উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
,
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻗُﻞِ ﺍﺩْﻋُﻮﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺃَﻭِ ﺍﺩْﻋُﻮﺍْ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦَ ﺃَﻳًّﺎ ﻣَّﺎ ﺗَﺪْﻋُﻮﺍْ ﻓَﻠَﻪُ ﺍﻷَﺳْﻤَﺎﺀ ﺍﻟْﺤُﺴْﻨَﻰ-
(হে নবী আপনি) বলুনঃতোমরা আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই তোমরা আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই।(সূরা বনী ইসরাঈল-১১০)
ﻭَﻟِﻠّﻪِ ﺍﻷَﺳْﻤَﺎﺀ ﺍﻟْﺤُﺴْﻨَﻰ ﻓَﺎﺩْﻋُﻮﻩُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺫَﺭُﻭﺍْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻠْﺤِﺪُﻭﻥَ ﻓِﻲ ﺃَﺳْﻤَﺂﺋِﻪِ ﺳَﻴُﺠْﺰَﻭْﻥَ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ
আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে।নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই তারা পাবে।সূরা আ'রাফ ১৮০।
ﺳﺒﺢ ﺍﺳﻢ ﺭﺑﻚ ﺍﻷﻋﻠﻰ
অর্থ, তোমার প্রভূর নামের তাসবীহ পাঠ কর।
ﻗﺪ ﺃﻓﻠﺢ ﻣﻦ ﺗﺰﻛﻰ ﻭﺫﻛﺮ ﺍﺳﻢ ﺭﺑﻪ ﻓﺼﻠﻰ
এ আয়াতের মাঝেও বলাহয়েছেঃ প্রকৃত সফলকাম ঐ ব্যক্তি যে তার রবের নামের যিকির করে ৷সূরাঃ আ'লা(৮৭)আয়াত ১-১৪-১৫
এবং নবীজী সাঃ বলেনঃ
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ; ﺇِﻥَّ ﻟِﻠَّﻪِ ﺗِﺴْﻌَﺔً ﻭَﺗِﺴْﻌِﻴﻦَ ﺍﺳْﻤًﺎ ﻣِﺎﺋَﺔً ﺇِﻟَّﺎ ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ ﻣَﻦْ ﺃَﺣْﺼَﺎﻫَﺎ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ
নবীজী সাঃ বলেন,নিশ্চয় আল্লাহর নিরান্নব্বইটা নাম রয়েছে,যে ব্যক্তি তা মুখস্থ করবে এবং ঈমান ও আমলের সাথে ডাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।(সহীহ বুখারী-২৭৩৬)
,
,
★★সুতরাং আল্লাহ তায়ালার নাম হিফজের সাথে সাথে বেশি বেশি যিকির করা দরকার।
তাহলেই ফজিলত অর্জন হবে,ইনশাআল্লাহ ।
তবে অনেক গুলো কিতাবে বিশেষ পদ্ধতিতে আল্লাহ তায়ালার নামের কিছু আমল পাওয়া যায়।
উদাহারন হিসেবে নিচে কিছু পেশ করছিঃ
الرَّحْمَن
-সবচাইতে দয়ালু, কল্যাণময়, করুণাম।
*যে ব্যক্তি দৈনিক প্রত্যেক নামাজের পরে ১০০ বার “ইয়া-রাহমানু” পড়বে ইনশাল্লাহ তার অন্তর থেকে সকল প্রকার কর্কশতা ও গাফলতি দূর হবে।
.ইয়া রাহীমুঃ
يآ الرَّحِيم
- সবচাইতে ক্ষমাশীল।
*যে ব্যক্তি দৈনিক প্রত্যেক নামাজের পরে ১০০ বার “ইয়া-রাহীমু” পড়বে আল্লাহতালা দুনিয়াবিদ বালা মসিবত দূর করে দিবেন।
