আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
574 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
edited by
হুজুর আমি জানি যে তালাকের মজলিশে স্ত্রী তালাক চাইলে স্বামী যদি তখন কেনায়া শব্দ বলে তাহলে তালাক হয়ে যায়। আর তালাকের মজলিস হওয়ার শর্ত স্বামী স্ত্রী এক জায়গায় সামনা সামনি থাকতে হবে।

মোবাইলে তালাকের মজলিস হয়না।

১.সুতরাং মোবাইলে ঝগড়ার সময় স্ত্রী যদি বলে আমাকে ছেড়ে দাও। আর স্বামী যদি তাৎক্ষণাৎ বলে ওই তুই যা তালাকের নিয়ত ছাড়া বলে কিংবা কোনো কেনায়া শব্দ তালাকের নিয়ত ছাড়া বলে তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে? মোবাইলেতো তালাকের মজলিস হয়না।ঠিক এমন হয়েছে কিনা বা স্বামী পর পরই যাও বলেছে কিনা মনে নেই তীব্র সন্দেহ থেকে জানার জন্য জিজ্ঞাসা করা।

২. স্ত্রী যদি সামনা সামনি বলে আমাকে ছেড়ে দাও আমার স্বামী যদি বলে তোমাকে ছেড়েই দিবো তুমি যাও তালাকের নিয়ত ছাড়া । আগে ছেড়ে দিবো বলার পরে তুমি যাও বললে কি তালাক হবে?এমন ঘটেছে কিনা মনে নেই সন্দেহ থেকে জিজ্ঞেস করা।

৩, একদিন স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামীর সাথে বিছানায় না থেকে ফ্লোর এ ঘুমিয়েছে। স্বামী তাকে বিছানায় নেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু স্ত্রী যায়নি। এই ঘটনা কেনো ঘটেছিলো কিছুই মনে নেই। কোনো তালাক জাতীয় শব্দ বা কেনায়া শব্দ হয়েছে কিনা তাও মনে নেই। স্ত্রী রাগ করে আলাদা ঘুমালে কি তালাক হয়ে যায়?

৪. মহিলা মানুষের ককথার মাধ্যমে কি ঈলা হয়?

৫. মহিলা যদি বলে ওই কাজটা না করা পর্যন্ত তোমাকে আমার কাছে আসতে দিবোনা মানে সহবাস করতে দিবোনা আল্লাহর কসম বলেছে কিনা মনে নেই স্বামীও জোর করেনি, স্বামী কোনোদিনই এসব ব্যাপারে জোর করেনা মহিলা তখন প্রেগনেন্ট ছিলো তাই আরো জোর করেনি এটা কি ঈলা? মহিলা পরে স্বামী ওই কাজ করার পর বা আগে তার স্বামীকে কাছে যেতে দিয়েছিলো। কিন্তু কোনো তালাকের কথা বা তালাকের নিয়তে মহিলা এমন কথা বলেনি।

৬. মোবাইলে স্বামী তালাকের নিয়ত ছাড়া কেনেয়া বাক্য বল্লে কি তালাক হবে?

৭.তালাকের ব্যাপারে আগের কথা মনে করতে না পারলে কি গুনাহগার হবে?

৮.একদিন মোবাইলে ঝগড়া মিটে যাওয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে হেসেই বলে আরেকদিন ঝগড়া করলে একেবারে বিদায়। তালাকের কোনো নিয়ত ছিলোনা। এটা কি তালাক হবে?

৯. স্বামী স্ত্রী দূরে থাকার কারণে দীর্ঘদিন তাঁদের মধ্যে স্বামী স্ত্রী সুলভ কোনো কথা হয়নি  তারা কথা বলতো কিন্তু স্বামী স্ত্রী সুলভ কথা না। তো একদন স্ত্রী রাগ করে বলসে তুমিতো আমার হক নষ্ট করসো তোমার কাছেতো এগুলো আমি পাওনা ছিলাম। আমি আমার হকয়ে দাবি ছাড়বোনা। স্বামীও রাগ করে বলসে আমি এমনি মন চাইলে থাক না চাইলে যা গা। কোনোদিন তালাকের নিয়তে বলেনি। এভাবে স্বামী উত্তর দিসিলো কিনা মনেও নাই সন্দেহ থেকে জানতে চাচ্ছি।

মারাত্মক ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত মহিলা। বার বার তালাকের বিষয় গুলো নিয়ে মনের মধ্যে ওয়াসওয়াসা আসে। যেসব ঘটনা ঘটেনি সেগুলো ও মনে হয় এসব কি হইসিলো। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আগের বিষয় গুলো মনে করার চেষ্টা করে।এগুলো সে মনে করতে চায়না তাও মনে বার বার এসবই আসে এই ক্ষেত্রে কি করবে সে?

