আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
158 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
বরাবর
ফতোয়া বিভাগ
বিষয় ঃ তালাক

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি। মুহতারাম আমি একজন মুসলিম নারী। বিগত পাচ বছর আগে একজনের সাথে আমার অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিবারের সম্মতিতে বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিছুদিন পর তার নিকটাত্মীয় কাছ থেকে জানতে পারি যে সে তার পূর্ব স্ত্রীর সাথেও খারাপ আচরণ করতো।এও জানতে পারি যে তার সন্তান ছিল। তার নিকটাত্মীয় আমাকে শ্বশুর বাড়ি যেতে বারণ করে এই বলে যে ওরা ভালো না। এমতাবস্থায় আমি আমার পূর্ব পরিচিত একজন ছেলের বাসায় গিয়ে উঠি। সেখানে গিয়ে কাজী অফিস থেকে রেজিস্ট্রার টার এর মাধ্যমে তাকে তালাক নোটিশ পাঠায় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে।তাকে তালাক নোটিশ পাঠানোর পর তাকে জানানো হয় যে তাকে তালাক নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তারপর সেই ছেলের সাথে নতুন করে কাজী ও মসজিদের ইমাম এর মাধ্যমে বিয়ে করি। বিয়ের তিন বছর পর যখন ইসলামের হুকুম আহকাম মানা শুরু করলাম,তখন জানতে পারলাম যে, ওলি ছাড়া বিয়ে বাতিল। তাই তখন আমরা আমাদের অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নতুন করে ইমামের মাধ্যমে বিয়ে করি। এখন আজ পাঁচ বছর পর আবার নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি,যে তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর,। তাই আমরা সন্দিহান যে আমার তালাকটা কি শুদ্ধ হয়েছে কিনা আর না হলে করনীয় কি।

অতপর আমার পূর্বের স্বামীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলে এতদিনের কথা আমি ভুলে গেছি। তিনি এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চায় না।তিনি বিয়ে করে সংসার করছেন। কাবিননামার আঠারো নাম্বার পয়েন্ট সম্পর্কে কাজীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, বিয়ের সময় ছেলে কাবিননামা পড়ে স্বাক্ষর করেছে।

আমার কাবিননামা ১৮ নম্বর পয়েন্টের ছবি নিম্নে দেওয়া হলঃ

সেখানে লেখা আছে, মুসলিম পারিবারিক আইন ক্ষমতা বলে
দয়া করে আমাকে শরীয়াহ সমাধান জানিয়ে মানসিক প্রশান্তি প্রদানে সহায়তা করবেন।আসলে আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55291/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনএক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললোহে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেনরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেনঅতঃপর বললেনহে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যেসে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধতালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতিনটি বিষয় এমন যেগুলির যথার্থ তো যথার্থই এমনকি সেগুলোর কৌতুকের ব্যবহারও যথার্থ: বিবাহতালাকরাজআত। - ইবনু মাজাহ ২০৩৯তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮৫ ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেনএই হাদীসটি হাসান-গারীব।

 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবেযদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে। এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোকবা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

 

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/12329/

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। তবে যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে স্ত্রী সে তার নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে। এভাবে বললে (আমি আমার নিজের উপর তালাক দিলাম) তালাক হবে। অন্যথায় স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে যে, ‘আমি তোমাকে তালাক দিলাম’। তাহলে এতে কোনো তালাক পতিত হয় না।

 

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তালাক হয়েছে কি না জানতে হলে বিবাহের কাবিননামা, ডিভোর্সড পেপার দেখার প্রয়োজন। কারণআপনি কোন ক্ষমতা বলে তালাক দিয়েছেনআদৌ আপনাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিলো কি নাক্ষমতা দেওয়া হয়ে থাকলে কয় তালাকের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিলোডিভোর্সড পেপারে কি শব্দে তালাক লেখা ছিলো? ইত্যাদি বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় বিস্তারিত উত্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিয়ের কাবিননামাতালাকনামা নিয়ে নিকটস্ত কোনো নির্ভরযোগ্য ইফতা বিভাগে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি 
প্রিয় মুফতি সাহেব
উলামায়ে পঞ্চায়েতের কার্যপ্রনালি কি রকম হবে তালাকের ক্ষেএে একটু জানালে উপকৃত হতাম।
by (63,560 points)
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
বাংলাদেশে বাস্তবেই উলামায়ে পঞ্চায়েত আছে কি না? থাকলে কারা তাদের সদস্য? বাস্তবেই তারা আলেম কি না? ইত্যাদি বিষয় জানার প্রয়োজন৷ অন্যথায় এব্যাপারে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়৷

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...