নারীরা সাধারণত তাদের স্বামী থেকে চার মাস দূরে থাকতে পারে।
,
হাদিস শরিফে এসেছে,যায়দ বিন আলমাস (রহ.) বলেন,
‘এক রাতে হযরত উমর (রা.) জনগণের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য প্রহরী বেশে বের হয়ে গেলেন। এক বাড়ির পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি ঘর থেকে নারী কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুনতে পেলেন। ঘরের ভিতর এক মহিলা কবিতা আবৃত্তি করছিল। যার অর্থ হলো,রজনী দীর্ঘ হয়েছে এবং তার এক পার্শ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন যাবত আমার প্রেমাস্পদ আমার কাছে নেই যে,তার সাথে আমি আমোদ-প্রমোদ করব। আল্লাহর শপথ! যদি এক আল্লাহর ভয় না থাকত তাহলে এ খাটের চার পাশ নড়ে উঠত।
যখন ভোর হলো হযরত উমর (রা.) রাতের কবিতা আবৃত্তিকারিণী মহিলাকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। মহিলা খলিফার দরবারে এসে উপস্থিত হলে হযরত উমর (রা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তুমি কি গত রাতে এ-জাতীয় কবিতা আবৃত্তি করেছিলে? মহিলা বলল,হ্যাঁ।
উমর (রা.) বললেন কেন? উত্তরে মহিলা বলল,দীর্ঘদিন যাবত আমার স্বামী জিহাদের ময়দানে রয়েছে। অথচ এমুহূর্তে তার নৈকট্য পাওয়া আমার একান্ত কাম্য ছিল,তার বিরহেই আমি এমনটি করেছি৷ হযরত উমর (রা.) এ কথা শুনে তখনই ঐ মহিলার স্বামীর নিকট ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়ে শাহী ফরমান প্রেরণ করলেন। এরপর তিনি তার কন্যা হযরত হাফসা (রা.) এর নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে আমার মেয়ে! নারীরা তাদের স্বামী থেকে কতদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে? (প্রজাদের স্বার্থ রক্ষার ইচ্ছা যদি না হত তবে আমি তোমার নিকট এরুপ প্রশ্ন করতাম না) তখন হাফসা (রা.) বললেন,মেয়েরা তাদের স্বামী থেকে চার মাস পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে। এরপর থেকে হযরত উমর (রা.) চার মাস পরপর মুজাহিদ বাহিনীকে ফেরত নিয়ে আসতেন এবং নতুন বাহিনী পাঠিয়ে দিতেন।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১২৫৯৪]
,
তাই চার মাসের অধিক সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকা শরিয়ত সমর্থন করে না।
,
তবে কেউ যদি প্রয়োজনে এরচেয়ে বেশি সময় দূরে থাকতে চায় তাহলে তার স্ত্রী থেকে অনুমতি নিতে হবে। স্ত্রী যদি অনুমতি দেয় এবং এ সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে এবং বাস্তবেও তেমনটি দেখা যায় তাহলে স্বামী এরচেয়েও বেশি সময় দূরে থাকতে পারবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বামী স্ত্রী উভয়ে সন্তুষ্টি চিত্তে যদি দূরে থাকতে চায়,এবং উভয়ে যদি এ সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে এবং বাস্তবেও তেমনটি দেখা যায়।
তাহলে যতদিন তারা চায়,দূরে থাকতে পারবে।
ইসলাম এই ব্যপারে কোনো সময় সীমা নির্ধারন করে দেয়নি।
এবং এর দ্বারা তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো তালাক হবেনা।
(তবে স্বামী ঈলা করলে শর্তমাফিক তালাক হয়ে যাবে।)
এভাবে দূরে থাকলে সমস্যা না হলেও যদি তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়,তাহলে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করার গুনাহ হবে।
আর স্বামীর অনুমতিতেই যেহেতু স্ত্রী দূরে থাকছে,তাই স্ত্রীর ভরনপোষণ স্বামীকেই দিতে হবে।