আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমার এক বোন সে আগে নামায পড়তো না।  সে ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করে।তারপর কিছু দিন পর সে লক্ষ করলো তার মনে কেমন আজেবাজে চিন্তা আসে।  ৩-৪ মাস পর হঠাৎ  একদিন যোহর নামাযের সময় কান্নাকাটি শুরু করে। সে নামায পড়তে পারছে না কারণ তার মনে হচ্ছে  সে নামাযে আল্লাহকে মনে না করে শয়তানকে মনে করছে।সে বলে আমার মনের মধ্যে এমন বাজে চিন্তা, বিশ্রী (যৌন) চিন্তা আসে যা আগে কখনো আসে নাই। ইচ্ছা করে আনতো না। তার অস্থির লাগতো। মাঝে মধ্যে মনে হতো সে মুনাফিক হয়ে গেছে নাকি। তারপর থেকে শুরু হয় পবিত্রতা নিয়ে সন্দেহ কাপড়ে ময়লা লাগছে কিনা। অযু নিয়ে সন্দেহ, এমনও হইছি ১ ওয়াক্ত নামাজের জন্য সে ৩-৪ বার অযু করছে আর  এইদিকে তার নামাযের সময় শেষ হয়ে যাইতো।নামাযে রুকুতে ভুল করছে কিনা, ২সিজদাহ্ করল কিনা, কিরাত ঠিক ভাবে করল কিনা। নামাযে সূরা ফাতিহা পড়তে তার অনেক সময় লাগতো,কষ্ট হইতো। নামায শেষ করে অস্থিরতায় ভুগতো,শান্তি পেতো না।তারপর নামাজ শুরু করার ১.৫ বছর পর নামাজ ছেড়ে দেয়। সে মনে মনে ভাবছিল আবার ২-৩ দিন পর নামাজ শুরু করবে।কিন্তু সে এখনও নামাজ পড়ে না।সে নামাজ শুরু করে ৪-৫দিন কন্টিনিউ করে তারপর আর কন্টিনিউ করতে পারে না। সে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে চায়।
আকিদা নিয়ে বেশি ভয় পায়। তার মনে আল্লাহকে নিয়েএমন বাজে চিন্তা আসে যে সে ভাবে শিরক করে ফেলল কিনা।খুব ভয় পায়। কোন মানুষকে নিয়ে তার মনে অংশীদারিত্ব অথাৎ শিরকী চিন্তা আসে।
তার বয়স ২২ বছর।তার মা -বাবা তাকে বিয়ে দিয়ে দিতে চায়। কিন্তু সে রাজি না। তার মানসিক কোন প্রস্তুতি নেই। তার মা-বাবা ভাবে বিয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। সে অনেক অসুস্থ ও দূবর্ল।

১.সে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না। উস্তাদ কিছু নাসিহা করবেন আশা করি বোনটা উপকৃত হবে?

২.আকিদা বিষয় নিয়ে খুব চিন্তিত।বিশেষ করে শিরক নিয়ে। সে বলে শিরক করলে তো সব শেষ। তার কী করা উচিত?
৩.তার মনে অংশীদারিত্ব ও শিরকীমূলক চিন্তা আসে। এতে কী সে শিরক করে ফেলছে?

৪.তার মা-বাবা তাকে বিয়ে দিয়ে দিতে চায়। রাজি না বলে তার মা বাবা কষ্ট পায়। এতে কী তার গুনাহ হবে?

৫.যদি সে বিয়ে না করে তার কী গুনাহ হবে? তার মানসিক কোন প্রস্তুতি নেই। তার বাবা -মার কথা ভেবে কী বিয়েতে রাজি হওয়া উচিত?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের জন্য পরামর্শঃ-
আপনি মনে বিশ্বাস রাখবেন যে নামাজে এসব আজে বাজে চিন্তা আসলেও নামাজের সমস্যা হবেনা।
সুতরাং আপনার নামাজ শুদ্ধ হচ্ছেই।

ইনশাআল্লাহ এটি বিশ্বাস রাখলে আপনি নামাজে নিয়মিত হতে পারবেন।

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)

সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন।
পাশের কোনো বাসায় তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত মহিলারা তা'লিম করলে সেখানে যাবেন।

এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন।

আপনাকে বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

হক্কানী শায়েখদের নামাজ না পড়ার শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত ওয়াজ শুনুন,ও এ সংক্রান্ত গ্রন্থাবলী পড়ুন।

নামাজে মনোযোগী হওয়ার পদ্ধতি জানুনঃ- 

(০২)
তার এসব চিন্তা বাদ দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপনের পরামর্শ থাকবে। 

(০৩)
 মনে অংশীদারিত্ব ও শিরকীমূলক চিন্তা আসলেই কেহ শিরক করে ফেলেনা।
তাই এতে তার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৪)
হ্যাঁ  এতে তার গুনাহ হবে।
সে বিবাহের জন্য রাজী হবে।
এটি তার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য কল্যানকর।
এটিই তার জন্য স্বাভাবিক জীবন যাপনের মাধ্যম হবে।

(০৫)
যদি সে বিয়ে না করে,তাহলে বাবা মার বৈধ আদেশ অমান্য করার দরুন তার গুনাহ হবে।
,
তার মানসিক কোন প্রস্তুতি না থাকলেও তার বাবা -মার কথা ভেবে বিয়েতে রাজি হওয়া উচিত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...