বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ইলমে মা'রিফত যাকে তাসাউফ বলা হয়।তাসাউফ সম্পর্কে পূর্বের একটি ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
মানুষের সাথে সম্পর্কিত আ'মল দুই প্রকার যথাঃ-
- (১)প্রকাশ্য আ'মল
- (২)অপ্রকাশ্য আ'মল
প্রকাশ্য আ'মল আবার দু ধরণের হতে পারে। যথাঃ
- (ক) ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় যেমনঃ- নামায,রোযা, ইত্যাদি।
- (খ)নেতিবাচক যেমন - চুরি-ডাকাতি,ব্যভিচার ইত্যাদি।
ঠিকতেমনিভাবে অপ্রকাশ্য আ'মল ও দু ধরণের হতে পারে।
যথাঃ
- (ক)ইতিবাচক ও প্রশংসিত যেমনঃ- বিনয়,ভদ্রতা ইত্যাদি।
- (খ)নেতিবাচক ও নিন্দনীয় যেমনঃ- অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষকে লালন করে,অহংকার, অভদ্রতা।
প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সবগুলো আ'মলই কুরআন-হাদীসে বর্ণিত থাকলেও সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় কিন্তু শুধুমাত্র প্রকাশ্য আ'মল গুলোরই শিক্ষা দেয়া হয়।এবং কোথাও কোথাও এ দুই প্রকারের আ'মলের শিক্ষার সিলেবাস থাকলেও ব্যবহারিকভাবে শুধুমাত্র প্রকাশ্যে আ'মলেরই শিক্ষা দেয়া হয়।অপ্রকাশ্য আ'মলের শিক্ষা দেয়া হয় না বললেও অত্তুক্তি হবে না।এমনকি এর প্রয়োজনীয়তাকে অনেকে অনুভবও করেন না।
যেহেতু প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য আ'মলের সবগুলোই কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এবং পূর্ণ মানুষত্ব্য অর্জনের জন্য সবগুলোরই অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনিয়তা রয়েছে।বিশেষ করে অপ্রকাশ্য অা'মল গুলো অবহেলিত হওয়ায় সেটার প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যকীয়।
বিস্তারিত জানতে ভাজিট করুন- 1037
(৩)উনার যে কিতাব থেকে তা'লিম করেছেন।সেটা ঠিকই আছে।ইমাম শা'ফেয়ী যে,কঠিন শব্দ প্রয়োগ করেছেন।সেটা মূলত সতর্কতামূলক প্রয়োগ করেছেন,যাতেকরে লোকজন ইলমে তাসাউফ বা ইলমে মারিফত সম্পর্কে জানতে এগিয়ে আসে ও গুরুত্ব দেয়।
কিন্তু যনি তা'লিম করেছেন,তা'লিম পরবর্তী তিনি যে ব্যখ্যা করেছেন,
"ইলমে মারিফত শিখতে হয় কোনো হক্কানি পীর থেকে,তা ছাড়া উপায় নাই।"
এবং পীর ছাড়া কোনো মুক্তি নাই,পীরের মুরিদ হতেই হবে। এমন কথা বিশুদ্ধ নয়।বরং এমন মনোভাব চুড়ান্ত গোমরাহ।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
পীর ফারসি শব্দ।এ শব্দকে মুহাক্বিক উলামায়ে কেরাম মু'আল্লিম তথা শিক্ষকের স্থানে নিয়ে পীর-মুরিদের সম্পর্ককে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক বলেন।পীর সাহেব হলেন শিক্ষক, যিনি শরীয়তের গোপন ও ব্যবহারিক শিক্ষা লোকদিগকে দিবেন।আর মুরিদ হলেন ছাত্র, যিনি পীর(শিক্ষক) এর কাছ থেকে দ্বীনের ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করবেন।পীর মুরিদির হাকিকত শুধুমাত্র এতটুকুই।এরচেয়ে অতিরিক্ত কিছু মনে করা বা চিন্তা কখনো যাবে না।বরং সেটা সর্বদাই সীমালঙ্ঘন হবে।আমাদের দেশে প্রচলিমত যে পীর মুরিদি ত্বরিকা রয়েছে,সেটা অবশ্যই সংস্কারযোগ্য।আমাদেরকে স্বরণ রাখতে হবে,পীর-মুরিদি মূল উদ্দেশ্য নয়,বরং মূল উদ্দেশ্যই হল,নিজেকে সংস্কার করা এবং নিজেকে ইসলাহ করা।