আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (36 points)
মিশারী আল আফাসী এর কুরআন তিলাওয়াত কি শুনা যাবে? এখানে কি বলা আছে একটু দেখবেন?   NOV 12 2013 Can i listen to Mishary al-Efasy? – Shaykh ‘Ubayd al-Jaabiree Shaykh Ubayd al-Jaabiree touches upon Mishary Alafasy (al-Mishari al-Efasi)  Shaykh Ubayd al-Jaabiree was asked (8th Jumadah al-Aakhirah 1428H)  What is the ruling on listening to the remembrances of the morning and evening (recited) in a melodious (entertaining) way, such as the cassette distributed now in the markets of al-Mishari al-Efasi?  The Shaykh responded:  Mishari al-Efasi is from those put to trial by the way of the Mutasawwifah. For this reason he takes the path of anaasheeds accompanied with acting and the likes of this is not permissible to listen to. Upon you is to (turn to) reciters from the Salafis such as Shaykh Ali al-Hudhayfi.  Taken from: http://www.manhaj.com/manhaj/articles/vmelv-warning-from-the-conference-of-green-lane-mosque-singers-and-ikhwanis.cfm?utm_medium=twitter&utm_source=twitterfeed  Sponsored Content

1 Answer

+1 vote
by (675,600 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


কুরআন  তিলাওয়াত  এর ক্ষেত্রে নিজের সাধ্যানুপাতে সুন্দর কণ্ঠে তিলাওয়াত করা উত্তম।
তবে মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য আহলে কিতাবীদের মত কুরআনের তিলাওয়াতে বিকৃত সুর তৈরী করা কিছুতেই জায়েজ নয়।

গানের সুরের মত, বিলাপকারীদের মত বিকৃত সুরে কুরআন তিলাওয়াত করতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিস্কারভাবেই নিষেধ করেছেন। 

বরং আহলে আরবদের মত তিলাওয়াত করতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اقْرَءُوا الْقُرْآنَ بِلُحُونِ الْعَرَبِ وأَصْوَاتِها، وَإِيَّاكُمْ ولُحُونَ أَهْلِ الْكِتَابَيْنِ، وَأَهْلِ الْفسقِ، فَإِنَّهُ سَيَجِيءُ بَعْدِي قَوْمٌ يُرَجِّعُونَ بِالْقُرْآنِ تَرْجِيعَ الْغِنَاءِ وَالرَّهْبَانِيَّةِ وَالنَّوْحِ، لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ، مفتونةٌ قُلُوبُهُمْ، وقلوبُ مَنْ يُعْجِبُهُمْ شَأْنُهُمْ»

হযরত হুযায়ফা বিন ইয়ামান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর আরবদের লিহান ও তাদের সুর পদ্ধতিতে।  আর খবরদার! আহলে কিতাব ও ফাসেকদের সুর পদ্ধতি থেকে বিরত থাকো।  কেননা, অচিরেই এমন এক জাতি আসবে, যারা কুরআন তিলাওয়াত করবে গানের সুরে, এবং বৈরাগী ও ভাড়াটে বিলাপকারীদের মত।  কুরআন যাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না।  তাদের অন্তর থাকবে ফিতনাযুক্ত এবং তাদের মুগ্ধ শ্রোতাদের অন্তরও হবে ফিতনাময়।

[আলমু’জামুল আওসাত তাবারানীকৃত, হাদীস নং-৭২২৩, শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৪০৬]

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছেঃ

ইমাম জাযরী (রহঃ) বলেছেনঃ لحن এর বহুবচন لحون বা الحان এর অর্থ কুরআনের তিলাওয়াত, গান বা কবিতাকে সুন্দর উল্লাসিত সুরে বার বার আবৃতি করা।

ইমাম জাযরী (রহঃ) বলেন, কুরআন তিলাওয়াত এমন সুরেলা আওয়াজে করতে হবে যেন হরফসমূহ তার মাখারিজ থেকে বিচ্যুত ও ত্রুটিযুক্ত না হয়, কারণ এর দ্বারা প্রফুল্লতা বা আনন্দ বৃদ্ধি পায়।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেমিক তথা মুসলিম পাপী-ফাসিকদের সুরে কুরআন পড়তে নিষেধ করেছেন। তারা সুরকে টেনে এমনভাবে দীর্ঘ করে ফলে অক্ষর কম-বেশি হয়ে যায়। আর এটা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। أهل العشق এর সুর থেকে উদ্দেশ্য হলো যা কোন লোক নারীর প্রেম বিষয়ক কবিতা সুরকারের নিয়ম-নীতির প্রতি লক্ষ্য রেখে কষ্ট করে পড়ে থাকে।

