ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
চার মাযহাবের সিদ্বান্ত মতে বিনা অজুতে কোরআন শরীফকে স্পর্শ করা যাবে না।
হাদিস শরীফে এসেছে
- مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ أَنَّ فِي الْكِتَابِ الَّذِي كَتَبَهُ رَسُولُ اللهِ لِعَمْرِو بْنِ حَزْمٍ: أَنْ لاَ يَمَسَّ الْقُرَآنَ إِلاَّ طَاهِر،
ٌ،)رقم الحديث 680(
তরজমাঃ- হযরত আমর ইবনে হযম রাঃবলেন,ঐ কিতাব যা আল্লাহর রাসুল সাঃ আমর ইবনে হযমের সাথে নাজরান প্রেরণ করছিলেন তাতে এটাও তিনি লিখে দিয়ছিলেন যে, কোরআনকে প্রবিত্রতা ব্যতীত কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।
উক্ত হাদিস দ্বারা সুরা ওয়াকেয়ার ৭৯ আয়াতের ব্যখ্যাও সুনির্দিষ্ট হয়ে গেল।যেখানে আল্লাহ তা'য়ালা বলেন,
ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻘُﺮْﺁﻥٌ ﻛَﺮِﻳﻢٌ
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍ ﻣَّﻜْﻨُﻮﻥٍ
যা আছে এক গোপন কিতাবে,
ﻟَّﺎ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
ﺗَﻨﺰِﻳﻞٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
উক্ত আয়াত থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে কোরআনকে বিনা অজুতে স্পর্শ করা যাবেনা।
তবে কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম(যেমনঃইবনে কাছির রহ) এখানে ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ দ্বারা ফেরেশতা উদ্দেশ্য নিয়ে থাকেন।এবং এ অর্থ নিয়ে থাকেন যে,"কোরআনকে লওহে মাহফুজে থাকাকালীন সময়ে পবিত্র সত্বা অর্থাৎ ফেরেস্তাগণ ব্যতীত অন্য কেউ(জিন,শয়তান) স্পর্শ করতে পারে নাই"
তাদের উক্ত উক্তির জবাব হচ্ছে,
যদি ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ শব্দ দ্বারা ফেরেশতাগণ উদ্দেশ্য হয়ে থাকেন, তাহলে এর সোজা অর্থ হল ফেরেশতাগণ পবিত্র এবং পবিত্র হওয়ার ধরুণ একমাত্র তারাই লওহে মাহফুজে কোরআনকে স্পর্শ করতে পেরেছেন,সুতরাং পৃথিবীতেও শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তি কোরআনকে স্পর্শ করতে পারবে যে পবিত্র। অন্যদিকে কোরআনকে বিনা অজুতে স্পর্শ করা যাবেনা মর্মে হুকুমটা সমস্ত সাহাবা- তাবেঈনদের কাছে এমনভাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল যে প্রায় ইজমার কাছাকাছি ছিল।
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
পকেটে এমন অবস্থায় কুরআন রাখতে হবে, যাতেকরে কুরআনের কোনো বে-হুরমতি না হয়। কুরআন পকেটে থাকলে সর্বদা অজু অবস্থায় থাকতে হবে। এবং কুরআনকে বস্তোনি দ্বারা আবৃত করে রাখতে হবে। যদি সফর দীর্ঘ হয়, তাহলে কুরআন পড়ার স্বার্থে কুরআনকে ভালভাবে বস্তোনি দ্বারা আবৃত করে নিয়ে সফর শুরু করা যাবে। যদি কুরআনকে ভালভাবে কভার দ্বারা আবৃত করে রাখা হয়, তাহলে তখন কুরআনকে সাথে করে নিয়ে সফর করা যাবে। এবং উক্ত কভার বা বস্তোনি সম্ভলিত কুরআনকে তখন বিনা অজুতে রাখা যাবে।