আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
220 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম।
কোন মহিলার  যদি তার স্বামীর সাথে  এক তালাক  বায়েন পতিত  হয়ে যায়,তাহলে তো এখন সে আর তার স্বামী  না,তাই না?
অন্য পুরুষদের মতই সে?
এক তালাক  বায়েন  পতিত  হওয়ার পর সে বিভিন্ন  সময় আরোও যতবারই  তালাক দেক,তাতে তো নতুন করে কোন তালাক যোগ হবে না,তাই না???

ঐ মহিলা  যদি পুনরায়  কাউকে বিবাহ  করতে চায়,তাহলে কি পূর্বের স্বামী  অধিক হকদার?
উত্তম জীবনসঙ্গী  পাওয়ার  জন্য,যে তালাকের  কথা ভুলেও মুখে আনবে না,তার জন্য কিভাবে আল্লাহর  কাছে চাইতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (686,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো যদি কেহ তালাকে বায়েন দেওয়ার পর ইদ্দতের মধ্যেই স্পষ্ট বাক্যে আবার তালাক দেয়,তাহলে পুনরায় তালাক পতিত হবে।

কারন হলো যেই স্ত্রীর সাথে তার স্বামী সহবাস বা খুলওয়াতে ছহীহাহ করে তাকে তালাকে বায়েন দেয়,তখন স্বামীর হকের কারনে ইদ্দত পালন জরুরি হয়।
এবং যতক্ষন পর্যন্ত ইদ্দত পূর্ণ না হবে,ততক্ষন পর্যন্ত ঐ মহিলার সাথে ঐ স্বামীর বিবাহ পুরোপুরি শেষ হবেনা।
এই কারনেই ইদ্দত চালাকালিন সময়ে সে অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারেনা।
তবে অস্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে তালাক হবেনা,কেননা সেটা শিদ্দত তথা কঠিন তালাক। 

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ

الطَّلَاقُ الصَّرِيحُ يَلْحَقُ الطَّلَاقَ الصَّرِيحَ بِأَنْ قَالَ: أَنْتِ طَالِقٌ وَقَعَتْ طَلْقَةٌ، ثُمَّ قَالَ: أَنْتِ طَالِقٌ تَقَعُ أُخْرَى، وَيَلْحَقُ الْبَائِنُ أَيْضًا بِأَنْ قَالَ لَهَا: أَنْتِ بَائِنٌ أَوْ خَالَعَهَا عَلَى مَالٍ، ثُمَّ قَالَ لَهَا: أَنْتِ طَالِقٌ وَقَعَتْ عِنْدَنَا، وَالطَّلَاقُ الْبَائِنُ يَلْحَقُ الطَّلَاقَ الصَّرِيحَ بِأَنْ قَالَ لَهَا: أَنْتِ طَالِقٌ ثُمَّ قَالَ لَهَا: أَنْتِ بَائِنٌ تَقَعُ طَلْقَةٌ أُخْرَى، وَلَايَلْحَقُ الْبَائِنُ الْبَائِنَ". ( ١ / ٣٧٧) 
সারমর্মঃ
স্পষ্ট বাক্যে তালাক  স্পষ্ট বাক্যে তালাকের সাথে যুক্ত হয়।
যেমন কেহ বললো যে তুমি তালাক,অতঃপর আবার বললো তুমি তালাক।
তাহলে দুই তালাক পতিত হবে।
 স্পষ্ট বাক্যে তালাক  অস্পষ্ট বাক্যে তালাকের সাথে যুক্ত হয়,,,,,,,।

,
★সুতরাং বিবাহের পর স্ত্রীর সাথে সহবাস বা খুলওয়াতে ছহীহাহ করার পর তাকে এক তালাক  বায়েন দেওয়ার পর উদ্দত চালাকালিন সময়ে স্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে আবার পতিত হবে।
ইদ্দতের মধ্যে আবার তালাক দিলে আবার পতিত হবে।
,
হ্যাঁ যদি উক্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস বা খুলওয়াতে ছহীহাহ হওয়ার আগেই এক তালাকে বায়েন দেয়,তাহলে আর তালাক পতিত হবেনা। 
,

তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

দাম্পত্য জীবন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অনেক বড় ও বিশেষ একটি নেয়ামত। স্বামী-স্ত্রী সকলের কর্তব্য, এই নেয়ামতের যথাযথ মূল্যায়ন করা এবং একে অপরের সকল অধিকার আদায় করা। স্ত্রীর জন্য উচিত নয়, কথায় কথায় স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া। আবার স্বামীর জন্যও জায়েয নয় আল্লাহ তাআলার দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করা।

বিয়ে, তালাক ও দাম্পত্য জীবনের সকল বিধান ও মাসআলা শিক্ষা করা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্য জরুরি। বিশেষ করে স্বামীর কর্তব্য হল, তালাকের মাসআলা ও এর পরিণতি সম্পর্কে অবগত না হয়ে মুখে কখনো তালাক শব্দ উচ্চারণ না করা। আর যদি কোনো কারণে তালাক দেয় এবং এমনভাবে দেয় যে, এখন আর তাদের একসাথে থাকা শরীয়তে বৈধ নয় তাহলে তাদের আল্লাহকে ভয় করা উচিত। বিভিন্ন টাল-বাহানা, অজুহাতের আশ্রয় নিয়ে কিংবা ভুল কথার উপর ভিত্তি করে অথবা মূল ঘটনা গোপন রেখে একসাথে বাস না করা উচিত। বিয়ে শুধু একটি সময়ের বিষয় নয়, সারা জীবনের বিষয়।

ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম এক তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে।
,
আরো জানুনঃ 

,
সুতরাং আল্লাহর কাছে এই ভাবেই দোয়া করতে হবে,যেনো এই স্বামীর সাথেই বিবাহের সম্পর্ক মহান আল্লাহ তায়ালা মৃত্যু পর্যন্ত টিকে রাখেন।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...