আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (0 points)
edited by

১/ফিতনা সৃষ্টি হলে ছোটো মেয়েদের থেকেও চোখ ফেরায় রাখতে বলা হয়।অনেক সময় ই ছোটো  মেয়েদের দেখে অনেক আদুরে,অনেক কিউট মনে হয়।এইটাই কী ফিতনা?

২/যদি না হয়,তাহলে ছোট  মেয়েদের দেখে ফিতনা বলতে কী বুঝানো হয়?

৩/পর্দানশীল অনেক মেয়েকে দেখে এরকম মনে হয় যে আমার যেনো এরকম একটা পর্দানশীল স্ত্রী হয়।এইটাও কী ফিতনা?

৪/এই ভিডিও র একদম শেষের দিকে একটা মেয়েকে দেখে মনে হয়েছিলো অনেক সুন্দর,কীউট(জাস্ট এইটাই মনে হয়েছে,) যদিও তার বয়স  অনেক কম।এইটাও কী ফিতনার অন্তর্ভুক্ত?

৫/মেয়েদের পা ও কী পর্দার অন্তর্ভুক্ত?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(১.২.৪)
এক্ষেত্রে ফিতনার আশংকা বলতে অন্তরে  কুপ্রবৃত্তির সৃষ্টি,কামনা-বাসনা সৃষ্টি,খাহেশাত উত্তেজনা সৃষ্টি,যৌন আকাংখা সৃষ্টি ইত্যাদি বুঝানো গুনাহ। 
সুতরাং কোনো ছোট মেয়েকে দেখলে যদি অন্তরে এরুপ অবস্থা তৈরী না হয়,বরং এমনিতেই তার সৌন্দর্যতার কারনে মাশাআল্লাহ,কিউট,সুন্দর বলা জায়েয আছে।
তবে অন্তরে উক্ত অবস্থা (অবৈধ অবস্থা) তৈরী হলে তার দিকে দৃষ্টি দেওয়াও নাজায়েজ।  
  
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

وَقَالَ سَعِيدُ بْنُ أَبِي الْحَسَنِ لِلْحَسَنِ إِنَّ نِسَاءَ الْعَجَمِ يَكْشِفْنَ صُدُورَهُنَّ وَرُءُوسَهُنَّ قَالَ اصْرِفْ بَصَرَكَ عَنْهُنَّ. قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ: (قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهْمَ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ).
وَقَالَ قَتَادَةُ عَمَّا لاَ يَحِلُّ لَهُمْ: (وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ)، (خَائِنَةَ الأَعْيُنِ) مِنَ النَّظَرِ إِلَى مَا نُهِيَ عَنْهُ.
وَقَالَ الزُّهْرِيُّ فِي النَّظَرِ إِلَى الَّتِي لَمْ تَحِضْ مِنَ النِّسَاءِ لاَ يَصْلُحُ النَّظَرُ إِلَى شَيْءٍ مِنْهُنَّ مِمَّنْ يُشْتَهَى النَّظَرُ إِلَيْهِ، وَإِنْ كَانَتْ صَغِيرَةً. وَكَرِهَ عَطَاءٌ النَّظَرَ إِلَى الْجَوَارِي يُبَعْنَ بِمَكَّةَ، إِلاَّ أَنْ يُرِيدَ أَنْ يَشْتَرِيَ.
সা‘ঈদ ইবনু ‘আবুল হাসান হাসান-কে বললেনঃ অনারব মহিলারা তাদের মস্তক ও বক্ষ খোলা রাখে। তিনি বললেনঃ তোমার চোখ ফিরিয়ে রেখো। আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ ‘‘মু’মিনদের বল তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, এটাই তাদের জন্য বেশি পবিত্র, তারা যা কিছু করে সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত।’’সূরাহ আন্-নূর ২৪/৩০) ক্বাতাদাহ বলেন, অর্থাৎ যারা তাদের জন্য হালাল নয়, তাদের থেকে। আর ঈমানদার নারীদেরকে বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে।’’ (সূরাহ আন্-নূর ২৪/৩১) আর আল্লাহর বাণীঃ ‘‘অর্থাৎ খিয়ানাতকারী চোখ।’’ সূরাহ গাফির ৪০:১৯) অর্থাৎ নিষিদ্ধ স্থানের দিকে তাকানো সম্পর্কে। আর ঋতুমতী হয়নি, এমন মেয়েদের দিকে তাকানো সম্পর্কে।
ইমাম যুহরী (রহ.) বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্কা হলেও এসব মেয়েদের এমন কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দিকে তাকানো নাজায়িয, যা দেখলে লোভ জন্মিতে পারে। ‘আত্বা ইবনু রাবাহ (রহ.) ঐসব কুমারীদের দিকে তাকানোও মাকরূহ বলতেন, যাদের মক্কার বাজারে বিক্রির জন্য আনা হতো। তবে কেনার উদ্দেশে হলে তা ভিন্ন ব্যাপার।
,
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
,
(০৩) 
পর্দানশীল অনেক মেয়েকে দেখে এরকম মনে হয় যে আমার যেনো এরকম একটা পর্দানশীল স্ত্রী হয়।
তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই,তবে তার মুখ খোলা থাকা অবস্থায় তার দিকে তাকানো যাবেনা।
এবং কামনা বাসনা নিয়ে তার দিকে তাকানো যাবেনা।

