আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায, আমার এক দ্বীনি বোনের প্রশ্ন এটি-

"আমি কাপল সেট সেল করি।(শাড়ি ও পাঞ্জাবি)
আমার নিয়্যাত,আমার রব জানেন। প্রশ্ন আসে আমি যে কাপল সেট সেল করি এগুলো গার্লফ্রেন্ড ববয়ফ্রেন্ড রা পরিধান করলে আমার কি গুনাহে জারিয়াহ হয়ে যাবে না বা এতে কি আমার পাপ হচ্ছে না বা আমি যে এত এত থ্রি পিস সেল করি এগুলো পরে যদি কোন বোন নন-মাহরামদের সামনে সেজেগুজে ঘুরে বেড়ায় আমার কি গুনাহে জারিয়াহ হওয়ার ভয় নেই? অথবা এভাবে কি বিজনেস টা হালাল হচ্ছে?
আমার নিয়্যাতঃ আমার প্রিয় বোনেরা তাদের হাসবেন্ড এর সাথে ম্যাচিং করে শাড়ি পরে তাদেরকে দেখাবে,সুন্দর সুন্দর থ্রি পিস পরে মাহরামদের সামনে সেজেগুজে ঘুরে বেড়াবে,কেউ মা-বাবাকে হাদিয়া দিবে,কেউ তার বোন_বোন জামাইকে হাদিয়া দিবে, কেউ তার ভাই_ভাবিকে। আমি হালাল সম্পর্কগুলোর জন্যই মূলত শাড়ি ও পাঞ্জাবি কাপল সেট করে থাকি।আর আমার থ্রি পিসগুলো বেশিরভাগ ই সুতি আরামদায়ক বাসায় পড়ার জন্য। আর উক্ত আয় থেকে আমি আল্লাহর রাস্তায় খরচ করি আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় আমার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছি,মা-বাবা-ভাই এর জন্য খরচ করি।


এখন আমার কথা হচ্ছে থ্রি পিস আর ৫ জন ও তো সেল করতেছে। বাংলাদেশ এ থ্রি পিস বা শাড়ির দোকানের তো অভাব নেই!


এখন এগুলো হারাম রিলেশনে জড়িয়ে থাকা ভাই-বোনেরা নিলে আমি কি করতে পারি সেক্ষেত্রে? আমি কি তাদেরকে ধরে ধরে নিষেধ করতে পারবো?কেউ ডিরেক্ট বলে আমি আমার জিএফকে গিফট দিবো,কেউ ডিরেক্ট বলে বিএফকে গিফট দিবো,কেউ বলে হাব্বি কে গিফট দিবো বার্থডেতে,কেউ বলে এনিভার্সিরি তে পরবো দুজনে,কেউ শাড়ি চায় বিয়ের অনুষ্ঠান এ গায়ে হলুদে পরে নাচবে,আবার কেউ বাবা-মায়ের জন্মদিন এ গিফট দেবার জন্য, হিন্দু বা অন্য ধর্মের ভাইবোনেরা তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে নিতে চায় শাড়ি-পাঞ্জাবি।


এখন আমার পক্ষে কি সম্ভব কার নিয়্যাত কি তা জেনে জেনে সেল করা?কে কোন নিয়্যাতে এ নিচ্ছে সেটা তো আমাকে না বললে আমার জানার ও কথা না।


পর্দার পোষাক পরিধান করেও অনেকে নন-মাহরামদের সাথে ঘুরে বেড়ায়,তাদের ও ছেলে ফ্রেন্ড থাকে, সেক্ষেত্রে পর্দা সামগ্রী সেলকারী বোনের/ভাইয়ের কি গুনাহ হতে পারে? আমার মনে হয় পারে না কারণ আমার সেই বোনের /ভাইয়ের নিয়্যাত সম্পর্কে আমার রব জানেন,তারা(সবাইনা)মানুষকে শালীনভাবে চলতে দেখতে চান,রবের ফরজ বিধান মেনে চলতে সাহায্য করতে চান তাই তারা পর্দা সামগ্রী নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু এখন সেই পর্দা সামগ্রী পরিধান করে যদি কোন বোন নন-মাহরাম এর সাথে ঘুরে এতে কি আমার সেলার বোনের/ভাইয়ের গুনাহ হবে? তার নিয়্যাত তো এটা নয়,তিনি চান-না এসব হোক।


(আমিসহ সবাই যদি থ্রি পিস/শাড়ি-পাঞ্জাবি সেল করা বন্ধ করে দেয় আমরা বাসায় পড়ার জন্যও তো ড্রেস খুজে পাবো না)
এখানে কি আমার বা সেই পর্দা সামগ্রী সেল করা ভাই/বোনেদের বিজনেস এ গুনাহে জারিয়াহ হওয়ার কিছু আছে অথবা এই বিজনেস কি হালাল হবে না?উক্ত উপার্জন কি হালাল নয়? আমি হানাফি মাযহাব মতে জানতে চাচ্ছি"

