আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (53 points)
আমার এক বান্ধবী জানতে চেয়েছেন তার পক্ষ থেকে প্রশ্ন

আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করে সে হেদায়েত প্রাপ্ত হয়। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি হেদায়েত প্রাপ্ত হয়ে দ্বীনে ফিরে আসছি। সব কিছু বিচার করতে শিখেছি দ্বীনি ইলম দ্বারা। এমন শিক্ষা যা আমার আখিরাতে কাজে আসবে না তা দিয়ে আমার কি ফয়দা হবে? বরং আমার কোরআন শিক্ষা নিতে হবে দ্বীনি ইলম অর্জন করতে হবে। এই চিন্তা আমার মাথায় আসে।
আমি স্বপ্ন দেখি আমি একজন হুজুরের কাছে কোরআন শিক্ষা নিতে গেছি, তিনি আমাকে বলছেন তুমি মুখস্থ কর। আমি বললাম আমি তো পারি না। তিনি বলল, তুমি পারবে।
এর পর আমার মনে হল আমার রব আমাকে তার দিকে ডাকছে।আমি হাফেজ হব।অনেক কষ্ট করে অনেক জনের সাথে যোগাযোগ করে আমি ২টা হেফজখানায় গেলাম। এক জায়গা তারা আমার কথা শুনে আমাকে রাখরে রাজি হলো। আমার মা আমার ইচ্ছার সম্মান করল। কিন্তু আমার বাবা কিছু তে ই মেনে নিল না। আমার মা কে বাড়ি থেকে বের করে দেবে, নিজে মাথায় বাড়ি নেবে, আমি গেলে আমার বাবা নাকি মারা যাবে এমন সব কথা বলে। তারা স্বপ্ন দেখেছে আমি লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করে তাদের অভাব দূর করব। কিন্তু আমি চাকুরি করতে চাই না। তাই আমি পড়া ছেড়ে দিতে চেয়েছি।
আমার এই সিদ্ধান্ত কেউ মেনে নিতে পারে নি। আমার কি হলো এটা জানতে তারা আমাকে একজন হুজুরের কাছে নিয়ে গেল।সে তাবিজ দেয়। ঐ হুজুর আমাকে হাত মুজা খুলতে বলল। আমি খুললাম।ডান হাত। তারপর সে আমার হাত ভালো করে মালিশ করা শুরু করল এবং একটা কালো সুতা দিয়ে মাপতে শুরু করল।তারপর আমাকে বলল কেন পড়া ছাড়বা। পড়ো। হাফেজ হয়ে কি কররা? হেফজখানায় গেলে কি তুমি ভালো হয়ে যাবা? ওখানে যারা থাকে তারা সবাই কি ভালো? সব খবর কাছে ওদের ব্যপারে।
তারপর সে আমাকে একটা তাবিজ দিল। হাতে বা গলায় ঝুলাতে বলল। ৫০০টাকা দিতে বলল আমরা ২০০টাকা দিলাম।
বাড়িতে সবাই এমন করল যে আমি আমার সিদ্ধান্ত আর আগাতে পারলাম না। তবে আমার মন সব সময় ই চায় আমি হাফেজ হব। কুরআনের আয়াত শুনলে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। কুরআন তিল আয়াত শুনে আর এর অর্থ বুঝতে পেরে আমার মনে দ্বীন আসছে। আমার মনে হয় ঐ কুরআনের মধ্যে ই আমার প্রান ঐ কুরআনের জন্য আমার কন্ঠ, ব্রেন সব কিছু। কুরআনের অর্থ যখন পড়ি, আমার চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পরে।কেন এত টান অনুভব হয় আমার? সব ছেড়ে হেফাজতে যেতে চাইলাম। কত দোয়া করলাম আল্লাহর কাছে এমন করে কোন দিন কিছু চাই নি। তবু তার কি ইচ্ছা আমি জানি না। আমার শুধু একটা ই ইচ্ছা আমি কোরআন শিখব,বুঝব, সুন্দর করে তিলাওয়াত করব।
যার কোনোটা ই আমি পারি না।

১.বোনটার কি করা উচিত সে কি পড়াশোনা করবে নাকি বাবার নিষেধাজ্ঞার পরও হেফজখানায় ভর্তি হবে??

