রিয়া ও ঈমান বিষয়ে

Question

ইমাম সাহেব প্রথম রাকায়াতে রুকুতে চলে গেছেন। এক ব্যাক্তি তখন নামাজে দাঁড়ালেন। আল্লাহু আকবার বলে হাত বেধে রুকুতে চলে গেলেন। হঠাৎ ঐ ব্যাক্তির মনে ওয়াসওয়াসা আসলো এবং মনে হচ্ছিল রুকুতে যাবার সময় ভুলে আল্লাহু আকবার বলেননি। নামাজ ভেংগে ফেলে পুনরায় নামাজ শুরু করার মনস্থির করলেন।

কিন্তু রুকু অবস্থায় তাৎক্ষণিক নামাজ ভাংগেন নাই এই লজ্জা করে যে পাশের মুক্তাদি তার এই ভুল দেখে ফেলবে এই আশংকা করে। তিনি অপেক্ষা করেন ঈমাম সাহেব রুকু থেকে দাঁড়াবার জন্য যাতে করে তখন নামাজ ভেঙে ফেললেও পাশের মুক্তাদি বিষয়টি টের না পান। পরবর্তীতে ইমাম সাহেব রুকু থেকে দাঁড়াবার পরে ঐ ব্যাক্তি নামায ভেংগে ফেলেন এবং পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে হাত বেধে জামায়াতে শরীক হন।

লোকলজ্জা করে রুকুর মত অবস্থায় কিছুক্ষণ থাকার ফলে রিয়া হয়েছে কি? এর ফলে ঈমান চলে গিয়েছে কি? বিবাহিত ব্যাক্তির ক্ষেত্রে বিবাহ বহাল রয়েছে কি?

Answer 1

জবাব

بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/14253/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

নামাজে তাকবিরে তাহরিমা বলা ফরজ।

অন্যান্য তাকবির বলা সুন্নাত।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مِفْتَاحُ الصَّلَاةِ الطُّهُورُ، وَتَحْرِيمُهَا التَّكْبِيرُ، وَتَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন। পবিত্রতা হল নামাযের চাবি। তাকবীরে তাহরীমা নামায বহির্ভূত বস্তুকে হারাম করে দেয়, আর সালাম তা হালাল করে দেয়। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৭৬, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৬১]

আরো জানুনঃ 

https://www.ifatwa.info/10259/

তাকবীরা তাহরীমাটা ফরজ। কারণ, এটিকে নামাযের প্রবেশের মূল বলা হয়েছে। তাই এটি না পড়লে নামায হবে না। বাকি তাকবীরগুলো সুন্নত। তাই কেউ যদি ভুলে নাও পড়ে, তাহলে তার নামায হয়ে যাবে।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّمَا الْإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا، وَإِذَا قَالَ: {وَلَا الضَّالِّينَ} [الفاتحة: 7] ، فَقُولُوا: آمِينَ، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا قَالَ: سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، فَقُولُوا: رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ،

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন। নিশ্চয় ইমাম নিযুক্ত করা হয়েছে তার অনুসরণ করার জন্য। সুতরাং যখন ইমাম তাকবীর বলে তখন তোমরা তাকবীর বল। আর যখন কিরাত পড়ে তখন চুপ থাকো। যখন ইমাম তিলাওয়াত করে “ওয়ালাদ্বল্লীন” তখন আমীন বলো। আর যখন ইমাম রুকু করে তখন তোমরাও রুকু কর। আর যখন ইমাম সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে তখন বল রাব্বানা লাকাল হামদ। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৮৮৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৪৬, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৯২১, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১২৪৫, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৭১৩৭]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির নামাজ এমনিতেই হয়ে যেতো,উক্ত রুকুর তাকবির না বলাতে নামাজের সমস্যা হতোনা।

এমতাবস্থায় প্রশ্নে উল্লেখিত যা যা সেই ব্যাক্তি করেছে,এর দরুন তার ঈমান চলে যাবেনা,তার বিবাহ নবায়ন করতে হবেনা।

এটিকে রিয়ার (যেটা ছোট শিরক) অন্তর্ভুক্তও বলা হবেনা।