আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (75 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ,

১.ঘোড়া খাওয়ার হুকুম কী?

২.ঘোড়ার দুধ খাওয়া যাবে?

৩.ঘোড়া পানিতে মুখ দিলে সে পানি দিয়ে অজু করা যাবে?

৩.উস্তাদ, যারা গরু ছাগল পালন করেন, তাদের তো সব সময় পেশাব গোবর লাগে শরীরে, তাদের জন্য শরীয়তে কোনো ছাড় আছে? নামাজ পড়বে কিভাবে?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
ঘোড়ার গোশতের ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।

এক হাদিসে এসেছে,
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ الله ِقَالَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ وَرَخَّصَ فِي لُحُومِ الْخَيْلِ.

 হজরত জাবের (রা.) বলেন, ‘খায়বারের যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ (সা.) গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন এবং ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫২০)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫১১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০১০)

وَعَن خالدِ بْنِ الْوَلِيدِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ أَكْلِ لُحُومِ الْخَيْلِ والبِغالِ والحميرِ.
খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। 
(আবূ দাঊদ ৩৭৯০, নাসায়ী ৪৩৩২, ইবনু মাজাহ ৩১৯৮।)

عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ قَالَتْ أَكَلْنَا لَحْمَ فَرَسٍ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْمَدِينَةِ 
আসমা’ বিনতে আবী বাকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে মদীনায় আমরা ঘোড়ার গোশত খেয়েছি।
বুখারী, সাইদ ৫৫১০; মুসলিম, সাইদ ১৯৪২,সুনানে দারেমি ২০৩০। আমরা এর পূর্ণ তাখরীজ দিয়েছি সহীহ ইবনু হিব্বান নং ৫২৭১ এবং মুসনাদুল হুমাইদী নং ৩২৪ তে।

হজরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।’ (নাসাঈ শরিফ : ৮/২০৬, আবু দাউদ : ২/৫৩১)। 

দুই রকমের হাদীসের কারনেই মূলত উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 

ফিকহশাস্ত্রের কিতাবে ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরূহ বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে ঘোড়া জিহাদের কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই ব্যাপক হারে খাওয়া শুরু করলে জিহাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে যদিও ব্যাপকভাবে ঘোড়ার ব্যবহার হয় না; কিন্তু তা একেবারে বন্ধও হয়ে যায়নি। প্রতিরক্ষা বিভাগগুলোতে ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় এবং নিয়মিত তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। সুতরাং জিহাদের কাজে ঘোড়ার ব্যবহার একেবারে বন্ধ হয়ে গেলেও তা খাওয়া উপরোক্ত হাদিসের কারণে মাকরূহ থাকবে। (আহকামুল কোরআন লিল জাসসাস : ৩/১৮৩, ১৮৪)

হাদিসশাস্ত্রের মূলনীতি হলো, যে বিষয়ের বৈধতা ও অবৈধতার ক্ষেত্রে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়, সে বিষয়ে বিধান হিসেবে অবৈধতার দিক গ্রহণ করা হয়। কেননা এটাই সতর্কতা। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ঘোড়া গোশত খাওয়া হারাম নয়,তবে যুদ্ধের বাহন হিসেবে তার গোশত খাওয়া মাকরুহ।

যুদ্ধের বাহন হিসেব কোনো এলাকায় ব্যবহার না হলেও সতর্কতা স্বরুপ না খাওয়াই ভালো। 
তবে প্রয়োজন বশত জবাই করা হলে তার গোশত খাওয়া যাবে।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
ঘোড়ার দুধ খাওয়া যাবে।

والخيل و عند هما والشافعي تحل قيل اِن أباحنفيه رجع عن حرمته قبل موته بثلاثة أيام و عليه الفتوي ولا باس بلبنها.
حصفکی، الدرالمختار، 6 : 305، دار الفکر بيروت
بأن حرمة الأ کل للاحترام من حيث اِنه يقع به أرهاب العد ولا للنجاسة فلا يوجب نجاسة السؤر کما في الادمي.
সারমর্মঃ-
,,,গোড়ার দুধ খাওয়ার ব্যাপারে কোনো সমস্যা নেই।
ঘোড়া যুদ্ধের বাহন হওয়ায় তাহা খাওয়ার নিষেধ,এর গোশতে কোনো নাপাকি নেই।
সুতরাং এর ঝুটা নাপাক নয় 
(আদ দুররুল মুখতার ৬/৩০৬)

(০৩)
সেই পানি দিয়ে অযু করা যাবে।

তবে সাধারণ পানি থাকলে সাধারণ পানি দিয়েই অযু করবেন।
,
(০৪)
শরীরে/কাপড়ে এক দিরহাম চেয়ে কম পেশাব পায়খানা লাগলে সেটি মাফ।
তবে এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি লাগলে তাহা মাফ হবেনা।
এমতাবস্থায় নামাজ আদায় করলে নামাজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...