আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
278 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।

আমার একজন আন্টি আপনাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে, উনি উনার স্বামী ভরনপোষণ না দিয়ে হুটহাট ঘর থেকে চলে গিয়ে আবার ফিরে আসতেন। তাই ২০১৭ সাল থেকে উনারা আলাদা থাকেন। উনাদের একটি ছেলে আছে যার পড়ালেখাসহ সব দায়িত্ব আন্টি পালন করেছেন আল্লাহর ইচ্ছায় আলহামদুলিল্লাহ। ছেলে এখন চাকরি করে।
উনারা দুইজনই একসাথে থাকতে চান না। এমন অবস্থায় কি তালাক না দিয়েও স্বামীর থেকে আলাদা থাকলে উনার গুনাহ হবে? উনাদের বয়স ৬০এর উপরে। উনার গুনাহ নিয়ে ফিকিরে আছেন তাই পরামর্শ চেয়েছেন। যদি বিস্তারিত কথা বলতে হয় দয়া করে কিভাবে যোগাযোগ করবে আপনাদের সাথে একটু জানাবেন। উনার ছেলের মাধ্যমে তাহলে যোগাযোগ করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

জাযাকাল্লাহু খায়রান।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

নারীরা সাধারণত তাদের স্বামী থেকে চার মাস দূরে থাকতে পারে।
,
হাদিস শরিফে এসেছে,যায়দ বিন আলমাস (রহ.) বলেন,
‘এক রাতে হযরত উমর (রা.) জনগণের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য প্রহরী বেশে বের হয়ে গেলেন। এক বাড়ির পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি ঘর থেকে নারী কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুনতে পেলেন। ঘরের ভিতর এক মহিলা কবিতা আবৃত্তি করছিল। যার অর্থ হলো,রজনী দীর্ঘ হয়েছে এবং তার এক পার্শ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন যাবত আমার প্রেমাস্পদ আমার কাছে নেই যে,তার সাথে আমি আমোদ-প্রমোদ করব। আল্লাহর শপথ! যদি এক আল্লাহর ভয় না থাকত তাহলে এ খাটের চার পাশ নড়ে উঠত।
যখন ভোর হলো হযরত উমর (রা.) রাতের কবিতা আবৃত্তিকারিণী মহিলাকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। মহিলা খলিফার দরবারে এসে উপস্থিত হলে হযরত উমর (রা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তুমি কি গত রাতে এ-জাতীয় কবিতা আবৃত্তি করেছিলে? মহিলা বলল,হ্যাঁ।
উমর (রা.) বললেন কেন? উত্তরে মহিলা বলল,দীর্ঘদিন যাবত আমার স্বামী জিহাদের ময়দানে রয়েছে। অথচ এমুহূর্তে তার নৈকট্য পাওয়া আমার একান্ত কাম্য ছিল,তার বিরহেই আমি এমনটি করেছি৷ হযরত উমর (রা.) এ কথা শুনে তখনই ঐ মহিলার স্বামীর নিকট ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়ে শাহী ফরমান প্রেরণ করলেন। এরপর তিনি তার কন্যা হযরত হাফসা (রা.) এর নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে আমার মেয়ে! নারীরা তাদের স্বামী থেকে কতদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে? (প্রজাদের স্বার্থ রক্ষার ইচ্ছা যদি না হত তবে আমি তোমার নিকট এরুপ প্রশ্ন করতাম না) তখন হাফসা (রা.) বললেন,মেয়েরা তাদের স্বামী থেকে চার মাস পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে। এরপর থেকে হযরত উমর (রা.) চার মাস পরপর মুজাহিদ বাহিনীকে ফেরত নিয়ে আসতেন এবং নতুন বাহিনী পাঠিয়ে দিতেন।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১২৫৯৪]
,
তাই চার মাসের অধিক সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকা শরিয়ত সমর্থন করে না।
,
তবে কেউ যদি প্রয়োজনে এরচেয়ে বেশি সময় দূরে থাকতে চায় তাহলে তার স্ত্রী থেকে অনুমতি নিতে হবে। স্ত্রী যদি অনুমতি দেয় এবং এ সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে এবং বাস্তবেও তেমনটি দেখা যায় তাহলে স্বামী এরচেয়েও বেশি সময় দূরে থাকতে পারবে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বামী স্ত্রী উভয়ে সন্তুষ্টি চিত্তে যদি দূরে থাকতে চায়,এবং উভয়ে যদি এ সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে এবং বাস্তবেও তেমনটি দেখা যায়। 

তাহলে যতদিন তারা চায়,দূরে থাকতে পারবে।
ইসলাম এই ব্যপারে কোনো সময় সীমা নির্ধারন করে দেয়নি।
এবং এর দ্বারা তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো তালাক হবেনা।
(তবে স্বামী ঈলা করলে শর্তমাফিক তালাক হয়ে যাবে।)

এভাবে দূরে থাকলে সমস্যা না হলেও যদি তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়,তাহলে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করার গুনাহ হবে।
যাহা খুবই মারাত্মক। 
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যোগাযোগ ঠিক রাখতে হবে,নিয়মিত কথা বলতে হবে।
স্বামীর খেদমতের প্রয়োজনে খেদমত করতে হবে।
দেখা করতে চাইলে দেখা দিতে হবে।
,
আর স্বামীর অনুমতিতেই যেহেতু স্ত্রী দূরে থাকছে,তাই স্ত্রীর ভরনপোষণ স্বামীকেই দিতে হবে।
হ্যাঁ স্ত্রী তাহা নিতে না চাইলে তাহা ভিন্ন কথা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...