ইয়া মালিকুঃ
يآ الْمَلِكُ
- মালিক, অধিপ।
*যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর প্রত্যহ ১০০ বার “ইয়া-মালিকু” বলবে আল্লাহতালা তাকে ধনী করে দিবেন।
.ইয়া কুদ্দুসুঃ
الْقُدُّوسُ
- ক্বুদ্দূস, পূতঃপবিত্র, নিখুঁত।
*যে ব্যক্তি প্রত্যহ সূযাস্তের সময় এই নামটি ১০০ পাঠ করবে আল্লাহ তার মনের বিদ্বেষ দূর করে দিবেন।
.ইয়া সালামুঃ
السَّلَامُ
- সালাম, শান্তি এবং নিরাপত্তার উৎস, ত্রাণকর্।
*যে ব্যীক্ত এই নামটি “ইয়া-সালাম” বেশি বেশি পাঠ করবেন আল্লাহ তার সকল প্রকার বালা মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।
.ইয়া মুমিনুঃ
الْمُؤْمِنُ
- মু’মিন, জামিনদার, সত্য ঘোষণাকারী,বিশ্বাসী।
*যে ব্যক্তি কোন ভয়ের সময় ৩৩ বার এই নামটি পড়বে আল্লাহ পাক সর্ব প্রকার ভয়-ভীতি ও ক্ষতি থেকে নিরাপদে রাখবেন।
.ইয়া মুহাইমিনুঃ
الْمُهَيْمِنُ
- মুহাইমিন, অভিভাবক, প্রতিপালক।
*যে ব্যক্তি গোসল করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে খাস দিলে ১০০ বার “ইয়া-মুহাইমিনু” এই নামটি পড়বে আল্লাহ তালা তার ভিতর ও বাহির করে দিবেন।
.ইয়া আযীযুঃ
الْعَزِيز
-’আযীয, সর্বশক্তিমান, সবচেয়ে সম্মানিত।
*যে ব্যক্তি ৪০ দিন পর্যন্ত একাধারে ৪০ বার “ইয়া-আযিযু” পড়বে আল্লাহপাক তাকে সম্মানিত ও অমুখাপেক্ষী করে দিবেন।
.ইয়া জাব্বারঃ
الْجَبَّار
- জাব্বার, দুর্নিবার, সমুচ্চ, মহিমান্বিত।
*কেউ যদি উক্তি নামটি হাতের আংটির পাথরে খোদাই করে ব্যবহার করে, তবে সে যেখানেই গমন করুক না কে লোকে তাকে সম্মান করবে।
.ইয়া মুতাকাব্বিরঃ
الْمُتَكَبِّرُ
-মুতাকাব্বির,সর্বশ্রেষ্ঠ, গৌরবান্বিত।
*যে ব্যক্তি নিদ্রা যাওয়ার পূর্বে অযু করে পবিত্রাবস্থায় এই নাম পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে ভয়-ভীতি পূর্ণ কোন স্বপ্ন দেখাবেন না।
.ইয়া খালিকুঃ
الْخَالِقُ
-খলিক্ব ,সৃষ্টিকর্তা, শূন্য থেকে।
*যে ব্যক্তি একাধারে ৭ দিন পর্যন্ত এই নামটি সদা সর্বদা জিকির করিবে, আল্লাহ তালা তাকে বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত রাখবেন।
ইয়া বারিউ
الْبَارِئُ
-বারি। বিবর্ধনকারী, নির্মাণকর্তা, পরিকল্পনাকা।
এই পবিত্র নামটি প্রত্যহ ৭ বার পড়িলে কবর আযাব হইতে মুক্তি পাওয়া যায়।
ইয়া মুছাভিরঃ
الْمُصَوِّرُ
-মুসউয়ির ,আকৃতিদানকারী।
যে স্ত্রী লোকের সন্তান হয় না কিংবা সন্তান গর্ভে নষ্ট হইয়া যায়,সে স্ত্রী লোক ৭ দিন
