আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (19 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।স্যার সব সময় ভয় হয় কোন ইমান ভেংগে গেল কিনা,,,এমনকি হাটতে বসতেও ঘরের কাজ করতেও।সব কথায়, ঘুম থেকে উঠলে বা ঘুম ঘুম ভাবে বা যখন কষ্ট লাগে যখন মানসিকভাবে দুর্বল লাগে তখন ওয়াসওয়াসা বেশি লাগে মনে হয়।

১/  ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত কোন ব্যক্তির কোন কথা শোনে বা কাজ দেখে যদি বুঝা না যায় যে সে কাজ বা কথা টা কুফর বা শিরকি নিয়তে করছে,,শোনতে বা দেখতে যদি সাধারন কথা বা কাজের মত লাগে,,তাহলে কি অই ব্যক্তির এই নিয়তের জন্য কি ইমান চলে যাবে?

২/আমি জানি অপচয় করা গোনাহ,বিধিবিধাব সব মানতে হবে।।মেনে না চললে গোনাহগার।কোন গোনাহের কাজ যেমন পানি ইউজ করার সময় অপচয় হলে, বা পর্দা মেন্টেইন না করলে তখন মনে অনিচ্ছায় ইচ্ছায় চলে আসে  "এটা গোনাহ আমি মানিনা ""অথচ আমি এই নিয়তে কাজ টা করতে চাইনা,তাও আমার নিয়ত নষ্ট হয়ে যায় কাজের মাঝে বা লাস্টে।। যদি গোনাহের কাজ টা করার সময় ইচ্ছাকৃত ৫/১০ সেকেন্ড এর জন্য এই "মানিনা"" নিয়ত চলে আসে তাহলে কি ইমান চলে যাবে?আমি পরক্ষনে মনকে আবার বুঝায় আমি মানি।আমাকে যদি কেউ প্রশ্ন ও করে আমি অবশ্যই বলব অপচয় করা গোনাহ,,বা  কোন বিধান কি রকম মেনে চলতে হবে।। কিন্তু যত প্রবলেম আমি নিজে করার সময় নিয়ত কাজের মাঝে বা শেষে নষ্ট হয়ে যায়।

৩/শুধুমাত্র কি কুফরি বাক্য মুখে উচ্চারন করলে ইমান ভেঙ্গে গেছে ধরব?

৪/সুস্থ  বা ওয়াশওয়াশায় অসুস্থ ব্যক্তির উভয়েত ক্ষেত্রে একি নিয়ম যে বুঝে শুনে কুফরি বাক্য উচ্চারন করলে ইমান চলে যাবে এমন?
৫/মুখে কুফরি বাক্য উচ্চারন না করলে তার ইমান চলে যাবেনা সে যতই কবিরাহ গোনাহের কাজ করুক অন্তরে যে নিয়তেইই করুক।।।ব্যাপার টা কি এমন?
৫/কেউ কবিরাহ গোনাহ( হারাম খাওয়া,পর্দা না করা) বা এমনে সাধারন কাজ করতেসে,কিন্তু তার নিয়তে কি আছে সেটা সে প্রকাশ করেনি।কেউ আস্ক করলে সে অবশ্যই স্বিকার করে যে এগুলা গোনাহের কাজ,সরে আসা উচিত।। প্রশ্ন হচ্ছে সে ব্যক্তির নিয়তে যদি ইচ্ছাকৃত কুফরি থাকে,তাহলে কি তার ইমান চলে   যাবে?নাকি সে ব্যক্তি জাস্ট তওবা করলেই হবে ইমান নবায়ন করতে হবেনা যেহেতু সে কাউকে প্রকাশ করেনি??

৬/ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত ব্যক্তি যদি অসুস্থ থেকে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত যদি ধরে নেয় যা কিছু হবে হোক,নিয়তে যাই আসুক,সে মুসলিম,তার ইমান চলে যায়নি,এতে কি অসুবিধা হবে?
৭/প্রতিটা কাজে বা কথায় বলার আগে নিয়ত ঠিক করতে হয়, খারাপ নিয়ত চলে আসবে কিনা এই ভয়ে,,এমনকি নরমাল কাজ বা কথা বা সালাম দেয়ার সময় ও।।।দিনে যদি বার বার সন্দেহ হয় ইমান ভেঙ্গে গেছে কিনা তাহলে কালেমা শাহাদাত পড়লে  ও গোসল কি বার বার করতে হবে? নাকি সন্দেহ হলেই ইমান নবায়ন করলে হয় গোসল কঅরতে হয়না?
৮/বিবাহিত মহিলার জন্য ত ইমান নবায়ন বা বারবার গোসল করা সম্ভব পর হলেও বার বার বিয়ে নবায়ন করা কি খুব দরকার??এক্ষেত্রে কি করনীয়?
৯/আমার জন্য পরামর্শ কি??
১০/আমার সামনে অনেকে গীবত করে টিভি দেখে,আমি যদি তাদের কে মানা না করি কিন্তু আমি দূরে থাকি এতে কি আমার গোনাহ হবে? বা আমি তাদের মাঝে এমনবসলাম জাস্ট একা না থাকার জন্য কিন্তু আমি ওরা যা বলে চুপ করে শুনে থাকি নিজে কিছু না বললেও কি গোনাহ হবে??