ইমদাদুল হক হুজুরে সাথে আমার অনেক বার কথা হয়েছে  কিন্তু আমি এতো বেশি ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত যে আমি বার বার ভুলে ভুলে যাচ্ছি যে সবকিছু জিজ্ঞেস করসি কিনা। তাই লিখে পাঠাইসি। যেনো ভুলে গেলেও আবার দেখতে পারি। আর যেনো হুজুরকে বিরক্ত করতে না হয়। আর প্রশ্ন করবোনা হুজুর।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


স্ত্রী যদি মোবাইলে স্বামী থেকে স্পষ্ট বাক্যে  তালাক চায়,আর স্বামী যদি বলে যে তোমার বিষয় তোমার হাতে বা তুমি ইদ্দত গণণা করো, তুমি হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি বলে। তাহলে নিয়ত ছাড়াই তালাক হয়ে যাবে।
এটিকে তালাকের মজলিস বা মুযাকারায়ে তালাক বলে।

(০১)
তালাক খুবই মারাত্মক একটি বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
https://ifatwa.info/1049/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

 "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া) তে বর্ণিত রয়েছে,

 لَا يَقَعُ بِهَا الطَّلَاقُ إلَّا بِالنِّيَّةِ أَوْ بِدَلَالَةِ حَالٍ كَذَا فِي الْجَوْهَرَةِ النَّيِّرَةِ. ثُمَّ الْكِنَايَاتُ ثَلَاثَةُ أَقْسَامٍ (مَا يَصْلُحُ جَوَابًا لَا غَيْرُ) أَمْرُك بِيَدِك، اخْتَارِي، اعْتَدِّي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا لَا غَيْرُ) اُخْرُجِي اذْهَبِي اُعْزُبِي قُومِي تَقَنَّعِي اسْتَتِرِي تَخَمَّرِي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَشَتْمًا) خَلِيَّةٌ بَرِيَّةٌ بَتَّةٌ بَتْلَةٌ بَائِنٌ حَرَامٌ


কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা নিয়ত ব্যতীত বা তালাকের ব্যাপারে ইশরা ইঙ্গিত ব্যতীত তালাক পতিত হয় না।কেনায়া তালাক তিন প্রকার যথাঃ-


(১)

যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক ব্যতীত ভিন্ন কিছু বুঝা যায় না।যেমন,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি পছন্দ করো,তুমি গণনা করো।


(২) যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক হওয়া এবং না হওয়া উভয়টি বুঝায়।যেমন,তুমি বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,তুমি নেকাব পরিধান করো,তুমি পর্দার আড়ালে চলে যাও,তুমি উড়না পরিধান করো।


(৩) যা তালাক এবং গালির উভয়টির সম্ভাবনা রাখে। হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি।


পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট তিন প্রকারঃ যথাঃ- 

وَالْأَحْوَالُ ثَلَاثَةٌ (حَالَةُ) الرِّضَا (وَحَالَةُ) مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بِأَنْ تَسْأَلَ هِيَ طَلَاقَهَا أَوْ غَيْرُهَا يَسْأَلُ طَلَاقَهَا (وَحَالَةُ) الْغَضَبِ 

পরিবেশ ও পরিস্থিতি তিন প্রকার।(১) হালতে রেযা- খুশির হালত(২) তালাকের শব্দাবলী উচ্ছারণের হালত(৩) রাগান্বিত অবস্থা।


فَفِي حَالَةِ الرِّضَا لَا يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي الْأَلْفَاظِ كُلِّهَا إلَّا بِالنِّيَّةِ وَالْقَوْلُ قَوْلُ الزَّوْجِ فِي تَرْكِ النِّيَّةِ مَعَ الْيَمِينِ

(১) খুশির হালতে নিয়ত ব্যতীত কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হবে না।নিয়ত না থাকার বিষয়ে স্বামীর কথাই কসমের সাথে গ্রহণযোগ্য। 


وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي

(২)তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)



প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাক হবেনা।

(০৩)
এতে তালাক হবেনা।

(০৪)
না,তার কথায় ঈলা হবেনা।

(০৫)
এতে কোনো তালাক হবেনা।
ঈলাও হবেনা।

(০৬)
না,তালাক হবেনা।

(০৭)
এতে গুনাহ হবেনা।

(০৮)
এতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৯)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা।

আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আগের মতোই বহাল রয়েছে। 
আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...