রোজা রাখিয়া প্রত্যেক দিন ইফতারের সময় এই নাম ২১ বার পড়িয়া পানির উপর ফুঁক দিয়া ঐ
পানির দ্বারা ইফতার করিবে এবং ইফতারের পর এই পবিত্র নামটি ২১ বার পড়িলে ইনশাআল্লাহ তাহার
গর্ভ সঞ্চার হইবে ও রক্ষা পাইবে।
ইয়া গাফ্ফারঃ
الْغَفَّارُ
-গফ্ফার, পুনঃপুনঃ মার্জনাকারী।
এই পবিত্র নামটি জুমার নামাজের পর ১০০ বার পড়িলে গুনাহ মাফ
হয়,যাবতীয় অভাব দূর হয় ও সুখে বাস করা যায়।,ইয়া গাফফারু ইগফির লী যুনুবী, পাঠ করিলে গুনাহ মাফ হয়. অর্থঃহে অপরাধ ক্ষমাকারী!আমার অপরাধ ক্ষমা কর।
ইয়া কাহ্হারঃ
الْقَهَّارُ
-ক্বহ্হার, দমনকারী।
সর্বদা এই নাম যিকির করিলে সংসারের মায়া মমতা দূর হয়,
আল্লাহ্ ব্যতীত কাহারও খেয়াল মনের মধ্যে থাকে না এবং শত্রুর উপর প্রভাব বিস্তার করা যায়।
ইয়া ওয়াহ্হাবুঃ
الْوَهَّابُ
-ওয়াহ্হাব ,স্থাপনকারী।
চাশত নামাযের পর সেজদায় যাইয়া এই পবিত্র নাম ১০০ বার
পাঠ করিলে ধন ও প্রতাপের অধিকারী হওয়া যায়।মধ্য রাত্রে নির্জন ঘরে কিংবা মসজিদে খালি মাথায়
বসিয়া হাত উঠাইয়া এই পবিত্র নাম ১০০ বার পড়িলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়।
ইয়া রায্যাকুঃ
الرَّزَّاقُ
-আর-রযযাক্, প্রদানকারী,রিযিক দান কারী।
ফজরের নামাযের পূর্বে এই নাম ঘরের প্রত্যেক কোনে ১০ বার
করিয়া পড়িলে অভাব দূর হয়।
ইয়া ফাওাহুঃ
الْفَتَّاحُ
-ফাত্তাহ়্,প্রারম্ভকারী, বিজয়দানকারী।
ফজরের নামাযের পর বুকের উপর হাত রাখিয়া ৭ বার এই নাম
পড়িলে মনের কালিমা দূর হয় সকল কাজ সহজসাধ্য হয়,অভাব দূর হয় ও ভাগ্যের উন্নতি হয়।
ইয়া আলীমুঃ
الْعَلِيمُ
-আলীম সর্বজ্ঞানী, সর্বদর্শী।
এই পবিত্র নামটি সর্বদা যিকির করিলে জ্ঞান বৃদ্ধি পায়,গোনাহ মাফ হয় ও মনের কপাট খুলিয়া যায়।
ইয়া কাবিদুঃ
الْقَابِضُ
-ক্ববিদ় ,নিয়ন্ত্রণকারী, সরলপথ প্রদর্শনকারী।
৪০ দিন পর্যন্ত এই নাম রুটির প্রথম লোকমায় লিখিয়া খাইলে জীবনে কখনও ক্ষুধায় কষ্ট পাইবে না।
জীন ভূতের আছর ও যাদুর আক্রমণ হইতে রক্ষা পাওয়া যায়।
ইয়া বাসিতুঃ
الْبَاسِطُ
-বাসিত , প্রসারণকারী।
জোহরের নামাযের পর হাত উঠাইয়া এই পবিত্র নামটি ১০ বার
পড়িয়া হাত মুখের উপর মালিশ করিলে কখনও অন্যের মুখাপেক্ষী হইবে না এবং রুজিতে বরকত হইতে থাকিবে।
ইয়া খাফিদু
الْخَافِضُ
-খ়¯ফিদ় , (অবিশ্বাসীদের) অপমানকারী।
৫০০ বার এই নাম পড়িলে মনের বাসনা পূর্ণ হয় এবং ৭০০ বার পড়িলে
শত্রুর অপকার হইতে রক্ষা পাওয়া যায়।
ইয়া রাফিউঃ
الرَّافِعُ
-ঢ়¯ফি, উন্নীতকারী।
