আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
165 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (29 points)
আমি ছোটবেলা থেকে পানি তিন ঢোকে পান করতে হয় এবং প্রতি ঢোকের আগে-পরে বিসমিল্লাহ এবং আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয় বলে জেনে এসেছি। একজন বলেছে, এভাবে নয় বরং পানের শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং তিন ঢোক পান করার পর একেবারে শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে।
কোন পদ্ধতি সঠিক? যদি শুরুতে এবং শেষে একবার করে বিসমিল্লাহ এবং আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয়, তবে কি আমার এতদিনের আমল বিদআত হবে?

1 Answer

0 votes
by (57,240 points)
edited by
           بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আল্লাহর নেয়ামতের অভাব নেই। তিনি কত নেয়ামত ও অনুকম্পা দিয়েছে যে আমাদের জীবন সহজ ও স্বাভাবিক করেছেন, তার কোনো শেষ নেই। সারাজীবন শুকরিয়া আদায় করলেও তার নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় হবে না।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরাই কি তা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছে করলে— তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? (সুরা ওয়াক্বিয়া, আয়াত : ৬৮-৭০)।

অন্য সবকিছুর মতো পানিও আল্লাহ তাআলার অপার এক নিয়ামত। পানি মানুষের জীবন বাঁচিয়ে রাখে। আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেছেন, ‘আর আমি প্রাণবান সবকিছু সৃষ্টি করলাম পানি থেকে— তবুও কি তারা ঈমান আনবে না? (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৩০)

শুধু বিশুদ্ধ, পরিমিত ও নিয়ম মেনে পানি পানে অনেক রোগের উপকার পাওয়া যায়। তবে অনেকেই সঠিকভাবে পানি পান করেন না বা জানেন না। পানি কীভাবে পান করতে হবে— এ ব্যাপারেও বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে; যা পালন করলে পানি পান করার পাশাপাশি বিরাট সওয়াবের মালিকও হওয়া যাবে। রাসুল ( সা.)- এর বাস্তব জীবনের এ আমলগুলো উঠে এসেছে হাদিসের বর্ণনায়।

পানি পান করার সুন্নতগুলো ঃ

এক. ডান হাতে পান করা। কেননা, শয়তান বাম হাত দিয়ে পান করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৭২)

দুই. বসে পান করা, দাঁড়িয়ে পান করা নিষেধ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৩) 

তিন. শুরুতে (বিসমিল্লাহ) পড়া এবং শেষে (আলহামদুলিল্লাহ) পড়া। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২/১০)

চার. তিন নিঃশ্বাসে পান করা, নিঃশ্বাস ফেলার সময় গ্লাস থেকে মুখ আলাদা করা। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৪)

পাঁচ. গ্লাসের ভাঙা অংশের দিক দিয়ে পান না করা। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২/১৬৭)

ছয়. জগ ইত্যাদি বড় পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান করবেন না। কেননা এতে বেশি পানি চলে আসার বা সাপ-বিচ্ছু থাকার আশঙ্কা থাকে। (বুখারি, হাদিস : ২/৮৪১; মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৩) 

সাত. পান করার পর অন্যজনকে দিতে হলে— প্রথমে ডান পাশের জনকে দেবেন। সেও তার ডান পাশের জনকে দেবেন, এভাবেই চলবে। পানীয়ের ক্ষেত্রে এটাই নিয়ম।  (বুখারি, হাদিস : ২/৮৪০; মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৪)

আট. অজু করার পর যে পাত্রে হাত দিয়ে পানি নেওয়া হয়, সে পাত্রের অবশিষ্ট পানি কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পান করা। এতে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি হতে আরোগ্য লাভ হয়। (বুখারি, হাদিস : ৫৬১৬)

নয়. পানীয় দ্রব্য পান করে কাউকে দিতে হলে ডান দিকের ব্যক্তিকে আগে দেওয়া এবং এই ধারাবাহিকতা অনুযায়ীই শেষ করা। (বুখারি, হাদিস : ৫৬১৯)

সাহল ইবনু সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) -এর কাছে একটি পেয়ালা আনা হল। তিনি তা হতে পান করলেন। তখন তার ডান দিকে ছিল একজন বয়ঃকনিষ্ঠ বালক আর বয়স্ক লোকেরা ছিলেন তার বাম দিকে। তিনি বললেন, হে বালক! তুমি কি আমাকে অবশিষ্ট (পানিটুকু) বয়স্কদের দেওয়ার অনুমতি দিবে? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার নিকট থেকে ফজিলত পাওয়ার ব্যাপারে আমি আমার চেয়ে অন্য কাউকে প্রাধান্য দিব না। অতঃপর তিনি তা তাকে দিলেন। (মুসলিম, হাদিস : ৩৬/১৭; ২৩৬৬, ২৪৫১; আহমাদ, হাদিস : ২২৮৮৭)
 প্রশ্নকারী প্রয় দ্বীনি ভাই/ বোন!
  প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ পড়া সুন্নাত। তবে প্রতিবার পড়লে যে গুনাহ হবে বিষয়টি তেমম নয়। অতিরিক্ত তাসবিহ পড়লে সমস্যা নেই। তবে আমাদের উচিত প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজির সুন্নাহ অনুসরণ করে চলা। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। 

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...