আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
207 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাজ। আমি কয়েকদিন আগে এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখি। এক পর্যায়ে আমার পরিবারের একজন সদস্যকে দেখি বিপদে পড়তে এবং সেই মুহূর্ত টাই ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। এবং স্বপ্নের শেষ মুহূর্তে দেখি যে, কেউ একজন (আমার ইয়াদ নেই তিনি কে) আমাকে বলছেন- আল্লাহ তাআলা এত বড় বিপদ থেকে হেফাজত করেছেন তার জন্য তুমি ৪০ রাকাত নফল সালাত আদায় করো। আমি ২০ রাকাতের কথা তাকে বলায় তিনি বললেন- আরে! আল্লাহ প্রতিনিয়ত যে নিয়ামাহ গুলোর মধ্যে আমাদের রাখছেন তার জন্যই তো ২০ রাকাত পড়া উচিত৷ আর এদিকে তোমাদের আল্লাহ কত রহম করেছেন। তুমি ২০ রাকাতের কথা বলছো!

অথবা এরকম দেখেছিলাম যে, লোকটি আমাকে ২০ রাকাতের কথা বলেছিলেন, আর আমি উপরোক্ত কথাগুলো অর্থাৎ, আল্লাহর নিয়ামাহর কথা তুলে ধরে তা ৪০ রাকাত পর্যন্ত বলেছি আল্লাহু 'আলাম। আমার ঠিক মনে নেই।

এখন আমি ঘুম থেকে জেগে উঠে যখন বুঝলাম তা স্বপ্ন, তখন নিয়ত করলাম ১২ রাকাত নফল সালাত পড়ব আর কিছু টাকা সাদাকাহ করব। তখন স্বপ্নের রাকাতের কথা মনে ছিল না। পরবর্তীতে মনে হওয়ায় প্রশ্ন জাগছে, স্বপ্নে যত রাকাতের কথা উল্লেখ ছিল অর্থাৎ ৪০ রাকাতই কি আমি পড়ব নাকি পরবর্তীতে আমার ঠিক করা ১২ রাকাত পড়লে কোন সমস্যা নেই? আমি অনেকটা কনফিউশানে আছি উস্তাজ। দয়া করে জানাবেন।

আরেকটি প্রশ্ন# বুখারী (রঃ) এর রচিত বই "আল-আদাবুল মুফরাদ" বইটিতে একটি জায়গায় লিখা আছে-
*আবু ওয়ায়েল বর্ণনা করেন যে, হযরত আবূ নুহায়লাকে বলা হইল যে, আল্লাহর দরবারে দু'আ করুন! তিনি (দু'আচ্ছলে) বলিলেনঃ প্রভু,………আমার মাতাকে বেহেশতের বড় বড় সুন্দর চোখ বিশিষ্ট হুরদের অন্তর্ভুক্ত করুন।*

উস্তাজ এইটা কি অথেনটিক? বেহেশতে যে মহিলারা যাবে তাদের মর্যাদা হুরদের থেকে বহুগুণ বেশি, তারা হবে হুরদের সর্দারনি। যেখানে হুরদের থেকে বেশি মর্যাদা দেয়া হয়েছে সেখানে হুরদের মতো মর্যাদা চাওয়া কতোটা যুক্তিযুক্ত? এভাবে কি নিজেদের জন্য/নিজেদের মা-বোনদের জন্য দোয়া করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (677,160 points)
edited by
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
জবাবঃ-


(০১)
ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নটি অনেক ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। এই স্বপ্নের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন।
 
তবে যে আপনাকে  নামাজ পড়তে আদেশ করা হয়েছে,এটি পালন করা আপনার উপর আবশ্যক নয়।

কেননা স্বপ্ন দ্বারা শরীয়তের  কোনো বিধান আবশ্যক হয়না।  

আপনই চাইলে নামাজ না পড়তে পারেন,এক রাকাতও না পড়লে আপনার কোনো সমস্যা হবেনা।

আপন যে পরবর্তীতে নিয়ত করেছেন,এগুলো পুরন করাও আবশ্যকীয় নয়।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ ، عَنْ أَبِي نُخَيْلَةَ ، قِيلَ لَهُ : " ادْعُ اللَّهَ ، قَالَ : اللَّهُمَّ انْقُصْ مِنَ الْمَرَضِ ، وَلا تَنْقُصْ مِنَ الأَجْرِ ، فَقِيلَ لَهُ : ادْعُ ، ادْعُ ، فَقَالَ : اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ الْمُقَرَّبِينَ ، وَاجْعَلْ أُمِّي مِنَ الْحُورِ الْعِينِ " .

আবু নুহায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তাকে বলা হলো, আল্লাহর নিকট দোয়া করুন। তিনি বলেন, হে আল্লাহ! রোগ কমিয়ে দিন, কিন্তু সওয়াব কমাবেন না। তাকে বলা হলো, আরো দোয়া করুন, আরো দোয়া করুন। তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! আমাকে আপনার নৈকট্য লাভকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আমার মাকে আয়তলোচনা হূরদের অন্তর্ভুক্ত করুন।
(আল আদাবুল মুফরাদ ৫২৬)

★এখানে হূরদের অন্তর্ভুক্ত করার দোয়া থেকে উদ্দেশ্য হলো হুররাও যেহেতু জান্নাতী,তো তার মা ও যেনো জান্নাতী হোন।
হুররাও যেমন দেহ বিশিষ্ট, তার মা ও যেনো  এমন দেহ বিশিষ্ট হোন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (9 points)
উস্তাজ আমি কি নিজের জন্য, নিজের মা-বোনদের জন্য এই দোয়া করতে পারবো? যেটা আবু নুহায়লা (রহঃ) করেছেন? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...