আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
503 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
মুফতি সাহেব আমাকে মাফ করবেন , আমি মানসিক রুগী হয়ে যাচ্ছি , মানসিক রোগের ওষধ খাচ্ছি তবু ভেতরে খুব ভয় হচ্ছে । আমি আগের প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি ,  কিন্তু একটা জিনিস উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। খুব দুঃখিত বার বার প্রশ্ন করার জন্য  ।  ভীষণ চিন্তা হচ্ছে , মাথা ঠিক রাখতে পারছিনা, তাই উল্লেখ করলাম ,  শেষ বারের মত আমাকে উত্তর টা দিয়ে সাহায্য করুন ।

১. প্রথম  প্রশ্নে আমি যখন হস্তমৈথুন করছিলাম , আমি তখন আমার  মা কে স্পর্শ করে ফেলি এবং মা হাত সরিয়ে দেই , তার পরে আমি হয়ত আম্মুর হাত ধরে আমার লিঙ্গে স্পর্শ করার চেষ্টা করি ( সম্পূর্ণ আম্মুর অনিচ্ছাকৃত), এবং আম্মু হাত সরিয়ে নেই , জানিনা স্পর্শ হয়েছিল কি না একবার মনে হয় হয়েছিল একবার মনে হয় হয়নি , ( এক্ষেত্রে আম্মুর কোনো উত্তেজনা ছিল না)

আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন কিন্তু যদি স্পর্শ হতো তাহলে কি একই উত্তর হতো ? আমার কি হুরমত সাব্যস্ত হতো ? এই বিষয় নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে ? এই বিষয় টা সাহায্য করুন।

প্রশ্নের বাকি বিবরণ নিচে দেওয়া আছে ,
আর একটা বিষয় জানতে চাইছি যদি স্পর্শ করার সময় দুজন উত্তেজিত হয় তাহলে কি হয় ?


আসসালমুআলাইকুম। মুফতী সাহেব দয়া করে আমার এই বিষয় টি ধ্যর্যো ধরে পড়বেন , আমি খুব চিন্তিত অবস্থায় আছি এবং মানসিক ভাবে ঠিক নেই ।

আজ থেকে আড়াই (২.৫) বছর আগে, আমি জটিল রোগে আক্রা্ত হয়,  আমার মাথার নার্ভের সমস্য হয়, এবং আমি ভীষণ মানসিক রুগী হয়ে যায় যা দেখে আমি পরিবার ভীষণ চিন্তা গ্রস্ত হয়ে যায়। আমি মানুষ দেখলে ভয় পেতাম মনে হতো আমাকে মারতে আসছে , মন আমার খুব দূর্বল হয়ে যায় , আমি চুপ করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম , এবং আমার চোখের দৃষ্টি কেমন একটা ঘোর অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় আমার আব্বা আমাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার আমাকে দেখার পর অনেক ওষধ দেই । এবং ডাক্তার এর কথা মত আমি সেই ঔষধ আমি প্রতিদিন খেতাম , যখন আমি এই ওষধ খেতে লাগলাম ১ বা ২ দিন পর আমার শরীরে ভীষণ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে যায় এবং যৌণ চাহিদা বেড়ে যায় । যে কোনো মহিলা দেখলে উত্তেজিত হয়ে যেতাম ব্যাতিত নিজের মা বোন।

১. এমন মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রাত্রির ওষধ খেয়ে মা এর পাশে ঘুমিয়ে যায় । হটাৎ আমার চরম উত্তেজনার সঙ্গে ঘুম ভেঙ্গে যায় (তখন আমি কারও স্পর্শে ছিলাম না), এবং হয়ত আমার লিঙ্গে হাত দিয়ে হস্তমৈথুন করতে থাকি বা হাত দিয়ে নাড়ছিলাম এমন সময় আমি আমার মা কে স্পর্শ করে ফেলি এবং মা সেটা খুব অল্প সময়ে বুঝতে পেরে হাত সরিয়ে দেই কিন্তু  আমি হস্তমৈথুন করতে থাকি এবং তখন আমার বীর্য বের হয়ে যায়। যখন এটা হয় মা এর হাত বা আঙ্গুল আমি স্পর্শ করে ছিলাম ।  (আমি মা কে সহবাসের ইচ্ছাতে স্পর্শ করিনি আমার ওষধ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য সৃষ্টি উত্তেজনার কারণে স্পর্শ করে ফেলি ।)

