ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
তালাকের কথা
চিন্তা করল কিন্তু সে শব্দ করে উচ্চারন করল না, বা তার
জিহবা নড়ল না, অর্থাৎ সে মনে
মনে বলল, তাহলে তালাক পতিত হবে না। কারণ শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও
চেতনা) আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ
رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ
تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ
أَوْ تَكَلَّمْ
".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা)
মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ
বুখারী ২৫২৮)
অপর এক হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ
وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও
বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ২০৪৩]
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ
ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে
(১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর
প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو
الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت
لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها
وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم
অর্থাৎ, এর ঔষধ
একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু
সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত
লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী
কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে
তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।
এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا
قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্
পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة
‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের
বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ )
ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من
التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা
সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. না, প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে কোনো তালাক হবে না। এটা তার ওয়াসওয়াসা রোগ। আর ওয়াসওয়াসার কার্যকরী
চিকিৎসা হল, একে
সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে
কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)
২. না, স্বামীকে
এই অধিকার আর ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।
৩. না, এতে আপনার
বৈবাহিক জীবনে কোন সমস্যা হবে না।