ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
ফাতাওয়ায়ে শামিতে এসেছেঃ
قال العلامة الحصکفي رحمه الله تعالی: "و کل عضو لا یجوز النظر إلیه قبل الانفصال، لا یجوز بعده و لا بعد الموت، کشعر عانة و شعر رأسها". ( الشامیة ٦ / ٣٧١ )
সারমর্মঃ
যেস সমস্ত অঙ্গর হুকুম হলো শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পূর্বে তার দিকে নজর দেওয়া জায়েজ নেই, সে সমস্ত অঙ্গ শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর,মারা যাওয়ার পরেও তার দিকে নজর দেওয়া জায়েজ নেই।
যেমন মাথার চুল,নাভির তলদেশের চুল।
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে টয়লেট এ অথবা খোলা জায়গায় চুল ছেড়ে গেলে যেহেতু গায়রে মাহরাম কোনো পুরুষ এর দেখার সম্ভাবনা রয়েছে,তাই এটি জায়েজ হবেনা।
এখান ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বলতে কেউ সেই চুল নিয়ে কোনো জাদু ইত্যাদি করে ক্ষতি করতে চাইলে করতে পারে।
এমন কোনো ব্যাক্তি না থাকলে এ ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
টয়লেটের প্যানে দিলে ক্ষতির বিষয় কিছু হাকিমগন বলেছেন।
,
সর্বপরি এসব চুল কোনো জায়গায় পুতে ফেলা বা যেখানে ময়লা আবর্জনা নেই,এমন জায়গায় ফেলে দেওয়া উত্তম।
(০২)
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পুরুষদের জন্য করনীয় হলো কোনো নারীর ছবি চলে আসলে সাথে সাথে অন্য দিকে দৃষ্টি দেওয়া।
উক্ত পোস্ট থেকেই অন্য পোস্টে দ্রুত চলে যাওয়া।
অনিচ্ছায় একবার নজর পড়ার পর সাথে সাথে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেওয়া,ইচ্ছাকৃতভাবে নজর না দেওয়া।
,
তবে কেহ যদি নজরের হেফাজত না করতে পারে,প্রতিনিয়ত এহেন গায়রে মাহরামদের ছবি ইচ্ছাকৃতভাবে দেখতেই থাকে,তাহলে তার জন্য এ জগত ছেড়ে দেওয়া উচিত।
কেননা এটিই তাকে প্রতিনিয়ত গুনাহের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।