ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
এতে দরস তথা ক্লাশের হক্ব নষ্ট হবে।
আদবের খেলাফ কাজ হবে।
তবে প্রয়োজনে উস্তাদ এমনটির অনুমতি দিলে প্রয়োজনীয় কাজ করা যাবে
কুরআনের ক্লাশে এমনটি করলে কুরআনের আদবের খেলাফ হবে।
(০২)
কোনো মানুষের পক্ষে মৃত্যুর পর পুনরায় দুনিয়াতে আগমন সম্ভব নয়। এ ছাড়া কোরআন-হাদিসের অসংখ্য বর্ণনায় তা-ই প্রমাণিত, সে অনুসারে মৃত্যুর পর কেবল আলমে বরজখ, হাশর ও জান্নাত-জাহান্নাম। পেছনে আসার কোনো সুযোগ নেই।
কুরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে,
حَتّٰۤی اِذَا جَآءَ اَحَدَہُمُ الۡمَوۡتُ قَالَ رَبِّ ارۡجِعُوۡنِ ﴿ۙ۹۹﴾ لَعَلِّیۡۤ اَعۡمَلُ صَالِحًا فِیۡمَا تَرَکۡتُ کَلَّا ؕ اِنَّہَا کَلِمَۃٌ ہُوَ قَآئِلُہَا ؕ وَ مِنۡ وَّرَآئِہِمۡ بَرۡزَخٌ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾ فَاِذَا نُفِخَ فِی الصُّوۡرِ فَلَاۤ اَنۡسَابَ بَیۡنَہُمۡ یَوۡمَئِذٍ وَّ لَا یَتَسَآءَلُوۡنَ ﴿۱۰۱﴾ فَمَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾ وَ مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فِیۡ جَہَنَّمَ خٰلِدُوۡنَ ﴿۱۰۳﴾ۚ
“অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু আসে, সে বলে, ‘হে আমার রব, আমাকে ফেরত পাঠান, যেন আমি সত্কর্ম করতে পারি, যা আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম।’ কখনো নয়, এটি একটি বাক্য যা সে বলবে। যেদিন তাদের পুনরুত্থিত করা হবে সেদিন পর্যন্ত তাদের সামনে থাকবে বরজখ। অতঃপর যেদিন শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, সেদিন তাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না, কেউ কারো বিষয়ে জানতে চাইবে না। অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজদের ক্ষতি করল, জাহান্নামে তারা হবে স্থায়ী।” (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৯৯-১০৩)
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا قُبِرَ الْمَيِّتُ - أَوْ قَالَ أَحَدُكُمْ أَتَاهُ مَلَكَانِ أَسْوَدَانِ أَزْرَقَانِ يُقَالُ لأَحَدِهِمَا الْمُنْكَرُ وَالآخَرُ النَّكِيرُ فَيَقُولاَنِ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ مَا كَانَ يَقُولُ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ . فَيَقُولاَنِ قَدْ كُنَّا نَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُولُ هَذَا . ثُمَّ يُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ سَبْعُونَ ذِرَاعًا فِي سَبْعِينَ ثُمَّ يُنَوَّرُ لَهُ فِيهِ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ نَمْ . فَيَقُولُ أَرْجِعُ إِلَى أَهْلِي فَأُخْبِرُهُمْ فَيَقُولاَنِ نَمْ كَنَوْمَةِ الْعَرُوسِ الَّذِي لاَ يُوقِظُهُ إِلاَّ أَحَبُّ أَهْلِهِ إِلَيْهِ . حَتَّى يَبْعَثَهُ اللَّهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ . وَإِنْ كَانَ مُنَافِقًا قَالَ سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ فَقُلْتُ مِثْلَهُ لاَ أَدْرِي . فَيَقُولاَنِ قَدْ كُنَّا نَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُولُ ذَلِكَ . فَيُقَالُ لِلأَرْضِ الْتَئِمِي عَلَيْهِ . فَتَلْتَئِمُ عَلَيْهِ . فَتَخْتَلِفُ فِيهَا أَضْلاَعُهُ فَلاَ يَزَالُ فِيهَا مُعَذَّبًا حَتَّى يَبْعَثَهُ اللَّهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ "
আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মৃত লোককে বা তোমাদের কাউকে যখন কবরের মধ্যে রাখা হয় তখন কালো বর্ণের এবং নীল চোখ বিশিষ্ট দু'জন ফেরেশতা আসেন তার নিকট। তাদের মধ্যে একজনকে মুনকার এবং অন্যজনকে নাকীর বলা হয়। তারা উভয়ে (মৃত ব্যক্তিকে) প্রশ্ন করেনঃ তুমি এ ব্যক্তির (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) প্রসঙ্গে কি বলতে? মৃত ব্যক্তিটি (যদি মুমিন হয় তাহলে) পূর্বে যা বলত তাই বলবেঃ তিনি আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।
