আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
452 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম,

হাক্কানী দরুদ শরীফঃ

আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা,অসাল্লেম অ বারেক আলা আরদেকার রাসুলিল করিম রাহমাতাললিল আলামিন শাফিয়েল মুজনেবিন সাইয়েদেনা মাওলানা নবিয়েনা  মোহাম্মদেও অ আলা আলেহি অ আহলে বায়তিহি অ আওলাদিহি অ জুররিয়াতিহি অ আজওয়াজিহি অ আসহাবিহি অ আওলীয়ায়েহি  অ ওম্মাতেহি আজমাইন কামাসাল্লায়তা অ সাল্লামতা অ বারাকতা অ রামেমতা আলা  আলা সাইয়েদেনা ইব্রাহিমা অ আলা আলে সাইয়েদেনা ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

এই গুলো অর্থ কি?

আমার খালু এগুলো পড়ে।কেমন অজিফা ধরনের কিসব আমল করেন।হাক্কানী আন্জুমানের ওজিফা করেন।এখানে উনারা বলেছে ৫ ওয়াক্ত সালাতের পর সূরা ইখলাস, সূরা নাফ, ফালাক পড়ে হাক্কানী দরুদ শরীফ ১১,৯,৭, ৫ বা ৩ বার করতে বলেন।উনারা হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী মুফতী আজানগাছী ( রহঃ)  কে হুজুর কিবলা বলেন।তাদের দরবার নাকি কোলকাতা।উনারা দাবী করেন এই পীর হযরত উমর (রাঃ) এর ৩৭ বংশধর।শেফার জন্য কিসব মুবারক লবঙ্গ দেয়।

তারপর এই অজীফা আমল করলে নাকি আল্লাহ এর বন্ধু হয়ে যায় এবং স্বপ্নে অনেককিছু দেখা যায় এবং এগুলো কাওকে বলতে না করেছেন।এবং এগুলো কাওকে বলা যাবে না।এই আজানগাছী পির নাকি ১৪ বছর জঙ্গলে আমল করে রাসূল সাঃ এর সাথে দেখা হয় এবং রাসূল সাঃ এই হাক্কানী অজিফা আমল করতে বলছে।উনি বলেন, রাসূল সাঃ এর সামনে নাকি কোনো এক পাথর কালেমা শাহাদাত পড়েন।ওটা নাকি সিলসিলা প্রাপ্ত হয়ে এই পীর পেয়েছেন।

মানে আরো বিস্তারিত ব্যাপার।এগুলো কি সহিহ?উনি বলতেছেন,মা তুমি তো বাচ্চা,তুমি এতো বুজবানা।দরবারে কথা শুনলে বুঝবা।কিসব ওরছেকুল করে বাসা থেকে বার হয়।অনেক বড় বড় ব্যাক্তি এর সাথে নাকি জড়িত। অনেকের নাজি এর সাথে জড়িত থেকে মৃত্যুর সময় কলেমা নসিব হয়।আবার একজন ক্যান্সার রোগী নাকি উনার আমল করে ভালো হয়।আবার এক ব্যাক্তি নাকি স্বপ্ন দেখছে  হযরত মূসা আঃ তাকে বলছে এগুলো পড়তে।
<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_210529_091508_955.sdocx-->

