আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
276 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

কুরআন তিলাওয়াত "কাজের ফাঁকে ফাঁকে হেডফোন দিয়ে শুনে খতম দিবে" -এই নিয়তে শুনা শুরু করলে,অনেক সময় সূরার বিভিন্ন স্থানে থামিয়ে দিতে হয়।

এক্ষেত্রে পরবর্তীতে ওই আয়াত থেকে শুরু করতে আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ তো যিনি তিলাওয়াত করছেন তিনি পড়েন না। সেক্ষেত্রে কি নিজে পড়ে নিবো?

আর অনেক আয়াতের শেষে থামা নিশেধ। সেক্ষেত্রে আমি যেহেতু হাফেজা নই,  শুনে বুঝতে পারিনা যে, এ আয়াতের শেষে লাম আলিফ ছিলো কিনা। দেখে তিলাওয়াতের সময় এটা বুঝা যায়।
অডিও হয়ায় স্ক্রিনেও আয়াত উঠেনা।
সেক্ষেত্রে সূরা পুরো শেষ করে থামাবো - এমনটা করা সম্ভব না হলে,করণীয় কি? গুনাহগার হবো কি?
(আমি আয়াতের মাঝখানে থামিয়ে দিনা। আয়াত পুরোটা শুনে থামিয়ে দি অন্য কাজ এসে গেলে)

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/2265 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
কুরআন শ্রবণের বিধান সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মাতবিরোধ রয়েছে।হানাফি মাযহাবের উলামায়ে কেরাম বলেন,ওয়াজিব।এবং বিধান কেফায়া পর্যায়ের বিধান। হাম্বলী মাযহাব মতে মুস্তাহাব।সুতরাং যারা ওয়াজিব বলেন,তাদের মাযহাব অনুযায়ী কুরআন শ্রবণের সময় নিশ্চুপ থেকে শ্রবণ না করলে শ্রবণকারী গোনাহগার হবে।আর যারা মুস্তাহাব বলেন,তাদের মতে শ্রবণ না করলেও গোনাহ হবে না।

কর্মব্যস্ততায় কুরআন শ্রবণ না করলে কি গোনাহ হবে?
ويعذر المستمع بترك الاستماع لتلاوةالقرآن الكريم، ولا يكون آثما بذلك - بل الآثم هو التالي، على ما ذكره ابن عابدين - إذا وقعت التلاوة بصوت مرتفع في أماكن الاشتغال، والمستمع في حالة اشتغال، كالأسواق التي بنيت ليتعاطى فيها الناس أسباب الرزق، والبيوت في حالة تعاطي أهل البيت أعمالهم من كنس وطبخ ونحو ذلك وفي حضرة ناس يتدارسون الفقه، وفي المساجد، لأن المساجد إنما بنيت للصلاة، وقراءة القرآن تبع للصلاة، فلا تترك الصلاة لسماع القرآن فيه. وإنما سقط إثم ترك الاستماع للقرآن في حالات الاشتغال دفعا للحرج عن الناس. قال تعالى - {وما جعل عليكم في الدين من حرجvvb}  وإنما أثم القارئ بذلك، لأنه مضيع لحرمة القرآن.
যদি কেউ কাজে লিপ্ত থাকার ধরুণ কুরআন শ্রবণ করতে না পারে, তাহলে এমতাবস্থায় কুরআনের তেলাওয়াত শুনাকে তরক করার ব্যাপারে ঐ ব্যক্তি মা'যুর হিসেবে গণ্য হবে।সে গোনাহগার হবে না।বরং ইবনে আবেদীন শামী রাহ এর মতে এক্ষেত্রে তেলাওয়াত কারীই গোনাহগার হিসেবে গণ্য হবে।যদি কেউ ব্যস্ত এলাকায় উচ্ছস্বরে তেলাওয়াত করে,আর তথায় লেকজন কাজে মশগুল থাকে।যেমন বাজারে-যাকে লেনদেনের জন্যই তৈরী করা হয়েছে- এবং ঐ ঘরে -যাতে লোকজন রান্নাবান্না, ঝাড়ু সহ বিভিন্ন কাজে লিপ্ত- কিংবা এ এমন কোনো মজলিসে যেখানের লোকজন ফিকহ শিখায় ব্যস্ত অথবা মসজিদে -যা নামাযের জন্য তৈরী হয়েছে।(সুতরাং এমন স্থান সমূহে তেলাওয়াত না শুনলে শ্রবণকারী গোনাহগার হবে না)
তেলাওয়াতে কুরআন নামাযের তা'বে। সুতরাং তেলাওয়াতে কুরআনের জন্য নামাযকে পরিত্যাগ করা যাবে না।ব্যস্ততার সময়ে কুরআন শ্রবণ না করলে গোনাহ হবে না।এজন্য যে, যাতেকরে লোকজনের উপর সামর্থ্যর অধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া না হয়।কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। (সূরা হাজ্ব-৭৮)এক্ষেত্রে তেলাওয়াত কারীই গোনাহগার হবেন।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৪/৮৬)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কাজের বাঁকে বাঁকে কাজে থাকাবস্থায় কুরআন শ্রবণের হক আদায় হবে না।বরং কুরআন শ্রবণের জন্য সকল কাজ পরিহার করে শ্রবণের নিঢতে নিশ্চুপ থেকেই কুরআন শ্রবণ করতে হবে।

রেকর্ড কুরআন শ্রবণের সওয়াব হবে কি না? সে সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে? তবে আমার দৃষ্টিকে রেকর্ড কুরআন শ্রবণও একটি ভালো ও উত্তম কাজ। সুতরাং সওয়াবের আশা করা যায়। রেকর্ড কুরআন তিলাওয়াতের মধ্যখানে যদি অফ করা হয়ে থাকে, এবং পরবর্তীতে ঐ জায়গা থেকে আবার কুরআন তিলাওয়াত শুরু করা যায়, তাহলে আপনি নিজে আউযু বিল্লাহ বিসমিল্লাহ পড়ে নিবেন। নির্দিষ্ট জায়গায় তিলাওয়াত না পৌছা পর্যন্ত ওয়াকফ বা রেকর্ড বন্ধ করা অনুচিৎ, তাই আপনি সম্পূর্ণ সূরা শেষ করেই তবে রেকর্ড তিলাওয়াত বন্ধ করবেন।কেননা আপনি কুরআনের অর্থ না জানার কারণে কখন কোন জায়গায় ওয়াকফ করতে হয়, সেটা সম্পর্কে আপনি জানবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
অনেক সময় দেখা যায়, বাসায় সূরা বাকারাহ প্লে করে রেখেছি শয়তান যেন না থাকতে পারে বাসায়। সূরাটা অনেক বড়। শেষ হতে অনেক সময় লাগে, বাসায় ছোট বাচ্চারা আছে ১ বছর, ২ বছর, ৫-৬ বছর বয়সের। তারা এতক্ষণ চুপ থাকতে পারে না। কথা বলে। আমাদের বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে, খাবার চায়। আবার ওদের ওয়াশরুমে নিয়ে যেতে হয়, নিজেদেরও কখনো সূরার রেকর্ড চলাকালীন অবস্থায় ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হয়।আবার সূরা চলাকালীন ফরজ নামাজের ওয়াক্ত হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে করণীয় কি? 
যেহেতু মাঝে রেকর্ড  তিলাওয়াত বন্ধ করা উচিত নয়।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...