১১/সালাম দিতে আমি আইন উচ্চারন এ কষ্টের কারনে বড়দের সালাম দিলে ছোট দের সালাম না দিলে কি গোনাহ হবে?গ্রামে একসাথে সবাই মিলে থাকে,প্রতিদিন সালাম না দিলে বা দিনে বার বার দেখা হলে বারবার সবার ঘরে যাওয়া হয়,,এতে যদি সালাম না দি তাহলে কি গোনাহ হবে//??যেদিন গ্রামে যায় যেদিন গ্রাম থেকে আসি শুধু সেদিন সালাম করলে হয়না?সালাম না দিলে কি গোনাহ হয়?
১২/আমি যে ফতোয়া জানার জন্য ১-৯প্রশ্নে কথা লিখলাম বা প্রকাশ করলাম এতে কি আমার ইমান চলে যাবে? গোনাহ হবে?
by (19 points)
মুফতি ওলিউল্লাহ স্যার এর কাছে প্রশ্ন

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
মনের মাঝে শুধুমাত্র বাজে চিন্তা বা কুফরী চিন্তা আসলেই ব্যক্তি কাফের হয়ে যায় না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلُوهُ إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ . قَالَ ” وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ ” . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ ” ذَاكَ صَرِيحُ الإِيمَانِ ”

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতিপয় সাহাবী তাঁর সমীপে এসে বললেন, আমাদের অন্তরে এমন কিছু সংশয়ের উদয় হয়, যা আমাদের কেউ মুখে উচ্চারণ করতেও মারাত্মক মনে করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেনঃ সত্যই তোমাদের তা হয়? তারা জবাব দিলেন, জ্বী, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটই স্পষ্ট ঈমান। (কারণ ঈমান আছে বলেই সে সম্পর্কে ওয়াসওয়াসা ও সংশয়কে মারাত্মক মনে করা হয়।) [সহীহ মুসলিম-১/৭৯, হাদীস নং-১৩২, ইফাবা, হাদীস নং-২৪০]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। [সহীহ বুখারী-১/৩৪৩, হাদীস নং-২৫২৮, ইফাবা, হাদীস নং-২৩৬১]

★সুতরাং মনের মাঝে কুফরি চিন্তা আসলে ঈমানের কোনো ক্ষতি হবে না। এগুলো মূলত শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখনই এ জাতীয় চিন্তার উদ্রেগ হবে, আল্লাহ তাআলার কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।
(ফাতহুল বারি ৫/১৬১)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এতে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
ইচ্ছাকৃতভাবে হলে ঈমান ভেঙ্গে যাবে।

(০৪)
বুঝে শুনে ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে বললে  উভয়ের ক্ষেত্রেই ঈমান চলে যাবে।

(০৫)
হ্যাঁ এমন।
তবে কুফরি কাজ করলে ঈমান চলে যাবে।

(০৬)
এমনটি ধরে নেয়া যাবেনা।
কাফের হয়ে যাওয়ার মতো কোনো কথা বা কাজ করলে ঈমান চলে যাবে।

(০৭)
এভাবে আপনাকে বারবার নিয়ত করতে হবেনা,বারবার কালেমা পাঠ করতে হবেনা,বারবার গোসলও করতে হবেনা।

এগুলো সবই আপনার ওয়াসওয়াসা মাত্র।

(০৮)
ঈমান ভেঙ্গে গেলে বিবাহও নবায়ন করতে হবে।
তবে ঈমান ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে নিজে নিজে ফতোয়া দিবেনা,কোনো বিজ্ঞ মুফতী সাহেব থেকে জেনে নিতে হবে।

(০৯)
পরামর্শ হলোঃ
আপনার যে ওয়াসওয়াসা আসছে,,,
এগুলো মূলত শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখনই এ জাতীয় চিন্তার উদ্রেগ হবে, আল্লাহ তাআলার কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।
এগুলোর প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেননা।

(১০)
আপনি মনে মনে তাদের এহেন কাজের প্রতি ঘৃণা নিয়ে আসবেন,তাহলেই আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।

তবে আপনার অধিনস্ত হলে আপনি তাদের অভিভাবক হলে আপনাকে নিষেধ করতেই হবে।


(১১)
গুনাহ হবেনা।

(১২)
এতে আপনার ইমান চলে যাবেনা।
গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...