ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর উপর ইদ্দত পালন আবশ্যক হয়। ইদ্দতকালীন সময়ে অন্যত্রে বিবাহ নিষেধ।
স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত শেষ হবার আগ পর্যন্ত কোন প্রকার সাজগুজ বা অলংকার পরিধান করা জায়েজ নেই।তাই চুড়ি, চেইন ইত্যাদি কোন কিছুই পড়া যাবে না।ইদ্দত শেষ হবার পর জায়েজ সব ধরণের অংলংকার পরিধান করা ও সাজগুজ করা জায়েজ আছে।স্বামী মৃত্যুবরণকারী মহিলার ইদ্দতের সময়সীমা হল ৪মাস ১০দিন।এ চার মাস দশদিন পর্যন্ত সাজগুজ এবং অলংকার পরিধান নিষেধ। এ সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে আর এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে না। তখন পরিধান করতে পারবে। {তাবয়ীনুল হাকায়েক-৩/২৬৬}
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ [٢:٢٣٤]
আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে। (সূরা বাকারা-২৩৪}
অপর আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَطَلِّقُوۡهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَ اَحۡصُوا الۡعِدَّۃَ ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ رَبَّکُمۡ ۚ لَا تُخۡرِجُوۡهُنَّ مِنۡۢ بُیُوۡتِهِنَّ وَ لَا یَخۡرُجۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ یَّاۡتِیۡنَ بِفَاحِشَۃٍ مُّبَیِّنَۃٍ ؕ وَ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهٗ ؕ لَا تَدۡرِیۡ لَعَلَّ اللّٰهَ یُحۡدِثُ بَعۡدَ ذٰلِکَ اَمۡرًا ﴿۱﴾
হে নবী, (বল), তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে, তখন তাদের ইদ্দত অনুসারে তাদের তালাক দাও এবং ‘ইদ্দত হিসাব করে রাখবে এবং তোমাদের রব আল্লাহকে ভয় করবে। তোমরা তাদেরকে তোমাদের বাড়ী-ঘর থেকে বের করে দিয়ো না এবং তারাও বের হবে না। যদি না তারা কোন স্পষ্ট অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমারেখাসমূহ অতিক্রম করে সে অবশ্যই তার নিজের ওপর যুলম করে। তুমি জান না, হয়তো এর পর আল্লাহ, (ফিরে আসার) কোন পথ তৈরী করে দিবেন।(সুরা আত ত্বলাকে:১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تُحِدُّ الْمَرْأَةُ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا عَلَى زَوْجٍ، فَإِنَّهَا تُحِدُّ عَلَيْهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا، وَلَا تَلْبَسُ ثَوْبًا مَصْبُوغًا، إِلَّا ثَوْبَ عَصْبٍ، وَلَا تَكْتَحِلُ، وَلَا تَمَسُّ طِيبًا إِلَّا أَدْنَى طُهْرَتِهَا إِذَا طَهُرَتْ مِنْ مَحِيضِهَا بِنُبْذَةٍ مِنْ قُسْطٍ، أَوْ أَظْفَارٍ
উম্মে আতিয়্যা রাঃ হতে বর্ণিত।রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কোন স্ত্রীলোক স্বামী ব্যতিত অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক প্রকাশ করবে না। অবশ্য স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশদিন শোক পালন করবে। আর এ সময় কোন রঙ্গিন কাপড় পরিধান করবে না। সাদা কাপড় ছাড়া। আর সুরমা ব্যবহার করবে না, এবং কোনরূপ সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করবে না। অবশ্য হায়েজ হতে পবিত্র হওয়ার পর সামান্য সুগন্ধি বস্তু ব্যবহার করতে পারে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৩০২}
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «الْمُتَوَفَّى عَنْهَا زَوْجُهَا لَا تَلْبَسُ الْمُعَصْفَرَ مِنَ الثِّيَابِ، وَلَا الْمُمَشَّقَةَ، وَلَا الْحُلِيَّ، وَلَا تَخْتَضِبُ، وَلَا تَكْتَحِلُ
রাসুল সাঃ এর স্ত্রী হযরত উম্মে সালামা রাঃ হতে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন যে স্ত্রীলোকের স্বামী মৃত্যুবরণ করে সে যেন ইদ্দতকালীন সময়ে রঙ্গিন এবং কারুকার্যমন্ডিত কাপড় ও অলংকার পরিধান না করে। আর সে যেন খিজাব ও সুরমা ব্যবহার না করে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৩০৪}
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
স্ত্রী মারা গেলো স্বামীর উপর কোনো ইদ্দত নেই।
অন্যত্র বিবাহ করতে কোনো বিধিনিষেধ নেই।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবাকে বিবাহ করানোতে কোনো সমস্যা নেই।
এক্ষেত্রে আপনার বাবার বয়স থেকে কিছুটা কম বছর বয়সী মহিলাকে বাবার সাথে বিবাহ দেওয়াটা ভালো হবে।
কোনো বিধবা নারীর সাথে বিবাহ দিয়ে দেয়া যায়।
দ্বীনদার কোনো বিধবা নারীর সন্ধান পেলে ভালো হবে।
দ্বীনদার মহিলা খুঁজে পাওয়ার জন্য নিজ পরিবারের/নিজ এলাকার মুরব্বিদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।
অনলাইনে নির্ভরযোগ্য কোনো সাইটে আপনার বাবার বায়োডাটা দিতে পারেন।