আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
5,867 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by
edited
আমার ভাইয়ার বিয়ের  জন্য আমার আম্মু আমার খালাতো বোনকে  পছন্দ করেন, কিন্তু ভাইয়া একদম রাজী ছিলো না, এমনকি আমাদের আত্নীয় স্বজনেরাও সবাই রাজি ছিলো ভাইয়া ব্যাতিত,  যেহেতু, মেয়েটার ও বয়স হয়ে যাচ্ছিলো তাই আমার আপু,ও তার হাসবেন্ট মেয়েটার বিয়ের অন্যত্র ঘটকালি করে, এবং এক জায়গায় বিয়ে হয়ে যায় তার, এখন কথা হলো, তাগদিরে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে লিখা ছিলো না বলেই কি ভাইয়া রাজি হয়নি?!  নাকি তিনি রাজি হননি তাই বিয়েটা হয়নি, অর্থাৎ  দোষ টা তার ,...  এমনটা কি.??? যেহেতু আল্লাহ্‌ মানুষকে ভালো মন্দ করার ইচ্ছা স্বাধীন দিয়েছেন।  তাই আমার আম্মু কষ্ট পেলে তার জন্য ভাইয়া  ই অপরাধি হবেন।..??
আর আমার বড় আপু ভাবছেন, তিনি বা তার হাসবেন্ট ঘটকালী না করলে হয়ত অন্য কেউ করতো, তাদের খারাপ লাগছে তারা কেন করেছেন, সেটা ভেবে!! কারন আমার আম্মু এখানে কষ্ট পাচ্ছে তাই,  এখন এখানে কি ভাইয়া দোষ সাব্যস্ত করবো নাকি বলবো যে " তাগদিরে ছিলো না তাই হয়নি" আর এটা বলে আম্মুসহ সকলকে স্বান্ত্বনা দিবো..???
দুঃখিত! প্রশ্ন বড় করার জন্য! এত ঘটনা লিখার জন্য! আসলে আমার আম্মু ভাইয়ার উপর ভীষণ  কষ্ট পেয়েছে,তাই বুঝতিছিলাম না, যে কোনটা সঠিক ভাববো..!জাযাকাল্লাহু খইর!

1 Answer

+1 vote
by (590,550 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ- 
তাক্বদীর শব্দটির অর্থ নির্ধারণ করা বা অনুমান করা। 
শারঈ পরিভাষায় তাক্বদীর হ’ল, আল্লাহ কর্তৃক বান্দার ভবিষ্যত নির্ধারণ করা। 

তাকদীর বিষয়ক দুয়েকটা আয়াত ও হাদীস লক্ষণীয়........ 
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
 ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ. 
 আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে। (ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)। 

একদিন ছাহাবায়ে কেরাম তাকে কেবল তাক্বদীরের উপর ভরসা করে সকল আমল ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা সৎকর্ম করে যাও। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পক্ষে সে কাজ সহজসাধ্য হবে। যারা সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত, তাদের জন্য সেরূপ আমল এবং যারা দুর্ভাগাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের জন্য সেরূপ আমল সহজ করে দেওয়া হয়েছে। (বুখারী হা/৪৯৪৯)। 

তাক্বদীর সম্পূর্ণ গোপনীয় বিষয়।আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং তাক্বদীরের জ্ঞান তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে গোপন রেখেছেন।এজন্য রাসূল (ছাঃ) এ প্রসঙ্গে অহেতুক বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী,ইবনে মাজাহ,মিশকাত হা/৯৮) 

আল্লাহ তাক্বদীরের মন্দকে পরিবর্তন করে দিতে পারেন।তিনি তাক্বদীরের ভাল-মন্দকে ইচ্ছা করলে মিটিয়ে দিতে পারেন এবং বহালও রাখতে পারেন(রা‘দ ৩৯)। 

রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ পাপকর্মের কারণে রূযী থেকে বঞ্চিত হয়।দো‘আর মাধ্যমে তাক্বদীর পরিবর্তন হয় এবং নেকীর মাধ্যমে বয়স বৃদ্ধি পায় (নাসাঈ, ইবনু মাজাহ,হা/৪৯২৪; মিশকাত হা/৪৯২৫)। 

তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় জীবিকায় প্রশস্ততা ও মৃত্যুতে বিলম্ব কামনা করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সাথে উত্তম ব্যবহার করে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৮)। 
 
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
 ﻭَﺃَﻥ ﻟَّﻴْﺲَ ﻟِﻠْﺈِﻧﺴَﺎﻥِ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺳَﻌَﻰ 
 বান্দা কেবল সেটাই পায়, যেটার জন্য সে চেষ্টা করে। (সূরা,আন-নাজম ৫৩/৩৯) 

প্রিয় দ্বীনী বোন! 
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আপনার ভাইয়্যার তাকদীরে লিখা ছিলো যে, তিনি যদি চেষ্টা তদবির করতেন,আল্লাহর কাছে মুনাজাত করতেন,আল্লাহর কবুল করলে অবশ্যই তিনি তাকে বিয়ে করতেন।যদি বিয়ে করতেন তবে সেটাও তাকদীরে লিখন হতো। এখন যখন বিয়ে হয় নাই তখন এটাও তাকদীরের লিখন। আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকাই ঈমানের দাবী। সুতরাং এ নিয়ে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না। বুঝতে হবে এটা তাকদীরে লিখন ছিলো। বিয়ে হওয়াটাও তাকদীরের লিখন না হওয়াটাও তাকদীরের লিখন। উলামায়ে কেরামগণ তাকদীর নিয়ে বেশ আলোচনা করতে নিষেধ করেছেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...