ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://www.ifatwa.info/793 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
মহাগন্ত্র আল-কোরআন কে বিনা অজুতে স্পর্শ
করা নাজায়েয। এ সম্পর্কে কোরআনে কারীমের যে আয়াত দ্বারা সাধারণত দলীল পেশ করা হয়ে
থাকে,সেই আয়াত হল
নিম্নরূপ-
ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻘُﺮْﺁﻥٌ ﻛَﺮِﻳﻢٌ
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍ ﻣَّﻜْﻨُﻮﻥٍ
যা আছে এক গোপন কিতাবে,
ﻟَّﺎ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
ﺗَﻨﺰِﻳﻞٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। - সূরা ওয়াক্বেয়া
এই আয়াত সমূহের ব্যাখ্যা সম্ভবত শরীয়তে
ইসলামীর জটিল-কঠিন মাস'আলা সমূহের একটি।
আল্লাহর বাণী- “যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।” দ্বারা আমাদের সামনে বিদ্যমান
কোরআনে কারীম উদ্দেশ্য কি না? এ সম্পর্কে অনেক অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। তবে এই সমূহ মতপার্থক্যর মধ্যে এটাই
বিশুদ্ধ যে,অত্র আয়াতে ঐ
কোরআন-ই উদ্দেশ্য যা আমাদের সামনে
বিদ্যমান। সুতরাং আয়াতের অর্থ হবে, 'তোমরা অপবিত্র অবস্থায় তোমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআন-কে
স্পর্শ করবে না।'
আমাদের সহসাই যে প্রশ্নটা জাগে, তাহলে গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা স্পর্শ
করা যাবে কি? সে প্রশ্নের
উত্তরে বলা যায় যে,
একদল উলামায়ে কেরাম বলেন, অপবিত্র ব্যক্তি কোরআনকে স্পর্শ করতে
পারবে না। চায় গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা হোক না কেন?ইহা মুহাম্মদ ইবনে আলী রাহ,আ'তা রাহ,তাউস রাহ,সালিম রাহ,ক্বাসিম রাহ,আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ রাহ,ইবরাহিম রাহ,সুফইয়ান রাহ,ইমাম মালিক রাহ,শাফেয়ী রাহ মহোদয়গণের মত ও মাযহাব।
(তাফসীরে বাসিত-২১/২৬১)
অন্য একদল উলামায়ে কেরামের মতে গিলাফ বা
কিছুর আবরণ দ্বারা কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে। ইহা ইমাম আবু হানিফা রাহ সহ আরো কিছু
ফুকাহায়ে কেরামের মাযহাব।
https://ifatwa.info/39071/?show=39071#q39071 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি
না?এ সম্পর্কে
উলামাদের মধ্যে মতবেদ রয়েছে। জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,
হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত মহিলাদের
জন্য হারাম, যতক্ষণ না তারা
পবিত্র হবে। তবে দু'আ যিকিরের নিয়তে কুরআনের আয়াত পড়া যাবে।
তেলাওয়াতের নিয়তে পড়া যাবে না। যেমন,বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না
ইলাইহি রাজিউন।রাব্বানা আ'তিনা ফিদ-দুনিয়া
ওয়াল আখিরাহ। এ জাতীয় কুরআনের আরো অন্যান্য আয়াত।
তারা দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেন, হায়েয অবস্থায় কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে না।
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عمر رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : " لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئاً
من القرآن
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,হায়েযা এবং জুনবী ব্যক্তি কুরআন থেকে
কিছুই পড়তে পারবে না। (সুনানু তিরমিযি-১৩১) বিস্তারিত জানুন-৩৮৯
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. হাযেজ অবস্থায় মুখস্থ করা সূরা
গুলোকেও পড়া যাবে না। দেখে দেখেও করা যাবে না। আবার মুখস্থ থেকেও তেলাওয়াত করা
যাবে না। তবে হ্যাঁ, ভেঙ্গে ভেঙ্গে
পড়া যাবে । যেমন, আলহামদু, তারপর লিল্লাহি,তারপর রাব্বিল,তারপর আ'লামিন, এভাবে পড়তে পারবেন। অর্থ পড়তে পারবেন। চায় পুরোই হোক না কেন, এতে কোনো সমস্যা নেই।
২. আপনি উক্ত হালকা না ছেড়ে তাদের কাছে
আপনার পরিচয়টা তুলে ধরবেন যে, আপনি একজন হানাফী। অত:পর পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে পড়া দেওয়ার সময় ভেঙ্গে ভেঙ্গে
পড়া দিবেন। তেলাওয়াত করে নয়।