আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
195 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (66 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

১। একজন ব্যক্তি যখন আল্লাহর জন্য করা ইবাদতে মগ্ন থাকেন (যেমন সালাত, জিকির, কুরআন তিলাওয়াত, ইসলামিক লেকচার শুনা, ইসলামি বই পড়া ইত্যাদি) তখন দেখা যায় এসবে মগ্নতার কারণে বান্দার হক ঠিকমত আদায় করতে পারেন না। যেমন কোন বৃদ্ধ বা অসুস্থ মানুষ বোঝা টেনে নিয়ে আসছেন তাকে সাহায্য করা বা রোগীর যত্ন করা বা মানুষের সাথে সুন্দর করে সামাজিকতা বজায় রেখে মেলামেশা করা, আত্মীয় স্বজনের খোঁজ খবর নেওয়া, মানুষের কষ্ট লাঘবে কাজ করা এসবের দিকে মন দিতে পারেন না। আবার যখন বান্দার হক আদায় করতে যান তখন আল্লাহর হক আদায়ে কমতি পড়ে যায়, সালাত জিকির কুরআনে মন বসে না। মোটকথা তিনি দুই হকের মধ্যে ব্যালেন্স বা সমন্বয় করতে পারছেন না। 

তিনি কোন দিকে বেশি মনোযোগ দিবেন? হাক্কুল্লাহ ও হাক্কুল ইবাদ দুইই ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের হক ঠিকমত আদায় না করলে আল্লাহ মাফ করবেন না বলেই জানি যদি না সেই মানুষটা মাফ না করে। অন্যদিকে আল্লাহ নিজের হক মাফ করে দিলেও দিতে পারেন। এক্ষেত্রে এই ব্যক্তি কি আল্লাহর হক কোনমতে আদায় করে বেশিরভাগ সময় মানুষের হক আদায়ে ব্যস্ত থাকবে?

২। ঘটনাটা গত রমজান মাসের। লাইলাতুল কদরের সময় (লাস্ট ১০ দিনের কোন এক সময়) আমাদের বাসায় গ্রাম থেকে আমার এক চাচা আসেন। ২/১ দিন পর হঠাৎ করে জানান যে তিনি আবার গ্রামে ফিরে যাবেন। এমতাবস্থায় ইফতারের আগে আগে আমার আম্মু আমাকে জানান যে যেহেতু চাচা বাড়িতে চলেই যাচ্ছেন তো ইফতারের পর গিয়ে মার্কেট থেকে চাচী ও চাচাতো বোনের জন্য কিছু কাপড় কিনে দেবেন। এদিকে আমি লাইলাতুল কদরের ফজিলত মিস করতে চাচ্ছিলাম না। এই কথা আম্মুকে বুঝিয়ে বললাম। শুনে তিনি অত্যন্ত রেগে গিয়ে চিৎকার করতে থাকলেন। বললেন যে থাক সারাদিন ধর্মকর্ম আর দুয়া কালাম নিয়ে পড়ে। ফ্যামিলির প্রতি কোন দায় দায়িত্ব বোধ নাই (সত্যি কথা আমি আসলে হাক্কুল্লাহ ও হাক্কুল ইবাদের সমন্বয় করতে পারি না, আগেই বললাম। কারণ দেখা গেছে যদি মানুষের হক আদায় করতে যাই তবে আল্লাহর হক আদায় করতে পারি না, আর উলটোটাও সত্যি।) কোনদিন মায়ের কাজে একটু সাহায্য করেছ (আর আমি অনেক চেষ্টা করেও ঘরের কাজে সেরকম সাহায্য করে উঠতে পারি না, শরীর প্রায়ই ক্লান্ত লাগে। ) ?  

আম্মু তো এটাও বলে বসলেন যে সবসময় দুয়া কর (হ্যাঁ আমি নিজের ও তাদের হিদায়াতের জন্যও দুয়া করি), তোমার দুয়া কবুল হবে না এই আমি বলে রাখলাম। শেষে আমি বললাম যে ইশার ওয়াক্তের আগে ফেরত আসলে যেতে পারি। বাট এর কোন গ্যারান্টি দিতে পারলেন না। শেষে তিনি একাই শপিংয়ে গেলেন এবং বোঝা বহন করে ইশার আজানের মুহূর্তে ঘরে ঢুকলেন। লাইলাতুল কদরের রাতে তো ওলামায়ে কেরামগণ বলেন যে ইবাদতে মশগুল থাকতে, শপিংয়ে না যেতে। এটা সেরকম বিলাসিতার শপিং ছিল না, ছিল দরিদ্র আত্মীয় স্বজনের জন্য খরচ করা। আমি অবশ্য এটা ভেবে বলেছিলাম কোন খাবার বা অন্য কিছু দিয়ে দিতে তাও শপিংয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না লাইলাতুল কদরকে মাথায় রেখে। এক্ষেত্রে আমার কি আত্মীয়ের হক নষ্টের গুনাহ হবে? আর আম্মু যে অভিশাপ দিয়েছেন দুয়া কবুল হবে না কখনো এটাও কি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? প্লিজ শায়খ অনেক বেশি দুয়া করবেন আমাদের জন্য। কোন অভিশাপ দিবেন না কেউ প্লিজ আমাকে বা আম্মুকে। 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আপনি ফরজ,ওয়াজিব আমল গুলো পূর্ণ ভাবে পালন করবেন।
নফলের ক্ষেত্রে বান্দার হক কেন্দ্রীক আমল প্রয়োজনীয় হলে প্রাধান্য দিবেন।

ফরজ,ওয়াজিব আমলের পর বান্দার হক জরুরি হলে সেটি রাখবেন।
এভাবেই হুকুকুল্লাহ ও হুকুকুল ইবাদ মেইনটেইন করে চলবেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি ইশার আগেই কিছু ক্রয় করে দিতে পারতেন।
ইশার পর থেকে প্রয়োজনে ইবাদতে লিপ্ত থাকতেন,তবুও মায়ের আদেশ পালন করা উচিত ছিলো। 
,
আপনি সর্বদা চেষ্টা করবেন,যাতে মা বদ দুয়া না করে।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বান্দার হক নষ্ট হয়নি।

আপনার মায়ের উক্ত অভিশাপের দরুন কোনো সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
প্রশ্নে তো বললাম আম্মু গ্যারান্টি দিতে পারছিলেন না যে ইশার আগে ফেরত আসতে পারবেন না। আমি যেহেতু আগে থেকে জানতাম না কখন ফেরত আসবে এজন্য যাই নি। 
by (565,890 points)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বান্দার হক নষ্ট হয়নি।

আপনার মায়ের উক্ত অভিশাপের দরুন কোনো সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 227 views
...