আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
442 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)

১) আমাদের ভার্সিটির ফিজিক্স ক্লাসের অফিশিয়াল মেসেঞ্জার গ্রুপে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম কেউ গ্রুপ স্টাডি করতে আগ্রহী কিনা। একজন মেয়ে রিপ্লাই দিয়েছিলো। আমি আসলে নিজে পড়া বুঝতে চেয়েছিলাম। পরে ওকে আমি কিছু বুঝিয়েছিলাম, ও আমাকে কিছু বুঝিয়েছিলো। আমি ওর দিকে তাকাইও নেই। আর স্টাডি করেছিলাম লাইব্রেরিতে। ওখানে আমরা একা ছিলাম না। এক্ষেত্রে কী আমার গুনাহ হবে?
২) একসাথে ইংরেজী ক্লাস করি এমন একজন মেয়ে আমাকে ফেইসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠায়। আমি অ্যাক্সেপ্ট করি। ও মেসেজ এ বলে যে, আমি যেনো ওকে পড়ায় হেল্প করি। তারপর আমি ওকে পড়াই অনলাইনে। পড়ার পাশাপাশি ক্যারিয়ার সম্পর্কিত, টেকনিক্যাল ব্যাপারে, ভবিশষ্যত পরিকল্পনার ব্যাপারেও কথা হয় মেসেজে। যেমন, ভবিষ্যতে ও বিসিএস দিতে চায়, এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে চায়। কী পড়তে হবে। ওর ল্যাপটপে একটা সফটওয়্যার ইন্সটলের চেষ্টা করেছিলাম। তাছাড়া ওর ইচ্ছা প্রকাশ করে যে, এতীম বাচ্চা অ্যাডপ্ট করতে চায় ভবিষ্যতে, মানে সমাজ সেবা। আমাকে ওর জন্য দু'আ করতে বলে। একদিন নামাজের কাপড়ে ওর চেহারার ছবি পাঠায়। বলে যে নামাজ পড়া শুরু করেছে (আগে এক সময় পড়তো) আমি বলি মা শা আল্লাহ অনেক ভালো কিন্তু মেয়েদের উচিত না ছেলেদেরকে চেহারা দেখানো। আর ছেলেদেরও উচিত না তা দেখা। ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন আমার করনীয় কী? আমি যোগাযোগ কম করারই চেষ্টা করি। ও কোনো কারনে মেসেজ দিলে সেটার রিপ্লাই দেই। এখানে কী কী শর্ত আছে?
৩)  আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা IEEE। আমাদের ভার্সিটিতে এর ব্রাঞ্চ এর চেয়ার পার্সন একজন আপু। তাছাড়া উনি আমাদের Student Affairs Program এর একজন মেন্টর। ওনাকে বিভিন্ন জিনিস জানার জন্য মেসেজে কথা বলি। যেমন কোনো ইভেন্ট সম্পর্কে জানার জন্য, IEEE তে রেজিস্টার করার কিছু কারণে, কোনো সফটওয়ারের সমস্যার কারনে।
৪) আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে অনেকজন গইরে মাহরাম আত্মীয় আছেন। আমি কোনো খারাপ পোস্ট করিনা। 

এগুলোর মধ্যে সবকিছুরই কোম বেশি প্রয়োজন আছে। সুতরাং, এগুলো নাজায়েজ হওয়ার কোনো কারন আছে কি?


 ৫) জয়েন্ট ফ্যামিলিতে কিভাবে থাকা সম্ভব? অর্থাৎ যেখানে গইরে মাহরামরা থাকবে। হাদীস অনুযায়ীতো স্বামী স্ত্রী আর ১০ বছরের নিচে শিশু ব্যাতীত কেউ এক বিছানায় শুতে পারবে না। নারীরা কি সারাদিন পর্দা করে থাকবে? সেক্ষেত্রে তা কেমন হবে? মাথায় ওড়না দিলেই হবে নাকি বোরখা এবং নিকাব লাগবে?!

৬) কিছু হুজুর বলেন যে, শুধুমাত্র প্রয়োজনে গইরে মাহরামদের সাথে কথা বলা যাবে। এর জন্য সহীহ কোনো হাদীস আছে? তাদের মতে ভিসার জন্য মহিলাদের সাথে কথা বলতে হয়, ওটা প্রয়োজন। কিন্তু ফেইসবুকে ফ্রেন্ডলিস্টে রাখলে গুনাহ। এর কোনো যৌক্তিকতা আছে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

উক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিস্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, ফেইসবুক,মেসেঞ্জার,ইমো ইত্যাদিতে প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়।

দ্বীনী অথবা প্রয়োজনীয় কোন বিষয় থাকলে কম কথায় শেষ করে নিবে। 
(শর্ত হলো ফিতনাহ এর আশংকা মুক্ত থাকা।)
অযথা কথা বলা হারাম।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রাধান্য পাওয়া মত অনুসারে মেয়েদের কন্ঠও যেহেতু পর্দার অন্তর্ভুক্ত, বিধায় প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার গুনাহ হবে।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে অনেক অপ্রয়োজনীয় কথা আপনারা বলে ফেলেছেন।
ছবি দেখেছেন,সবই গুনাহ হয়েছে।
,
বিশেষ প্রয়োজনে ফিতনাহ এর আশংকা না থাকার শর্তে শুধুমাত্র পড়া বুঝিয়ে দেয়া ব্যাতিত অন্য কোনো কথা বলা জায়েজ হবেনা।
তাও শুধু মাত্র মেসেজে।
কল দিয়েও নয়।

(০৩)
হ্যাঁ বিশেষ প্রয়োজনে এভাবে মেসেজ করে জেনে নিতে পারবেন।
শর্ত হলো ফিতনাহ এর আশংকা মুক্ত থাকা।

(০৪)
বিনা প্রয়োজনে এভাবে গায়রে মাহরাম মহিলাদের ফ্রেন্ড রাখাকে শরীয়ত সমর্থন করেনা।

(০৫)
যখনই গায়রে মাহরাম কাহারো সামনে যাবে,তখনই চেহারা ঢাকতে হবে।
যেকোনো কাপড় দিয়ে হিজাব বানিয়ে নিলে সবচেয়ে ভালো হবে।

প্রয়োজনে কাহারো সাথে কথা বলতে হলে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলতে হবে।

(০৬)
বিনা প্রয়োজনে ফ্রেন্ড লিস্টে রাখা অবশ্যই গুনাহ।
কেননা এখানে প্রয়োজন নেই।
আর প্রয়োজনে পর্দার আড়ালে থেকে মহিলাদের কথা বলা যাবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (13 points)
ঘরে কোনো গইরে মাহরামের সাম্নে পরে গেলে হঠাত করে কোনো মহিলা কী দিয়ে চেহারা ঢাকতে পারে? বোরখার সাতথে যেই নিকাব থাকে সেটা? অন্য কোনো কাপড়তো ককখনো এমন দেখিনি আমি সাধারণত।
by (565,890 points)
এমন মুহুর্তে হিজাব পড়ে থাকতে হবে।
যারা পূর্ণ পর্দা করেন,তাদের থেকে আপনি হিজাবের বিষয় জেনে নিলে ভালো হবে।
নামাজের সময় সাধারণত অনেকে এটি পড়ে থাকে।
by (13 points)
নামাজে যেটা পরে সেটাতেতো মুখ ঢাকেনা।
by (565,890 points)
+1
মুখও ঢাকা যায়,এমন সিস্টেমে বানিয়ে নিতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...