এগুলোকি সহিহ?এগুলো এর ব্যাপারে খালুকে বললে বলে, মা বয়স কম। তুমি এসব বুঝবা না।

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1286 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
চট্টগ্রাম এর দারুল ইফতার একটি ফাতাওয়ার সারসংক্ষেপ নিম্নে উল্লেখ করছি-(আল্লাহ লিখককে উত্তম বিনিময় দান করুক)
.........................................
একটি মূলনীতি জানা থাকলে এ বিষয়গুলো বুঝা খুবই সহজ। এক হল দ্বীন। আরেক হল দুনিয়া।
যে বস্তুর ফলাফল মৃত্যুর পর মানুষ পেতে চায়, তার নাম দ্বীন। আর যে বস্তুর ফলাফল মানুষ মৃত্যুর আগেই পেতে চায়, তাই হল দুনিয়া।
বিদআতের সম্পর্ক হল দ্বীনের সাথে। দুনিয়ার সাথে নয়। তা’ই দুনিয়াবী কোন বস্তুর ক্ষেত্রে বিদআত শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। যেমন চেয়ার টেবিল, কম্পিটউটার ইত্যাদি।
কারণ এসব কোনটিই মৃত্যুর পরের ফলাফলের জন্য কেউ নির্মিত করেনি।
কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতিতে মিলাদ পড়া, মিলাদে কিয়াম করা ইত্যাদি বিদআত। কারণ এসবের দ্বারা মৃত্যুর পর প্রতিদান পাবার আশা করা হয়, আর এসবের প্রমাণ কুরআন হাদীস ও সাহাবা তাবেয়ীদের জমানায় ছিল না।
আর যেসব বিষয় দ্বীনী বিষয় নয় বরং দুনিয়াবী বিষয়, সেসব ক্ষেত্রে যদি সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদীস বিরোধী না পাওয়া যায়, কিংবা শরীয়ত বিরোধী আর কোন কারণ না পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত কাজটি বৈধ হবে।
উপরোক্ত মূলনীতিটি ভাল করে অনুধাবন করলে খতমে জালালী, খতমে ইউনুস, খতমে খাজেগান ইত্যাদির হুকুমও আপনি বের করে নিতে পারবেন।
উপরোক্ত খতমের কোনটিই আখেরাতের ফায়দার জন্য করা হয় না। বরং দুনিয়াবী কোন ফায়দার জন্য করা হয়ে থাকে। যেমন বিপদমুক্তি ইত্যাদি। তাই সরাসরি কুরআনের কোন আয়াত বা হাদীস এসবের বিরোধী পেশ না করতে পারলে এসবের কোনটিকে নাজায়েজ বা হারাম বলার কোন সুযোগ নেই।
দ্বিতীয় জবাব হল, এসব খতমের অবস্থান হল, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতালব্দ পথ্যের মত। অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ যেমন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বের করেছেন যে, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেলে ভাল হয়, ঠান্ডা লাগলে ওরাডিন ইত্যাদি ঔষধ খেলে ভাল হতে পারে, তেমনি বুযুর্গানে দ্বীন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জেনেছেন যে, কিছু কিছু নির্দিষ্ট খতমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফায়দা হয়ে থাকে। তাই তারা বুযুর্গানে দ্বীন থেকে বিভিন্ন খতমের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এসবই অভিজ্ঞতালব্দ বিষয়। কোনটিই দ্বীনের বিষয় নয়। বা কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণিত বিষয় নয়। এসবকে কেউ সওয়াবের কাজও মনে করে না। বরং প্রয়োজন পূরণের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
যেমন ডাক্তারের সাজেশন অনুপাতে ঔষধ সেবন। তা’ই ডাক্তারের পরামর্শ অনুপাতে পথ্য সেবন যেমন হারাম ও বিদআত নয়, তেমনি কতিপয় দুনিয়াবী উদ্দেশ্য হাসিলের আশায় বুযুর্গদের অভিজ্ঞতালব্দ উপরোক্ত খতম পড়াও হারাম বা বিদআত নয়।
হ্যাঁ, এসবকে সুন্নত মনে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা বিদআত। কেননা দু'আয়ে ইউনুস হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলে ও সংখ্যা কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
নতুবা এমনিতে আমল করতে কোন সমস্যা নেই।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আমাদের বুজুর্গানে কেরাম নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে বেশ কিছু দুআ দুরুদ এবং খতমের কথা বলেছেন, যা মূলত কুরআন সুন্নাহ থেকে নিসৃত। তবে আপনার বর্ণিত অজিফা আমাদের বিজুর্গদের কোনো আলোচনায় আমরা পাইনি। তাই নিরাপদ এটাই যে, এগুলো পরিত্যাগ করে দুরুদে ইবরাহিমি যা নামাযে পড়া হয়, সেটাকে বেশী বেশী করে পড়া। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...