তারা উভয়ে তখন বলবেন, আমরা তো জানতাম তুমি একথাই বলবে। তারপর সে ব্যক্তির কবর দৈর্ঘ্য-প্রস্থে সত্তর গজ করে প্রশস্ত করা হবে এবং তার জন্য এখানে আলোর ব্যবস্থা করা হবে। তারপর সে লোককে বলা হবে, তুমি ঘুমিয়ে থাক। তখন সে বলবে, আমার পরিবার-পরিজনকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য আমি তাদের নিকট ফিরে যেতে চাই। তারা উভয়ে বলবেন, বাসর ঘরের বরের মত তুমি এখানে এমন গভীর ঘুম দাও, যাকে তার পরিবারের সবচাইতে প্রিয়জন ব্যাতিত আর কোন ব্যাক্তি জাগিয়ে তুলতে পারে না।
অবশেষে আল্লাহ তা'আলা কিয়ামাতের দিন তাকে তার বিছানা হতে জাগিয়ে তুলবেন। মৃত লোকটি যদি মুনাফিক হয় তাহলে (প্রশ্নের উত্তরে) বলবে, তার প্রসঙ্গে লোকেরা একটা কথা বলত আমিও তাই বলতাম। এর বেশি কিছুই আমি জানি না। ফেরেশতা দু'জন তখন বলবেন, আমরা জানতাম, এ কথাই তুমি বলবে। তারপর যমীনকে বলা হবে, একে চাপ দাও। সে লোককে এমন শক্ত করে যমীন চাপা দেবে যে, তার পাজরের হাড়গুলো পরস্পরের মাঝে ঢুকে পরবে। (কিয়ামাতের দিন) আল্লাহ তাকে তার এ বিছানা হতে উঠানো পর্যন্ত সে লোক এভাবেই আযাব পেতে থাকবে।
(হাসান,তিরমিজি ১০৭১ মিশকাত (১৩০), সহীহাহ (১৩৯১)
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হিন্দুরা যে পূর্ণজন্ম বিশ্বাস করে,তাদেরকে বুঝাতে হলে এভাবে তারা আয়াত,হাদীস মানবেনা।
যুক্তির পর যুক্তি দেখাবে,আপনিও যুক্তি দেখাতে পারেন,তবে যুক্তিতে অনেক সময়েই সফলতা আসেনা।
সুতরাং তাদেরকে মূল তাওহিদের প্রতি বুঝাতে হবে,তাওহিদ,তারপর রিসালাতের উপর তারা একমত হলে বুঝানোর ধারা অব্যাহত থাকলে আস্তেধীরে তারা ইসলামের সবই মানবে,ইনশাআল্লাহ।
(০৩)
এতে কাপড় ও শরীরের উক্ত স্থান পাক করে অযু করে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবে।
ফরজের পাশাপাশি সুন্নাত বিতর নামাজ গুলিও আদায় করতে হবে।
হ্যাঁ যদি ওয়াক্ত চলে যায়,তাহলে শুধু ফরজ আদায় করবেন।
আর ইশার নামাজের ক্ষেত্রে এমনটি হলে বিতিরও কাজা আদায় করবেন।
আপনার এই অবস্থা প্রায়ই হলে আপনি প্রত্যেক নামাজের পর চেক করবেন।
(০৪)
আপনাকে কোনো কাফফারা দিতে হবেনা।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মাফ করবেন।
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।
(০৫)
অলসতা পরিহার করতে হবে।
আখেরাত জীবনের কামিয়াবির ফিকির করবেন।
নেক মহিলাদের সংশ্রবে থাকতে পারেন,মন্দ ও অলসদের কাছে বসবেননা।
এখন একটু পড়ে পরে বাকিটা পড়বো,এমন ধারণা পরিহার করে যে আমল শুরু করেছেন,সেটি একবারেই শেষ করবেন।
অলসতা করবেননা।
হক্কানি শায়েখদের আমলের প্রতি উদ্ভুদ্ধকরন সংক্রান্ত বয়ান শুনবেন,ইনশাআল্লাহ সফলতা মিলবে।
(০৬)
★এভাবে বুঝাতে পারেন।
ঔষধ অসিলা,মাধ্যম।
যেই অসিলা গ্রহনের আদেশ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাঃ আদেশ করেছেন।
কিন্তু মাজার পূজা ইত্যাদি তো রাসুলুল্লাহ সাঃ কর্তৃক নিষিদ্ধ,আর এতে স্পষ্ট শিরক বিদ্যমান।
তাই এটি কোনোক্রমেই অনুমোদন যোগ্য হতে পারেনা।
(০৭)
কোনো এলাকায় ঘূর্ণিঝড় কোনো আঘাত হানতে পারে বা না পারে,সে বিষয়টি নির্ভর করে মহান আল্লাহর আদেশের উপর।
আল্লাহর আদেশ সত্ত্বেও কোনো ব্যাক্তির কারনে কোনো এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আসবেনা,এটি ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া কিছু নয়।
এক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড় ঠেকানোর মতো জীবিত ওলি আওলিয়াদেরও ক্ষমতা নেই,মৃতদেরও ক্ষমতা নেই।
এর নিরংকুশ ক্ষমতা একমাত্র,কেবলমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার হাতে।