অনুরূপভাবে ইয়াহূদী ও নাসারা তাদের কিতাব তথা তাওরাত ও ইঞ্জীলকে গায়কদের মতো তিলাওয়াত করত। তাই তাদের মতো কুরআন তিলাওয়াত করা নিষিদ্ধ। সেজন্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ من تشبه بقوم فهو منهم। এ ধরনের সুরে যারা কুরআনের আওয়াজকে গায়কদের মতো বরাবর ফিরিয়ে বিলাপের সুরে তিলাওয়াত করে কুরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। অর্থাৎ- তাদের অন্তরে কুরআন তিলাওয়াতের প্রভাব পড়বে না। ফলে তারা কুরআন তিলাওয়াতের ভাবনা করবে না এর প্রতি ‘আমল করবে না। ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেন, তিলাওয়াত আসমানে পৌঁছবে না বা গ্রহণযোগ্য হবে না।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একটি দলের উদ্ভব ঘটবে যারা কুরআনকে গান ও বিলাপের মতো বারবার ফিরিয়ে পাঠ করবে। কিন্তু তাদের অন্তরে এর ক্রিয়া হবে না। অর্থাৎ- কুরআন ترجيع-এর পদ্ধতিতে পড়া যাবে না। যে গান ও বিলাপকে ترجيع করা হয়। তবে অন্য হাদীসে উম্মু হানী (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন ترجيع করেছেন। যেমন তিনি বলেন, (كنت أسمع صوت النبي - ﷺ- وهو يقرأ وأنا نائمة على فراشي يرجع القرآن) এছাড়া ইসমা‘ঈলীর বর্ণনায় রয়েছে, যদি আমাদের নিকটে মানুষ একত্রিত না হত তবে আমি গুণগুণ সুরে কুরআন তিলাওয়াত করতাম। এসব বর্ণনা থেকে বুঝা গেল ترجيع করা জায়িয।

ইবনু আবী জামরাহ্ এর উত্তরে বলেন, এখানে ترجيع বলতে সুন্দর সুমধুর কন্ঠে তিলাওয়াত উদ্দেশ্য। গানের সুর উদ্দেশ্য নয়। কারণ কুরআন পড়ার দ্বারা যে বিনম্রতার আশা করা যায় গানের ترجيع দ্বারা এর বিপরীত হয়।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রে সাধ্যমতো সুর দেয়া উচিত।
তবে গানের সূর দেয়া নিষেধ।

গানের সূর ব্যাতিত আকর্ষনীয় সুরে কুরআন তিলাওয়াতের আদেশ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাঃ করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالْقُرْآنِ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সুর করে কুরআন পড়ে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
(সহীহ : বুখারী ৭৫২৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২১০৪৬.মিশকাত ২১৯৪)

وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «حَسِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ فَإِنَّ الصَّوْتَ الْحَسَنَ يُزِيدُ الْقُرْآنَ حُسْنًا» 

বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তোমরা কুরআনকে তোমাদের কণ্ঠস্বরের মধুর আওয়াজ দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে পড়বে। কারণ সুমিষ্ট স্বর কুরআনের সৌন্দর্য বাড়ায়।
(দারিমী ৩৫৪৪, শু‘আবূল ঈমান ১৯৫৫, সহীহাহ্ ৭৭১, সহীহ আল জামি‘ ৩১৪৫,মিশকাত ২২০৮)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত লেখায় দাবী করা হয়েছে যে শায়েখ মিশারী আল আফাসী, কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রে
অভিনয়ের সাথে আনাশীদের পথ অবলম্বন করেছেন।
তাই তার কুরআন তিলাওয়াত শোনা জায়েজ নেই,এমন দাবী করা হয়েছে।

(এটি তাদের একান্ত নিজেদের মতামত।)

★বাস্তবিক ভাবে মিশারী আল আফাসী এর কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রে শরীয়াহ বিরোধী কিছু তাহকিক করে পাইনি।
সুতরাং শায়েখের তিলাওয়াত শোনা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...