بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
দুআ স্বতন্ত্র একটি ইবাদত।
হাদীস শরীফে দুআকে ইবাদতের মূল বলা হয়েছে। দুআর জন্য কুরআন-হাদীসে সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা
ও সীমাবদ্ধতা নেই। বরং আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ব্যাপকভাবেই দুআ করতে নির্দেশ করেছেন।
যেমন কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে,
ادْعُوْنِیْۤ اَسْتَجِبْ لَكُمْ ؕ
(তরজমা)
তোমরা আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো। -সূরা গাফির : ৬০
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, اُجِیْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ (তরজমা) যখন কোনো আহ্বানকারী
আমাকে ডাকে তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়ে থাকি। -সূরা বাকারা (০২) : ১৮৬
বিখ্যাত তাবেয়ী আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. বলেন, যখন
ادْعُوْنِیْۤ اَسْتَجِبْ لَكُمْ ؕ
আয়াতটি নাযিল হল তখন নবী
কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লোকেরা জিজ্ঞাসা করল যে, আমরা কোন সময়টাতে দুআ করব তা যদি জানতে
পারতাম তখন সূরা বাকারার এই আয়াতটি
وَ اِذَا سَاَلَكَ عِبَادِیْ عَنِّیْ فَاِنِّیْ
قَرِیْبٌ ؕ اُجِیْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ.
নাযিল হয়। যাতে সুস্পষ্ট বলা আছে যে, বান্দা যখনই আল্লাহ তাআলাকে ডাকে, দুআ করে তখনই তিনি তার ডাকে সাড়া দিয়ে
থাকেন এবং দুআ কবুল করে থাকেন।
তাই কোনো ব্যক্তি দিনে-রাতে যে কোনো সময় যেকোনো নামাযের
আগে-পরে দুআ-মুনাজাত করতে পারে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَ اصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ
رَبَّهُمْ بِالْغَدٰوةِ وَ الْعَشِیِّ یُرِیْدُوْنَ وَجْهَهٗ.
(তরজমা)
আর আপনি নিজেকে তাদের সঙ্গে সংলিপ্ত রাখুন যারা তাদের রবকে সকাল ও সন্ধায় তার সন্তুষ্টির
উদ্দেশ্যে ডাকে। -সূরা কাহফ (১৮) : ২৮
উক্ত আয়াতের তাফসীরে আল্লামা ইবনে কাসীর রাহ. বলেন, অর্থাৎ যারা সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহ তাআলার
যিকর-আযকার, তাসবীহ-তাহমীদ
ও তাহলীল করে এবং তার বড়ত্ব বর্ণনা করে ও তার কাছে দুআ চায়। -তাফসীরে ইবনে কাসীর
৩/১৩১
**দুআর একটি আদব হল, আল্লাহর হামদ-ছানা (প্রশংসা) ও দরূদ শরীফ
দ্বারা দুআ শুরু করা এবং শেষ করা। তাছাড়া হাদীস থেকে এ-ও বুঝা যায় যে,দুআ সমাপ্ত হবে ‘আমীন’-এর মাধ্যমে । কিন্তু
অনেক মানুষকে দেখা যায়, তারা দুআ
শেষ করেন কালিমার মাধ্যমে। এভাবে বলে থাকেন-
হে আল্লাহ! মৃত্যুর সময় যবানে জারি করে দিও- ‘লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। অথবা
বলেন,
اجعل آخر كلامنا عند الموت "لا إله إلا
الله، محمد رسول الله".
অর্থাৎ কালিমার মাধ্যমে তারা দুআ শেষ করেন। এটি দুআর আদব
নয়; বরং এর কারণে দুআ সমাপ্ত করার
মাসনূন আমল ছুটে যায়।
হাঁ ,দুআর মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থনা যে, হে আল্লাহ আমার শেষ কথা হোক তোমার কালিমা।
হাদীস শরীফে এসেছে-
مَنْ كَانَ آخِر كَلَامِهِ لَا إِلَهَ إِلَّا
اللهُ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ.
যার শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে জান্নাতে যাবে।
-সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস ৩১১৬
কিন্তু কালিমার মাধ্যমে দুআ শেষ করা একটি রসম মাত্র।
সম্মানিত
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন !
কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’
মুসলমানদের ঈমানের ভিত্তি। আল্লাহর জিকির-আজকারের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির। মুনাজাত
শেষ করতে কিংবা অন্য কোনো সময় এ কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’
পাঠ করা অবৈধ নয়।
তবে এটাকে সুন্নাত মনে করে কিংবা রীতি হিসেবে স্থায়ী করে
নেয়া সুন্নাত পরিপন্থী। সুন্নাতের পরিপন্থী কোনো কিছুকে ইবাদত হিসেবে গ্রহণ উচিত নয়।