আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
85 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমার ফরজ গোসল সম্পর্কে প্রশ্ন ছিলো
১/ আজকে আমি ফরজ গোসল করি। গোসলের আগে অযু করি কিন্তু পা ধৌত করিনি,,, গোসল শেষে যাওয়ার সময় পা ধৌত করবো এই ভেবে। কিন্তু গোসল শেষে আসার সময় আর পা ধৌত করতে মনেছিলো নাহ। এখন আমার প্রশ্ন হলো আমার ফরজ গোসল কি হয়েছে।
২/ ফরজ গোসল করার সময় মনে হয় কানে পানি পৌছেনি,, বগলের নীচে পানি যায়নি, নাভীতে পানি যায়নি। আনেক সময় ধরে পানি দেই তবুও মনেহয় পানি পৌছাইনি। এখন আমার করনীয় কি??  আমি পানি দেওয়ার পরেও যদি পানি না পৌছায় বা কোনো যায়গা শুকনো থাকে এর জন্য কি আল্লাহ আমাকে পাকড়াও করবে??

৩/ হাতের নকের ভিতরে, পায়ের নকের ভিতরে ময়লা জমে থাকলে অযু এবং ফরজ গোসল হবে কি??
৪/ ফরজ গোসল না হলে কি কোনো এবাদতই কবুল হবে না?? যেমনঃ যিকির-অযিফা,,দান-সাদকাহ ইত্যাদি।

৫/ ফরজ গোসল প্রায় শেষ শুধু কিছু জায়গা ধৌত করা বাকি আছে এমন সময় যদি বায়ু বের হয় তাহলে কি পুনরায় প্রথম থেকে ফরজ গোসল করতে হবে?
৬/ ফরজ গোসল প্রায় সম্পূর্ণ শেষ শুধুবপা ধৌত করা বাকি। এমন সময় বায়ু বাহির হয়ে যায়। এখন কি পুনরায় প্রথম থেকে গোসল করতে হবে নাকি শুধু পা ধৌত করলেই ফরজ গোসল হয়ে যাবে
৭/আমি গভীর ভাবে শয়তানের ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। যা ধরি তাতেই মনেহয় নাপাক লেগেছে। ওয়াসওয়াসা আমাকে পাগল করে তুলতেছে। বুক ফেটে কান্না আসে এর জন্য। আমার প্রশ্ন হলো কোনো কিছুতে সত্যি সত্যিই নাপাক লাগলো, আর আমি ওয়াসওয়াসা মনে করে কখনোই ধৌত করলাম নাহ। তাহলে এটা পড়ে নামাজ হবে কি?
(যেমন পেন্টর বেল কখনোই ধোয়া হয় না, তা সব সময় পড়েই নামাজ পড়তে হয়।)

৮/ প্লাস্টিকের জগ বা পাত্রে প্রস্রাব লেগে শুকিয়ে গেলে ভেজা হাতে ধরলে হাত নাপাক হবে কি?
৯/ কোনো কিছুতে নাপাকি লাগলে টিউবওয়েলে বা ট্যাপে ধৌত করার সময় ছিটে পানি শরীরের বিভিন্ন যায়গায় আসে। ছিটে আসা পানি কি নাপাক এবং এতে কি কাপড় বা শরীর নাপাক হয়ে যাবে?
১০/ পায়ে নাপাকি যেমন গরু-ছাগলের প্রস্রাব-পায়খানা লাগলে তা ট্যাপে বা টিউবওয়েলে ধৌত করার সময় ছিটে যে পানি আসে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। এতে করে কি কাপড় বা শরীর নাপাক হয়ে যাবে?

১১/ নাপাক কাপড় বালতিতে ধৌত করার সময়,, বালতি থেকে হাত বাহির করে ট্যাপে বা টিউবওয়েলের হাতা দরলে ট্যাপ বা টিউবওয়েলের হাতা কি নাপাক হয়ে যাবে?
১২/ ফরজ গোসল করার সময় শরীরের যেই জায়গায় বীর্য লাগে তাতে সাবান দিয়ে ধৌত করি। এবং সেই সবান মিশানো হাত দিয়েই টিউবওয়েলের হাতা এবং মগ দরি। এতে করে কি টিউবওয়েলর হাতা এবং মগ নাপাক হয়ে যাবে?
১৩/সবান মিশানো হাত দিয়ে টিউবওয়েলের হাতা দরেই কুলি করি নাকে পানি দেই এতে কি ফরজ গোসল হয়েছে নাকি নাকে এবং মুখে নাপাকি পানি চলে গেছে।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে রাসুল সাঃ এর গোসলের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।     

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ بِيَدِهِ، ثُمَّ دَلَكَ بِهَا الْحَائِطَ ثُمَّ غَسَلَهَا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.

মাইমূনাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপবিত্রতার গোসল করলেন। তিনি নিজের লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর হাত দেয়ালে ঘষলেন এবং তা ধুলেন। তারপর সালাতের উযূর ন্যায় উযূ করলেন। গোসল শেষ করে তিনি তাঁর দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৬০২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৮)
,
حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَاءً لِلْغُسْلِ، فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى شِمَالِهِ فَغَسَلَ مَذَاكِيرَهُ، ثُمَّ مَسَحَ يَدَهُ بِالأَرْضِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَحَوَّلَ مِنْ مَكَانِهِ فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ

ইবনু ‘আববাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাইমূনাহ্ (রাযি.) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম। তিনি তাঁর হাত দু’বার বা তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে তাঁর বাম হাতে পানি নিয়ে তাঁর লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর মাটিতে হাত ঘষলেন। তারপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তাঁর চেহারা ও দু’হাত ধুয়ে নিলেন। অতঃপর তাঁর সারা দেহে পানি ঢাললেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৫৭,২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৫)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গোসল করার সময় আপনার পায়ে তো পানি পৌছেছে,সুতরাং  আপনার ফরজ গোসল আদায় হয়ে গিয়েছে।
,
আরো জানুনঃ

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি অনেকবারই পানি দিয়েছেন,তবুও এসব অঙ্গে পানি পৌছার ব্যপারে আপনি সন্দিহান। 
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে এগুলো আপনার নিছক সন্দেহ মাত্র।

আপনি উক্ত অঙ্গ গুলোতে পানি পৌছানোর সময় ভেজা আঙ্গুলের সহায়তা নিবেন।
তাহলেই  আপনার গোসল হয়ে যাবে।

(০৩)
এতে অযু গোসল হয়ে যাবে। 

(০৪)
উল্লেখিত ইবাদত গুলি কবুল হবে।

তবে নামাজ,কুরআন তিলাওয়াত, তওয়াফ ইত্যাদি যেসব ইবাদতের জন্য শরীর পাক শর্ত,সেসব  ইবাদত কবুল হবেনা।

(০৫)
পুনরায় প্রথম থেকে ফরজ গোসল করা আবশ্যক নয়।
এক্ষেত্রে নামাজের আগে অযু করে নিতে হবে।
অথবা গোসলের মধ্যেই অযু করে নিতে হবে।

(০৬)
পুনরায় প্রথম থেকে গোসল করতে হবেনা  শুধু পা ধৌত করলেই ফরজ গোসল হয়ে যাবে।
তবে নামাজের আগে অযু করে নিতে হবে।
অথবা গোসলের মধ্যেই অযু করে নিতে হবে।

(০৭)
এক দিরহাম চেয়ে কম নাপাকি লাগলে নামাজ হবে,এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি নাপাকি লাগলে নামাজ হবেনা।

(০৮)
হ্যাঁ, হাত নাপাক হয়ে যাবে।

(০৯)
হ্যাঁ, উক্ত ছিটে আসা পানি নাপাক।
তবে এক দিরহাম থেকে কম লাগলে তাহা মাফ।

(১০)
গরু-ছাগলের প্রস্রাব লাগলে তা ট্যাপে বা টিউবওয়েলে ধৌত করার সময় ছিটে যে পানি আসে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। এতে করে কাপড় বা শরীর নাপাক হয়ে যাবে।
তবে এক দিরহাম থেকে কম লাগলে তাহা মাফ।

আর পায়ে গরু-ছাগলের পায়খানা লাগলে তা ট্যাপে বা টিউবওয়েলে ধৌত করার সময় ছিটে যে পানি আসে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। এতে করে কাপড় বা শরীরে পায়খানার চিন্হ বা গন্ধ পাওয়া গেলে তাহা নাপাক হয়ে যাবে।

নতুবা নয়।

(১১)
হ্যাঁ, এতে ট্যাপ বা টিউবওয়েলের হাতা নাপাক হয়ে যাবে।
এটি ধুয়ে নিতে হবে।

(১২)
এতে করে টিউবওয়েলের হাতা এবং মগ নাপাক হয়ে যাবে। 

(১৩)
আপনার হাত ধুয়েই তো নাকে এবং মুখে দিয়েছেন।
সুতরাং এতে সমস্যা হবেনা।

হ্যাঁ, যদি আপনি সেই সাবান হাত নিয়েই নাকে এবং মুখে পানি দেন,তাহলে আবারো পাক পানি দিয়ে একবার হলেও ধোয়া লাগবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...