আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
256 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আমরা তিন বোন , সবাই শিক্ষিত । ইসলাম এ আমরা নতুন । ইসলামে পর্দায় অবস্থান করে চাকরি করা যাবে কিন্তু বর্তমানে এই পর্দায় বসে আসলে চাকরি করা সম্ভব নয় ।এখন আমার বুড়ো মা বাবার ভরণ পোষণ কে করবে? আমার হাজব্যান্ড কি দিতে বাধ্য? করণীয় কি ।
আরেক টা জিনিস ইদানিং ফেইসবুকে বা  দাওয়া  বা ওয়াজ মাহফিলে মহিলাদের চাকরি করলে সংসারের বাচ্চাদের হক ( যেমন অনেক সময় বাচ্চা মাকে পায় না ,বুয়ার কাছে থাকে) নষ্ট হয় সেসব নিয়ে অনেক লেখালেখি হয় কিন্তু ওই তুলনায় পুরুষদের উচিত মহিলাদের ভরণ পোষণ, তাদের স্ত্রীর মা বাবা দেখাশোনা করা এইসব নিয়ে কম লেখা হচ্ছে না? Iom থেকে কি এই বিষয়ে কোন লেকচার দেয়া হবে বা ক্লাস ? তাহলে নবী দ্বীন এ আসা আমাদের উপকার হত।

1 Answer

0 votes
by (679,640 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


https://ifatwa.info/6603/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,  
পরিবারের জন্য খরচ করা,মা বাবার ভরনপোণের জন্য খরচ করা উত্তম কাজ।
মা বাবা নিজেদের ভরনপোষণের ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে সন্তানদের জন্য তাদের ভরনপোষণের খরচ দেওয়া শুধু শরীয়তেই নয়  এটা মানবতার দিক লক্ষ্য করেও জরুরি।

হাদিস শরিফে এসেছে, 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)

মা-বাবা  ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।
★এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে, তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে, তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে। তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম, আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন, তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়।

★দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)

মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব উপরোক্ত দুই শর্তে সব ছেলে-মেয়ের ওপর ওয়াজিব। এ দায়িত্ব সব সাবালক সামর্থ্যবান ছেলে-মেয়ের ওপর সমভাবে বর্তাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তাই কোনো মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে ছেলেদের মতো সমভাবে তার ওপরও মা-বাবার খরচের দায়িত্ব বর্তাবে। কেননা মা-বাবার জীবিত অবস্থায় সন্তানের জন্য খরচ ও উপহারে মেয়েরাও তাদের ভাইদের মতো সমঅধিকারী, তাই মা-বাবার খরচ বহনে তারাও সামর্থ্যের শর্তে তাদের ভাইদের সমদায়িত্বশীল হবে। ছেলে-মেয়ে না থাকলে তারপর সিরিয়াল আসবে নাতি-নাতনিদের। অতএব, তাদের ওপর সমভাবে এ দায়িত্ব বর্তাবে। (ফাতহুল কাদির : ৪/৪১৭)
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামী আপনার বাবা মার ভরনপোষণ দিতে কোনোভাবেই বাধ্য নয়।
তিনি যদি দেন,সেটি দয়া ও অনুগ্রহ হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি নিজে যেহেতু সামর্থবান নন,সুতরাং আপনার উপরেও মাতা পিতার ভরনপোষণ ওয়াজিব নয়।
,
★তারপরেও যদি আপনি নিজে চাকুরী করে মাতা পিতার ভরনপোষণ দেন,তাহলে স্বামীর সন্তুষ্টিচিত্তে অনুমতি সাপেক্ষে এবং https://ifatwa.info/5112/ লিংকে দেওয়া শর্ত সাপেক্ষে চাকুরী করতে পারেন। 
প্রয়োজনে মেয়েদের প্রাইভেট পড়াতে পারেন।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম। 
সেক্ষেত্রে বাবা মার দায়িত্ব কে নিবে?
by (679,640 points)
বাবা মার নিজেদের চলার মতো নিজস্ব সম্পদ না থাকলে সন্তানের কাছে নিজ সংসার চালানোর পরেও টাকা বেঁচে গেলে সন্তান বাবা মার দায়িত্ব নিবে।

নতুবা দায়িত্ব নেয়া ওয়াজিব নয়,তবে মানবিক চাহিদা হলো দায়িত্ব নেয়া।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...