আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম,

১)গতকাল সকালে আমি আমার লুঙ্গি ধুয়ে দিয়েছিলাম যাতে আগে থেকে বীর্য লেগে ছিল। লুঙ্গি ধুয়ার পর এতে কিছু বীর্য থেকে যায় যা আমি জানতাম নাহ পরে  আমি তা রোধে শুকাতে দেই। ভিজা লুঙ্গি ধরার কারনে আমার হাতে নাপাকি লেগে যায় এবং আমি এই হাত দিয় শরীরে ভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করে ফেলি। একই দিনে রাতে আমি ফরজ গোসল করি। এখন আমার প্রশ্ন হল হাতের নাপাকি শরীরে, মাথায়, মুখে লেগেছে এতে কি আমার ফরজ গোসল আদায় হয়েছে?

২) আমি একটি প্রাইভেটে কম্পানিতে চাকুরি করি। যেখানে অফিস টাইম হল ৯.৩০-৬.৩০ পর্যন্ত। কিন্তু অফিসে মোটামুটি সবাই ১১টা, ১১:৩০টার পর আসে। আমিও ১১টার পর আসি এতে কি সমস্যা আছে?

৩) আমি একদিন সকালে পেন্টের চেইন খুলে লিঙ্গ চেক করতাছিলাম যে মযী বের হয়েছে কিনা এমন সময় বুঝতে পারি আমার মা রুমে আসতেছে বা পর্দার ওপারে আছে। আমার রুমে দরজায় পর্দা দেওয়া যা মোটামুটি ভারী কিছু দেখা যায় না কিন্তু সাইড দিয়ে ফাকা ছিল এখন আমি নিশ্চিত নাহ আমার মা লিঙ্গ দেখেছে কিনা আর দেখে থাকলে কামভাব নিয়ে দেখেছে কিনা। এতে কি হুরমত হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by
 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,
১.আপনি যদি ফরজ গোসল করে ফেলেন তাহলে আপনি পবিত্র। শরীরের যেকোন অংগে নাপাকী লাগুক না কেন, সুন্নাত তরীকায় ফরজ গোসল করে ফেললে আপনি পবিত্র হয়ে যাবেন।
 ২. জ্বী এটি কর্তৃপক্ষকে ধোকা দেয়ার নামান্তর। কেননা, অফিসিয়াল সময়ে অফিসে উপস্থিত হওয়া প্রত্যেকের উপর আবশ্যক। যারা বিলম্ব করে তারা গুনাহগার হবে। বিধায় আপনি যথা সময়ে অফিসে উপস্থিত হতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
৩. 
https://ifatwa.info/51552/?show=51552#q51552 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
হাদীস শরীফে এসেছে 
أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।     
 
হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।
শর্তগুলো হল,
১–
সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     
২– স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।
পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 
৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। বিস্তারিত জানুনঃ 
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই ,
আপনার প্রশ্ন পুরাটাই পড়েছি। এখানে আপনার মা যে আপনারর লিঙ্গ দেখেছে,শুধু এটির সাথে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হওয়া না হওয়ার বিষয়টি হবে।

এখন আপনার মা যদি উত্তেজনা সহকারে কামভাব নিয়ে আপনার লিঙ্গ৷ দেখে,এবং উপরের শর্ত গুলি পাওয়া যায়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হয়ে আপনার বাবাআর বিবাহ আজীবনের জন্য বিচ্ছেদ হয়ে যাবে।
হুরমতে মুসাহারাহ হওয়ার জন্য অনেক শর্ত রয়েছে।যা আপনি উক্ত লিংকে গিয়ে পড়ে আসতে পারবেন।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উপরোক্ত হুরমতের মাস'আলার সমস্ত শর্ত সম্পর্কে যেভাবেই হোক পূর্ণ ভাবে আপনার মাকে অবগত করতে হবে,মাসয়ালাটি দেখাতে হবে।।তার জন্য এভাবে আপনার লিঙ্গ দেখা উচিত হয়নি। 
তার মা হুরমতের মাস'আলা পড়ার পর যদি কিছু না বলে, তাহলে বাবা মার বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবে না। সেক্ষেত্রে আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...