্রশ্ন কয়েক দিন ধরে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে মেহেরবানি করে উওর দিলে ভালো হয়।
১।আল্লাহ কে সৃষ্টি করেছেন এই বিষয় আমাদের আকিদা কি থাকা উচিত??
২। রাতের শেষ এক - তৃতীয়াংশ আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ হয় - আল্লাহ জানিয়েছেন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন, আল্লাহ বলেছে আমারা মেনে নিয়েছি, এখন কিভাবে নেমে আসেন তা আল্লাহ ভালো জানেন।
 এই অবতীর্ন হওয়ার বিষয়ে আমাদের আকিদা টি কি এইটুকু হলে কি সহীহ হবে??
৩। আরেক টা প্রশ্ন প্রায় মাথায় আসে যে আল্লাহ পুরুষ নাকি মহিলা নাউজুবিল্লাহ, বা আল্লাহ স্ত্রী সন্তান নিয়ে - ( এই বিষয়ে এই আকিদা টা রাখলে ঠিক হবে যে এগুলো সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য, সৃষ্টি পুরুষ, মহিলা হতে পারে সৃষ্টির সন্তান,স্ত্রী থাকতে পারে, কিন্তুু স্রস্টা আর সৃষ্টি এক না, আল্লাহ এগুলো সৃষ্টি করেছেন, এগুলো তার সাথে যায় না
এই আকিদা টা কি ঠিক আছে / আমাদের এই বিষয় কি আকিদাহ টা থাকা উচিত
৪। এই সব প্রশ্ন মাথায় আসলে কি ঈমানের কোন ক্ষতি হবে???

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “হে আল্লাহ্ আপনিই প্রথম; আপনার আগে কিছু নেই। আপনিই শেষ; আপনার পরে কিছু নেই।”[সহিহ মুসলিম (২৭১৩)]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন: “আল্লাহ্ ছিলেন; তখন আল্লাহ্ ব্যতিত আর কিছু ছিল না।” অন্য বর্ণনায় আছে, “আল্লাহ্র পূর্বে কিছু ছিল না”[হাদিসদ্বয় ইমাম বুখারী সহিহ গ্রন্থে সংকলন করেছেন। ৩০২০ ও ৬৯৮২ নং হাদিস]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এ প্রশ্নের উৎস শয়তান থেকে।
এ প্রশ্নের সমাধান হচ্ছে:
ক. শয়তানের এ প্ররোচনার পিছনে না ছুটা।
খ. এ কথা বলা যে: ‘আমি আল্লাহ্র প্রতি ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনলাম’।
গ. শয়তান থেকে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
এ প্রসঙ্গে আরও বর্ণিত হয়েছে যে, বামদিকে তিনবার থুথু ফেলা ও সূরা ‘ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ পড়া।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

 يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ ، فَيَقُولَ : مَنْ خَلَقَ كَذَا وَكَذَا ؟ حَتَّى يَقُولَ لَهُ : مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ ، فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ وَلْيَنْتَهِ 

শয়তান তোমাদের কারো নিকট আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং এ ধরণের ভাবনা থেকে বিরত হও। ( বুখারী ৩২৭ )

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মানুষ প্রশ্ন করতেই থাকবে, করতেই থাকবে। এক পর্যায়ে বলবে: এ সৃষ্টিগুলোকে তো আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন। তাহলে আল্লাহ্কে কে সৃষ্টি করেছে? যে ব্যক্তি এমন কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হবে সে যেন বলে, আমি আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনলাম।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “তোমাদের কারো কাছে শয়তান এসে বলে, কে আসমান সৃষ্টি করেছে? কে জমিন সৃষ্টি করেছে? সে যেন বলে: আল্লাহ্। এরপর পূর্বের হাদিসের ন্যায় (আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনলাম) উল্লেখ করেছেন। সে বর্ণনাতে, رسله (রাসূলগণ) কথাটি অতিরিক্ত আছে। (অর্থাৎ আমানতু বিল্লাহি ওয়া রাসূলিহি। অর্থ- আমি আল্লাহ্র প্রতি ও রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনলাম)
(মুসলিম শরীফ)

(০২)
এই অবতীর্ন হওয়ার বিষয়ে আমাদের আকিদা হতে হবে যে এসময়ে আল্লাহর রহমত আমাদের নিকটতম হয়।

এর অর্থ হাকীকী অর্থে নেমে আসা নয়, বরং আল্লাহর বিশেষ রহমাত তখন নাজিল হয়। আল্লাহর বিশেষ তাওয়াজ্জুহ তখন নাজিল হয়। 

(০৩)
এগুলো সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য,আল্লাহ তায়ালা এসব বৈশিষ্ট্য হতে পবিত্র।

(০৪)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এসব প্রশ্ন মাথায় আসা স্বাভাবিক,তবে তাহা মনে জায়গা না দিলে এটি ঈমানের জন্য ক্ষতিকর নয়।
জায়গা দিলেই তাহা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হবে। 
,
এর থেকে কুফরি মূলক চিন্তা আসলে বা ইসলাম বিরোধী চিন্তা আসলে সেটি অবশ্যই ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হবে।

হাদিস শরিফে  এসেছে, 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلُوهُ: إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ، قَالَ: وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ.
সারমর্মঃ
একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...