আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
69 views
in সালাত(Prayer) by (14 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম হুজুর আশা করি আল্লাহর অশেষ  রহমতে ভালো এবং সুস্থ আছেন আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল

১: হুজুর আমি যখন মসজিদে যোহর ও আসরের নামাজ পড়তে যাই তখন ইমাম সাহেব মনে মনে সূরা পড়ে আমার প্রশ্ন হল হুজুর আমি যখন মনে মনে সূরা ফাতিহা পড়ি তখন পুরো সূরা পড়ার আগে ইমাম সাহেব রুকুতে চলে যায় এক্ষেত্রে আমার করনীয় কি ?

২:হুজুর যোহর ও আসরের সময় কি সূরা ফাতিহা পর কি অন্য

সূরা মিলাতে হবে?আর আরেকটা প্রশ্ন যেমন যোহরের ফরয শেষে ২ রাকাত আসরের ফরয শেষে ২ রাকাত মাগরিবের ফরয

শেষে ১ রাকাত ও এশার ফরয শেষে ২ রাকাত এগুলোতে সূরা মনে মনে পড়ে ইমাম সাহেব এখানেও আমি সূরা ফাতিহা পুরো পাঠ করার আগে ইমাম সাহেব রুকুতে চলে যায় এক্ষেত্রে আমার করনীয় কি ?

৩:আমরা যে সুন্নত নামায পড়ার সময় আস্তে কিরাত পড়ি অনেক সময় বড় কফ উচ্চারণটা আসে না সে টা জোরে পড়ার সময় আসে আবার অনেক সময় আসে না যেমন সূরা ফালাকের শুরুতে কুল। এ ক্ষেত্রে আমার করনীয় কি? আরেকটা প্রশ্ন হুজুর আমার ফরয নামাজ ছাড়া যে কোনো নামাজে যেমন ২ রাকাত সুন্নত নামাজে কি আমি সূরা ফাতিহার পড় যে কোনো সূরার ৩ আয়াত ৩ আয়াত মিলাতে পারব যেমন ২ রাকাত সুন্নত নামাজের ২ রাকাতেই মিলাতে পারব?যেমন: সূরা আসর ও সূরা কাউসার
৪:আচ্ছা হুজুর আমরা দ্বিতীয় বৈঠকের সময় দৃষ্টি কোথায় রাখব এবং যখন তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবো তখন দৃষ্টি কোথায় রেখে দাঁড়াবো এবং যখন নামাজ সমাপ্ত করার জন্য আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে ডানদিকে কাঁধে তাকাবো কিন্তু মাঝখানে কোথায় তাকাবো ?

৫:হুজুর আমি প্রতিদিন ফজরের নামায ঘরে পড়ি এবং অনেক সময় টাইম মতো উঠতে পারি না সে ক্ষেত্রে কাজা পরে নেই কিন্তু মসজিদে যাই না আবার কুকুর ও থাকে আবার কুকুর ক্ষতি করার আশঙ্কা থাকে বলে আমি মসজিদে যাই না মসজিদে না যাওয়ার ক্ষেত্রে কি আমার গুনাহ হবে? এবং ঘরে ইমামমতি | করে নামায পড়ি!
৬: হুজুর আমরা যদি কোনো কারণবশত দিনে বা রাতে ২ বার গোসল করি ১ম গোসল টা সুন্নত গোসল আদায় করি পরের টা ও কি সুন্নত গোসল আদায় করব কি?

1 Answer

+1 vote
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হানাফি মাযহাব মতে ইমামের পিছনে কোনো নামাযেই মুক্তাদীদের কিরাআত পড়তে হবেনা।
এ সময়ে মুক্তাদীগন চুপ থাকবে। 
,
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  

وإذا قرئ القرآن فاستمعوا له وأنصتوا لعلكم ترحمون ” يعني في الصلاة المفروضة

অর্থ : যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোন এবং চুপ থাক, যাতে তোমাদের প্রতি করুণা করা হয় (ফরজ নামাজে)

হযরত ইবনে মাসঊদ রা. এর মতও তাই। তাফসীরে তাবারীতে বলা হয়েছে:

صلى ابن مسعود، فسمع أناسا يقرءون مع الامام، فلما انصرف، قال: أما آن لكم أن تفقهوا ؟ أما آن لكم أن تعقلوا ؟ وإذا قرئ القرآن فاستمعوا له وأنصتوا كما أمركم الله
অর্থাৎ হযরত ইবনে মাসঊদ রা. নামায পড়ছিলেন, তখন কতিপয় লোককে ইমামের সঙ্গে কেরাত পড়তে শুনলেন। নামায শেষে তিনি বললেন : তোমাদের কি অনুধাবন করার সময় আসেনি, তোমাদের কি বোঝার সময় হয় নি? যখন কুরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং নীরব থাকবে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন। (৯ খ. ১০৩ পৃ.)