দিনে ও রাতে শুইবার সময় এই পবিত্র নামটি ১০০ বার পড়িলে
সকল বিপদাপদ হইতে রক্ষা পাওয়া যায় সম্মান লাভ হয়। ৬০০ বার পড়িলে অত্যাচারীর হাত হইতে
রক্ষা পাওয়া যায়।
ইয়া মুইযয়ুঃ
الْمُعِزُّ
-মুইয্ব , সম্মানপ্রদানকারী ।
সোমবার ও শুক্রবার নামাযের পর এই পাক নাম ৪০ বার পড়িলে
সংসারে প্রতাপশালী হওয়া যায় এবং সকলের নিকট সম্মান লাভ করা যায়।
ইয়া মুযিল্লুঃ
الْمُذِلُّ
-মুঝ়িল , সম্মানহরণকারী ।
নামাযের পর সেজদায় গিয়া ৭৫ বার এই পাক নাম পড়িয়া আল্লাহ্র
নিকট প্রার্থনা করিলে শত্রুতা হইতে রক্ষা পাওয়া যায়।
ইয়া সামীউঃ
السَّمِيعُ
-সামী,সর্বশ্রোতা।
বৃহস্পতিবার চাশত নামাযের পর কাহারও সহিত কথা না বলিয়া এই পাক নাম ৫০০ বার পড়িয়া যে দোয়া করিবে
তাহা কবুল হইবে।
ইয়া বাছীরঃ
الْبَصِيرُ
-বাসী়র ,সর্বদ্রষ্টা।
জুমার নামাযের সুন্নত ও ফরযের মধ্যে এই পাক নাম ১০০ বার পড়িলে আল্লাহ্র নিকট আদরণীয় হইবে,দৃষ্টিশক্তি
তীক্ষ্ণ হইবে এবং সৎ কাজ করিবার সাহস,শক্তি ও ইচ্ছা পাইবে।
ইয়া হাকামুঃ
الْحَكَمُ
-হা়কাম ,বিচারপতি
কোন কঠিন কাজ উপস্থিত হইলে এই পাক নাম যিকির করিলে কাজ সহজসাধ্য হইবে।রাত্রে এই পাক নাম যিকির
করিলে মনের পবিত্রতা লাভ হয়।
.ইয়া লাত্বিফুঃ
اللَّطِيفُ
-লাতীফ, অমায়িক।
অযু করিয়া এই পাক নাম ৪০০ বার পাঠ করিলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়,সকল কাজ শান্তিতে সুসম্পন্ন হয়।অবিবাহিত
মেয়ে এই নাম যিকির করিলে বিবাহের বন্দোবস্ত হয়।দৈনিক ১৩১ বার পড়িলে রুজিতে বরকত হয় ও রোগের উপশম হয়।
ইয়া খাবীরুঃ
الْخَبِيرُ
-খবীর, সম্যক ।
এই পাক নাম সর্বদা পড়িলে খারাপ ভাব ও খারাপ চিন্তা দূর হয়।৭ দিন পর্যন্ত অনবরত পড়িলে
অনেক বাতেনী তত্ত্ব অবগত হওয়া যায়।কোন খারাপ লোকের চক্রান্তে পড়িলে এই পাক নাম অনেক বার পড়িলে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। অবগত।
ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অন্যান্য নামের আমল কিতাবে উল্লেখ আছে ,,,,,
★★কুরআন হাদীস থেকে এই নাম গুলো দিয়ে বিশেষ পদ্ধতির এই আমল গুলো বর্ণিত নেই।
তবে এগুলো কিছু বুযুর্গানে দ্বীনদেরপরিক্ষিত আমল।
এসব আমল সম্পর্কে শরীয়তের নীতিমালা হলো ইবাদতের নিয়তে না করে,এবং জরুরী মনে না করে যদি চিকিৎসার নিয়তে এসব আমল করে,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
জায়েজ আছে।
,
আল্লাহ তায়ালা চাহেন তো তার মনের নেক মাকসাদ পূর্ণ হবে,ইনশাআল্লাহ