আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
142 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
স্বামী স্ত্রী কারো পরিবারই জানে না তারা বিবাহিত। প্রেম সম্পর্ক থেকে স্টুডেন্ট অবস্থায় বিয়ে হয়েছিল। যিনা করার হাত থেকে বাচার নিয়তে বিয়ে করা। ৪ বছর হয়ে গেছে বিয়ের। একসাথে থাকে না তারা। স্ত্রীর শারীরিক(১০মাস অন্তর ১বার), মানসিক কোনো চাহিদা মেটাতে পারছে না স্বামী। আর্থিক দিক দিয়ে কোনো দাবি নেই স্ত্রীর। ছেলে নিজের পায়ে না দাঁড়ানো পর্যন্ত বাসায় জানাবে না। কিন্তু স্ত্রীর জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে সহ্য করা, আর সময় দেয়া। মেয়ের পরিবারে ছেলেকে মেনে নিয়ে বিয়ে দিতে সমস্যা নেই। ছেলের বাবা নেই জন্য সে উপার্জন ছাড়া বাসায় বিয়ের কথা বলতে পারছে না।এমতাবস্থায় স্ত্রীর কী করা উচিত? সে কী তালাক চাইতে পারবে? স্ত্রীর পরিবার তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে।

আলাদা প্রশ্নঃ বিয়ের সময় কাজী ছিলেন, আর কাজীর পরিচিত লোক ছিলেন একজন। মোহরানার উল্লেখ আছে বিয়েতে। বিয়েটি কী শুদ্ধ হয়েছে? উপরোক্ত পরিস্থিতির জন্যেই পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করা হয়েছিল। শুদ্ধ না হলে কী করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/48665?show=48825#a48825 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানাতাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল২৩)

 

(অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ https://ifatwa.info/4801/)

নিজে নিজে বিয়ে সম্পর্কে আরো জানুন- https://ifatwa.info/2730/

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

মাতাপিতার পরামর্শেই বিয়েতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সকলের জন্য উচিত হলো  মাতাপিতা এবং পারিবারিক ভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত  বিয়ে করা। যেকোনো মেয়েকে/ছেলেকে বিবাহের ক্ষেত্রে পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করানো জরুরি।  পারিবারিক ভাবে বিয়ে করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টাকে অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা কাউকে পালিয়ে বা গোপন বিয়ের পরামর্শ কখনো দিতে পারিনা। অনেক মেয়ে গোপনে বিয়ে করে অনেক কষ্টে আছে।  অনেক সময় ছেলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকে। আবার পারিবারিক ভাবে উভয় পক্ষের পরিবার এই বিয়েতে রাজী হতে চাই না। আবার স্বামী তাকে আর পরবর্তীতে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয় না বা মেনে নিতে চাই না এমনকি স্ত্রীকে রেখে স্বামী অন্য কোথাও বিয়ে করে সেখানেই অবস্থান করে বা অন্য কোথাও পালিয়েও যায়।

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করেতথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করেযার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করেতাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

 

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

  

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম। মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না। তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব। পিতা মাতা সাধারণত সন্তানদের থেকে ভালো বুঝেন৷ সর্বদা তারা সন্তানদের কল্যাণ চান৷ বিশেষ করে বিয়ে শাদীর বিষয়ে পিতা মাতার মতকেই প্রাধাণ্য দেওয়া উচিত৷ অন্যথায় অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়৷ এটা বিয়ের আগে বুঝে আসে নাতবে বিয়ের পরে ঠিকই সবাই বুঝে৷ অনেক ছেলে মেয়ে যারা নিজেদের পছন্দের ছেলে মেয়েকে আবেগবশত বিয়ে করে পরবর্তীতে অনেক কষ্টে আছে৷ তবে পিতা-মাতা দ্বীনদার ছেলেকে প্রাধাণ্য না দিতে চাইলে তাদেরকে বুঝিয়ে রাজী করানো।

 

২. আপনারা বিয়ে তো করেই ফেলেছেন। তাই এখন আপনার কাজ হলো যেভাবেই হোক বিয়ের বিষয়টা পিতা-মাতাকে বলে রাজী করানো।  আপনার বিয়ের বিষয়টা আপনার আত্মীয়ের মধ্যে যাকে বললে সে মেনে নিবে তাকে আগে বুঝিয়ে বলেন। যেমন ভাইবোনখালাদাদী-নানী। তারপর তার মাধ্যমে আপনার পিতা মাতাকে রাজী করান।

 

৩. ‘স্ত্রীর শারীরিক(১০মাস অন্তর ১বার), মানসিক কোনো চাহিদা মেটাতে পারছে না স্বামী।’ ছেলে কি শারিরিক ভাবে অক্ষম ?  উক্ত কথাটি  বিস্তারিত বলার দরকার ছিলো। অন্যথায় বিস্তারিত হুকুম বলা সম্ভয় নয়।

৪. হ্যাঁ, প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী বুঝে আসছে যে, আপনাদের বিয়ে সহীহ হয়েছিলো। তবে আরো বিস্তারিত ভাবে বললে আরো সুবিধা হতো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...