হযরত আবূ মূসা আশআরী রা. বলেছেন,
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إذا قرأ الإمام فأنصتوا، فإذا كان عند القعدة فليكن أوّل ذكر أحدكم التشهد. أخرجه مسلم (৪০৪) في باب التشهد في الصلاة، وأحمد في المسند ৪/৪১৫ (১৯৯৬১)، وأبو داود (৯৭৩) وابن ماجه (৮৪৭) واللفظ له. ؟

অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যখন ইমাম কুরআন পড়বে,তোমরা তখন চুপ করে থাকবে। আর বৈঠকের সময় তাশাহহুদ-ই প্রথম পড়তে হবে।

(মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪০৪; আবূ দাউদ, হাদীস নং ৯৭৩; ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৮৪৭; মুসনাদে আহমাদ, ৪খ, ৪১৫ পৃ, হাদীস নং ১৯৯৬১। ইমাম আহমদ, (দ্র. তামহীদ ১১/৩৪), ইমাম মুসলিম, ইবনুল মুনযির (দ্র. আল আওসাত, ৩/১০৫), ইমাম ইবনে জারীর তাবারী র. (দ্র. তাফসীরে তাবারী, ৯/১০৩) ও ইবনে হাযম জাহেরী (দ্র. আল মুহাল্লা, ২/২৭০) প্রমুখ এ হাদীসকে সহীহ বলেছেন।
,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)ইরশাদ করেছেন যে, 

 مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَقِرَاءَتُهُ لَهُ قِرَاءَةٌ

যে ব্যক্তির ইমাম আছে তার ইমামের কেরাতই তার জন্য কেরাত বলে ধর্তব্য হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৫০, সুনানুল বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৭২৩, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-১১৮৬, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৪৬৪৩, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-১০৫০, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৮০০, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-২৭৯৭, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৭৫৭৯, মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ-৯৬, মুসনাদে ইমামে আজম-৬১)    
বিস্তারিত জানুনঃ-
,
★তবে অন্যান্য কিছু মাযহাব,ও কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলো মুক্তাদীদেরকে সুরা ফাতেহা পড়তে হবে।
সুতরাং তাদের মতানুসারীগন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যদি হানাফি মাযহাব অনুসারী হোন,সেক্ষেত্রে আপনাকে ইমামের পিছনে সুরা ফাতেহা সহ কোনো সুরাই তিলাওয়াত করতে হবেনা।
অনুমতি নেই।
,
তবে আপনি যদি গায়রে মুকাল্লিদ দের অনুসারী হোন বা ভিন্ন মাযহাব অনুসারী হোন,যাদের মাযহাবে ইমামের পিছনে সুরা ফাতেহা পড়াকে আবশ্যকীয় বলা হয়,সেক্ষেত্রে আপনি ইমামের পিছনে সুরা ফাতেহা পড়বেন।
সেই হিসেবে উপরোক্ত প্রশ্নাবলীর জবাবঃ-

(০১)
এক্ষেত্রে আপনি দ্রুত সুরা ফাতেহা শেষ করে রুকুতে চলে যাবেন।
আগে থেকে দ্রুত সুরা ফাতেহা শেষ করার চেষ্টা করবেন।

(০২)
অন্য সুরা মিলানো আবশ্যক নয়।

ইমামের আগে সূরা ফাতেহা শেষ করতে না পারলে করনীয় ১নং জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৩)
ক,
এতে কোনো সমস্যা নেই।

খ,
হ্যাঁ, মিলাতে পারবেন।

(০৪)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৫)
এভাবে মসজিদে না যাওয়ার দরুন আপনার গুনাহ হবে।

(০৬)
হ্যাঁ করতে পারেন।
তবে এগুলো কোনোটাই আবশ্যকীয় গোসল নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...