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


https://www.ifatwa.info/242 ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
নারীজাতীয় কাপড় সমূহ যা দোকানে বিক্রি হয়, তা তিন অবস্থা থেকে খালি নয়ঃ- 

 প্রথম অবস্থাঃ- 

 বিক্রেতার বিশ্বাস বা ধারণা রয়েছে যে, এই কাপড়গুলো হালাল ত্বরিকায়-ই ব্যবহৃত হবে,হারাম ত্বরিকায় কখনো ব্যবহৃত হবে না। তাহলে এই সমস্ত কাপড় বিক্রি করা জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। 
 দ্বিতীয় অবস্থাঃ-

 বিক্রেতার বিশ্বাস বা ধারণা রয়েছে যে, এই কাপড়গুলো হারাম ত্বরিকায় ব্যবহৃত হবে।তথা মহিলা এগুলো পড়ে পরপুরুষের সামনে সুন্দর্য্য প্রদর্শন করবে।তাহলে এই সমস্ত কাপড় বিক্রি করা সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামদের মতপার্থক্য রয়েছে।

একদল উলামায়ে কেরাম বলেন, হারাম।কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমরা গোনাহ ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যকে সাহায্য করো না।(সূরা মায়েদা-০২)  

অপরদিকে একদল উলামায়ে কেরাম বলেন,জায়েয।গোনাহ তারই হবে যে কাপড় পড়বে।বিক্রেতার এক্ষেত্রে কোনো গোনাহ হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ রেশম কাপড় বিক্রির অনুমতি হযরত উমর রাযি কে দিয়েছিলেন, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

 عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَأَى حُلَّةً سِيَرَاءَ تُبَاعُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوِ ابْتَعْتَهَا تَلْبَسُهَا لِلْوَفْدِ إِذَا أَتَوْكَ وَالجُمُعَةِ؟ قَالَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ» وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى عُمَرَ حُلَّةًسِيَرَاءَ حَرِيرٍ كَسَاهَا إِيَّاهُ، فَقَالَ عُمَرُ: كَسَوْتَنِيهَا، وَقَدْ سَمِعْتُكَ تَقُولُ فِيهَا مَا قُلْتَ؟ فَقَالَ: «إِنَّمَا بَعَثْتُ إِلَيْكَ لِتَبِيعَهَا، أَوْ تَكْسُوَهَا» 

উমর (রাঃ) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রী হতে দেখে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি এটি খরীদ করে নিতেন, তা হলে যখন কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসে তখন এবং জুমুআর দিনে পরিধান করতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। পরবর্তী সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাকেই পরতে দেন। উমর (রাঃ) বললেন, আপনি এখনি আমাকে পরতে দিয়েছেন, অথচ এ সম্পর্কে যা বলার তা আমি আপনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে, তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে। (সহীহ বুখারী-২/৮৬৮, হাদীস নং-৫৮৪১, ইফাবা-৫৪২৩)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اِنۡ تَکۡفُرُوۡا فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنۡکُمۡ ۟ وَ لَا یَرۡضٰی لِعِبَادِہِ الۡکُفۡرَ ۚ وَ اِنۡ تَشۡکُرُوۡا یَرۡضَہُ لَکُمۡ ؕ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ؕ ثُمَّ اِلٰی رَبِّکُمۡ مَّرۡجِعُکُمۡ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۷﴾ 

যদি তোমরা কুফরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। আর তিনি তার বান্দাদের জন্য কুফরী পছন্দ করেন না। এবং যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও তবে তিনি তোমাদের জন্য তা-ই পছন্দ করেন। আর কোন বোঝা বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবে না। তারপর তোমাদের রবের কাছেই তোমাদের ফিরে যাওয়া। তখন তোমরা যা আমল করতে তা তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন। নিশ্চয় অন্তরে যা আছে তিনি তা সম্যক অবগত।
(সুরা আয যুমার ০৭)

وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی

কোনো ব্যাক্তি অন্য কোনো ব্যাক্তির গুনাহের বোঝা বহন করবেনা।
(সুরা ফাতির ১৮)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের উল্লেখিত বোনের জন্য করনীয় হলো,
কোনো ক্রেতা সম্পর্কে তিনি যদি নিশ্চিত হোন এরাই যে হারাম রিলেশনে জড়িয়ে আছে বা হারাম রিলেশনে জড়িয়ে থাকা ভাই-বোনেরা নিতে চাইলে অথবা প্রশ্নে উল্লেখিত শরীয়াহ বহির্ভুত কোনো অনুষ্ঠান ইত্যাদির জন্য নিতে চাইলে (বিষয়টি সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত জানলে) সতর্কতামূলক তাদের কাছে বিক্রয় করবেননা।

★তবে তাদের কাছে বিক্রয় করলেও এই ইনকামকে হারাম বলা যাবেনা।
উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ থাকায় সতর্কতামূলক তাদের কাছে এ ধরনের পোশাক বিক্রয় না করাই উচিত। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...