২.ঐ হুজুরের তাবিজ কি নিবে এবং ঐ হুজুরের কাছে কি তার আর যাওয়া উচিত হবে?

এবার আমার ব্যক্তিগত প্রশ্ন করছি-

৩.শায়খ আমার স্বামী কথাবলতেছিলো (ফোনে না সরাসরি এটা নিয়ে সন্দেহ) কিন্তু হঠাৎ শুনলাম তালাক দিলাম এটা বলছে তবে কবে বলচে তা নিয়ে সন্দেহ আর এখন এটা মন হচ্ছে যে আমি কি ভুল শুনলাম নাকি আবার যখন ও যেদিন ঐ কথাটা (তালাক দিলাম) শুনেছিলাম তখনই ভুল শুনলাম কিনা এটা মনে এসেছিলো কিনা তা নিয়েও সন্দেহ।ঐদিন কোনো ঝগড়া চলছিলো কিনা বা নরমাল কথাবার্তা হয়েছিলো কিনা তা নিয়েও সন্দেহ।আবার এটাও সন্দেহ হচ্ছে যে এই ঘটনাটা কি আমার নামাজ ওজু অন্যান্য বিষয় নিয়ে সন্দেহজনিত সমস্যাটা শুরু হওয়ার আগে নাকি পরে?এই ঘটনার সাথে সাথে বা কয়েকদিন পরেও কোনো মুফতিকে জিজ্ঞেস করিনি এমনকি তাকেও ভায়ে জিজ্ঞেস করিনি যে সে বাস্তবে এটা বলেছে কিনা কারন ভয় হচ্ছিল সে রেগে যেতে পারে এসব শুনে।

এখন কি করবো আমি কি করনীয়?? তালাকের বিষয় মাথা থেকে বাদ দিতে পারিনা।

(https://ifatwa.info/64790/ এখানে ১ নং প্রশ্নের ঘটনার সাথে উপরের ঘটনা এক না উপরের ঘটনাটা অন্য একদিন ঘটেছে)

২.তালাক নিয়ে আগে অনেক ঘটনা হয়েছে।শায়খরা বলেচে আপনাদের তালাক হয়নি কিন্তু এরপরও আমি এস্তেখারা করতাম এটা বুঝার জন্য যে আমাদের সম্পর্ক ঠিক আছে কিনা।সপ্নে দেখতাম কেউ তার বউকে তালাক দিচ্ছে।আমার সামী আমার বোনকে বিয়ে করতে যাচ্ছে।এসব দেখে মনে হতো আমাদের সম্পর্ক ঠিক আছে কি??

এসব সপ্ন আসলে কিসের ইংগিত ছিলো তখন??

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ- 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


(০১)
উক্ত বোনের জন্য পরামর্শ থাকবে, শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে বাবার পরামর্শ মেনে চলবে।
পড়াশোনা চালিয়ে যাবে।
আপাতত হেফজখানায় ভর্তি হবেনা।

তবে তিনি জেনারেল লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজে নিজেই মেহনত করে হাফেজা হতে পারবে,ইনশাআল্লাহ। 
যার অনেক নজীর দুনিয়াতে আছে।

কুরআনের হাফেজদের জন্য হাদীসে বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করো। কেননা তা কিয়ামতের দিন তার ধারকের জন্য সুপারিশকারী হবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩০২)

কিয়ামতের দিন কোরআন মুখস্থকারীদের প্রতিটি আয়াতের বিপরীতে মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কোরআন পাঠ করতে করতে ওপরে উঠতে থাকো। তুমি দুনিয়াতে যেভাবে ধীরে-সুস্থে পাঠ করতে, সেভাবে পাঠ করো। কেননা তোমার তিলাওয়াতের শেষ আয়াতেই (জান্নাতে) তোমার বাসস্থান হবে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৪৬৪)

