ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
ইবনে আবেদীন শামী রাহ কাযা নামায পড়ার নিয়ম এভাবে দিয়েছেন যে,
উমুরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্তের কতটা নামায কাযা হয়েছে তা নির্ণয় করবে।যদি সেটা নির্ণয় করা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন ওয়াক্তের কতটি নামায কাযা হয়েছে সেটা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর ধারাবাহিকভাবে একে একে সবগুলোকে আদায় করে নিবে।
যেমন, ফজরের নামায সর্বমোট ১০০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের নামায বলার দ্বারা তার যিম্মায় যতগুলো নামায বাকি ছিলো, সেগুলোর প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযেরই হচ্ছে।ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে।(রদ্দুল মুহতার-২/৫৩৮)
এ ধারাবাহিকতায় বাকি নামায সমূহের ক্বাযা আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশা এবং সাথে বিতিরের নামাযকে ও এভাবেই আদায় করে নিবে।বিতিরের নামাযের ক্বাযা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/629
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
ليس للقضاء وقت معين بل جميع أوقات العمر وقت له
কা'যা নামায পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওয়াক্ত নেই।বরং জীবনের সকল মূহুর্তই কা'যা নামাযের ওয়াক্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১২১)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার জীবনে যত নামায কাযা হয়েছে, অনুমান করে সবগুলো নামায কাযা করে নিতে হবে।
(২)
ফজরের নামায পড়তে পড়তে সূর্যোদয় হয়ে গেলে, নামায ফাসিদ।তবে মাগরিবের নামায পড়তে পড়তে সূর্যাস্ত হয়ে গেলে নামায ফাসিদ হবে না। বা অন্যান্য ওয়াক্তের নামায পড়তে পড়তে ভিন্ন ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেলে কোনো সমস্যা হবে না।
(৩)
সলাত পড়তে পড়তে যদি সেই ওয়াক্তের বা পরবর্তী ওয়াক্তের আজান দেওয়া শুরু হয় তাতে কোনো সমস্যা নেই। নামায হবে।
(৪)
বিতিরের সলাত না পড়লে সেটার কাযা আদায় করে করতে হয়। বিতরের সলাত ৩ রাকাত পড়া যাবে।
(৫)
নারী যদি পুরুষের মতো কনুই উঠিয়ে কিন্তু জড়োসড়ো হয়ে সিজদাহ করে, তাহলে তা সুন্নতের খেলাপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
(৬)
একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত প্যারালাইজড মানুষ যিনি সাপোর্ট ছাড়া দাঁড়াতে অক্ষম, মাটিতে বসতে অক্ষম, হাঁটতে ও অক্ষম, বিভিন্ন জিনিসের সাহায্য নিয়ে একটু কোনোরকম চলাফেরা করতে পারে এমন মানুষের জন্য পবিত্রতা অর্জন করতে বারবার অযু করা, নড়াচড়া করা কষ্টকর,ওযু বারবার ভেঙে যায়,আর অনেক দেরীও হয়,সময় লাগে যাতে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আশঙ্কা করলে তিনি যদি তায়াম্মুম করে পবিত্রতা অর্জন করে ইশারায় সলাত পড়েন, কুরআন পড়েন, দরসে উপস্থিত হন, তাহলে এগুলো কবুল হবে।