২. ঠিক তার কিছু দিন আগে বা পরে ঠিক মনে নেই মা শুয়ে ছিল। আমি সেইখান দিয়ে যেতে মা এর গোপন অঙ্গ দেখে ফেলি কিন্তু গোপনাঙ্গের ভেতর এর অংশ দেখনি । চলে আসি এবং উত্তেজিত হয়ে যায় পরে আমি গোপন অঙ্গের ছবি তুলে ফেলি এবং তা দেখে হস্তমৈথুন করে ফেলি । যখন গোপন অঙ্গ দেখি আমি তখন হয়তো উত্তেজিত ছিলাম না ।  হয়ত একটু উত্তেজিত ছিলাম সঠিক মনে নেই কিন্তু বেশি সময় মনে হয় উত্তেজিত ছিলাম না
৩. যখন অনেক দিন ওষধ খেয়ে আমি কিছু টা সুস্থ হয়ে উঠি এমন সময় ওষধ খাওয়া ছেড়ে দিয়ে আবার অসুস্থ হয়ে যায় ভীষণ মানসিক রুগী হয়ে যায় , ভীষণ ভয় লাগতো অকারণে , এই জন্য আমি মা এর পাশে শুইয়ে ছিলাম হটাৎ আমার ভীষণ উত্তেজনা অবস্থায় ঘুম ভেঙে যাই এবং মা কে স্পর্শ করে ফেলি ১০ সেকেন্ড এর মত এবং মা বুঝতে পেরে উঠে চলে যায় । এ ক্ষেত্রে আমার লিঙ্গও মা কে স্পর্শ করার আগে উত্তেজিত ছিল কি ছিল না মনে পড়ছে না । বা মা কে স্পর্শ করার পর উত্তেজিত হয়েছিল লিঙ্গও মনে পড়েনা একবার মনে হয় হয়েছিল এক একবার মনে হয় হয়নি ।
এই ঘটনার পর আমার খুব কষ্ট হয় এটা আমি কি করলাম বলে নিজের ওপর ঘৃনা হয়ে লাগলো এবং আল্লাহর কাছে অনেক কান্না করে তৌবা করে চেষ্টা করছিলাম আল্লাহর ইবাদাত করার।

হটাৎ একদিন হুরমত মুসারাহা বিষয় এ জানতে পারি google থেকে তখন আমার ১ নম্বর এবং ২ নম্বর ঘটনার কথা মনে পড়ে হালকা হালকা , আমি তখন অনেক চেষ্টা করলাম মনে করার । হয়ত সম্পূর্ণ ভাবে মনে পড়েনি, দুটানা তে পরে যেতাম সঠিক মনে করতে পারছিলাম না যে আমার সঙ্গে সঠিক কি হয়েছে। এবং আমি ভীষণ ভয় পেয়ে যাই  মারাক্তক চিন্তা হতে থাকলো , ভয় পেয়ে আব্বা মা কে বিষয় টা জানলাম এবং পা ধরে মাফ চাইলাম , অনেক কান্না করে মা আব্বার কাছে মাফ চাইলাম আব্বা মা আমাকে মাফ করে দেই তবু ও আমি অনেক দিন ধরে ক্ষমা চেয়েছি , আমার ভেতর থেকে ভয় যাচ্ছে না এই নিয়ে ভয় হতে থাকলো আব্বা মা এর বৈবাহিক সম্পর্ক কি নষ্ট হয়ে যাবে  । এই চিন্তা করতে করতে আবার মানসিক রুগী হয়ে যায় আবার ডাক্তার এর কাছে গিয়ে ওষধ নিয়ে আসি । এখনও চিকিৎসা চলছে কিন্তু চিন্তা মুক্ত হতে পারছিনা ।
আমাকে নিরাশ করবেন না , আমার খুব ভয় হচ্ছে আমি কি করবো । আমাকে সাহায্য করুন।

আমি আমার মা কে সহবাসের ইচ্ছাতে স্পর্শ করিনি ওসুধ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এর ফলে হয়েছে । আর ঘটে যাওয়া সঠিক সবকিছু মনে নেই। এক্ষেত্রে কি হুরমত সাব্যস্ত হবে ?এলোমেলো ভাবে লেখার জন্য দুঃখিত।
by (0 points)
মুহতারাম টেলিগ্রামে রিপ্লাই করুন, আপনাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলছি।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (7 points)
edited by
আমাকে বেশি বোঝাতে হবে না।

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ


হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এক্ষেত্রেও প্রশ্নের বিবরণ মতে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা। 

প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে ""আম্মুর হাত ধরে আমার লিঙ্গে স্পর্শ করার চেষ্টা করি""
যদি আপনার মায়ের হাত আপনার লিঙ্গে স্পর্শ হয়,তবুও যেহেতু প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাত বীর্যপাত হয়ে গিয়েছিলো,তাই উল্লেখিত ছুরতে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা। 

বাকি প্রশ্নগুলোর জবাব প্রশ্নে উল্লেখিত লিংক দ্রষ্টব্য।
একই জবাব এখানেও হবে।           


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...