প্রশ্নে উল্লেখিত দ্বীনি বোনের জন্য পরামর্শ,
আপনি ঘরে বসে কুরআন শরীফ মুখস্থ করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনার জন্য কিছু পরামর্শঃ-
★আপনার মেধা ও স্মরণশক্তি অনুপাতে প্রতিদিন একটি নির্ধারিত পরিমাণ মুখস্থ করুন। এক পৃষ্ঠা হোক বা আধা পৃষ্ঠা হোক,সর্বনিম্ন পাঁচ লাইন মুখস্থ করার চেষ্টা করুন।

★প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে দুইবার হিফজের জন্য সময় দিন। সকালে নির্ধারিত পরিমাণ মুখস্থ করুন এবং সারা দিন মনে মনে আবৃত্তি করুন। রাতে দেখে তা আরো ভালোভাবে আত্মস্থ করুন। সকাল ও সন্ধ্যায় কমপক্ষে ৪০ মিনিট করে সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন।

★পরের দিন একজন কোরআনের হাফেজ বা যাঁর কোরআন তিলাওয়াত বিশুদ্ধ তাঁকে মুখস্থ করা অংশটুকু শোনান। কোনো স্থানে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নিন এবং পরের দিন তা আবার শোনান।

★প্রতিদিন নতুন অংশ মুখস্থ করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পেছনের অংশ মুখস্থ রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুযোগমতো পেছনের অংশ বারবার তিলাওয়াত করতে হবে। এবং তাহা সেই উস্তাদকে/অন্য যেকোনো শুদ্ধ পাঠকারীকে শোনাতে হবে,সম্ভবপর না হলে নিজেই নিজেই কুরআন বন্ধ রেখে ভালোভাবে পিছনের পড়া তিলাওয়াত করবেন।

★রাতে-দিনে বিশ্রামের সময় মনে মনে তিলাওয়াত করুন। বিশেষত ঘুমানোর আগে প্রতিদিনের নতুন মুখস্থ করা অংশটি আগের দিনের অংশের সঙ্গে মিলিয়ে তিলাওয়াত করুন।

★একাধিক পারা মুখস্থ হওয়ার পর সম্ভব হলে ধারাবাহিকভাবে পেছনের এক পারা করে একবার দেখে তিলাওয়াত করুন এবং তারপর একবার না দেখে তিলাওয়াত করুন।
এবং তাহা সম্ভব হলে কোনো উস্তাদকে বা অন্য যেকোনো শুদ্ধ পাঠকারীকে শোনানোর চেষ্টা করুন।

সম্ভবপর না হলে নিজে নিজেই কুরআন বন্ধ রেখে ভালোভাবে মুখস্থ তিলাওয়াত করুন।

মুখস্থ অংশ শোনানোর সময় যেসব জায়গায় ভুল ধরা পড়ে—তা (রুল দিয়ে) চিহ্নিত করে রাখা (পরবর্তীতে যেনো মিশে ফেলা যায়) এবং পরবর্তী সময় এসব শব্দ ও তার উচ্চারণের সময় সতর্কতা অবলম্বন করা।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)

(০২)
তাবিজ নেয়ার প্রয়োজন নেই,সেই হুজুরের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা। 

(০৪)
আপনি যেসব স্বপ্ন দেখেছেন,এগুলো মূলত কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন।
যাহা মনে ভাবতেছেন,সেটিই দেখেছেন।

আসলে তালাক হয়েছে কিনা,এটি মুফতী সাহেবগন জানাবেন।
এটি ইস্তেখারা করার বিষয় নয়।

স্বপ্ন দ্বারা শরীয়তের কোনো মাসয়ালা প্রমানিত হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...