(০৫) 
শরীয়তের বিধান হলো  জরুরত ব্যতীত মহিলা বাহিরে যাবে না।বরং ঘরের ভিতর অবস্থান করবে।
জরুরতে সমস্ত শরীর ঢেকে মহিলা ঘরের বাহিরে যেতে পারে।অর্থাৎ হেজাব পরিধান করে যাবে।
বর্তমান ফিতনার যামানায় হাত পা খোলা রাখা যাবে না।

সুতরাং সেটা হাত মোজা পা মোজা দ্বারা হোক,বা অন্য কিছুর মাধ্যেমে হোক,গায়রে মাহরাম এর সামনে গেলে বা বাহিরে বের হলে চেহারা, হাত,পা ঢেকেই যেতে হবে। 

ইসলামী পর্দার কয়েকটি শর্ত
(১) মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ শরীর আবৃত করে নেওয়া। বোরকা বা অন্য কোনো পন্থায় গোটা শরীর ঢেকে রাখা জরুরি। (২) পরিহিত বোরকা ফ্যাশনমূলক না হওয়া,যেটা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষন করে। যার দ্বারা পুরুষের কামনার নজর তার দিকে পড়ে।  (৩) বোরকার কাপড় মোটা হওয়া, যাতে শরীরের আকৃতি অনুধাবন করা না যায়। (৪) বোরকা ঢিলেঢালা হওয়া। 
(আবু দাউদ : ২/৫৬৭, মুসলিম : ২/২০৫, আহসানুল ফাতাওয়া : ৮/২৮, তিরমিজি : ২/১০৭)।

বর্তমানে ফিতনার আশঙ্কায় ইসলামী আইনবিদরা বলেছেন, পরপুরুষের সামনে মুখমণ্ডল, হাতের কবজি, পায়ের পাতাসহ সম্পূর্ণ শরীর ভালোভাবে ঢেকে রাখা জরুরি। তবে বিশেষ প্রয়োজনে মুখ খোলা যেতে পারে। যেমন—চিকিৎসক, বিচারক বা সাক্ষী, যাঁরা কোনো ব্যাপারে নারীকে দেখে সাক্ষ্য বা ফয়সালা দিতে বাধ্য হন। (ফাতাওয়া শামি : ১/৪০৬, ফাতাওয়া রহিমিয়া : ৪/১০৬)।
,
সুতরাং পা ও পর্দার অন্তর্ভুক্ত।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...