আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (30 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।
১। হ্যাঁ, আচ্ছা বা ঠিক আছে এইগুলা কি কেনায়া বাক্য হতে পারে? কারন এইগুলা দিয়ে তালাকের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে। কেউ যদি অন্য কারনে এই শব্দগুলো বলতে গিয়ে মনে মনে তালাকের কথা ভেবে ফেলে তাহলে কি তা পতিত হবে??

২।হুজুর কেউ যদি মনে মনে ভেবে ফেলে সে যাই বলবে তাতেই তালাকের নিয়ত যুক্ত হয়ে যাবে বা তালাকের পতিত হয়ে যাবে,  তারপর কোন নিয়ত ছাড়াই কোন কেনায়া বাক্য বললে  বা অন্য কারনে বললেও কি কোন সমস্যা হবে বা পতিত হবে মনে মনে কথাটা বলার কারনে??সে ইচ্ছা করে বলেনি, মনে মনে কথাটা চলে এসেছিল এখন এই কথার কারণে কি নিয়ত ছাড়া কোন কেনায়া শব্দ বললেও নিয়ত যুক্ত হয়ে যাবে??
৩। কোন স্ত্রী যদি বলে তার স্বামীকে নিয়ে তালালকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেয়, মানে স্বামী আগে তাকে ****- না দেওয়া সত্ত্বেও যদি বলে তার স্বামী তাকে ****** দিয়েছে তাহলে কি ওই মহিলার উপর -**** পতিত হয়ে যাবে কিনা?? স্বামী মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেয়নি বা জানেও না স্ত্রী এই কথা অন্য কারোর কাছে বলেছে।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিতসুচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

(০১)
""হ্যাঁ, আচ্ছা বা ঠিক আছে""
এগুলো প্রশ্নের জবাবে ব্যবহৃত হয়।
এখানে প্রশ্নটি কি?
অর্থাৎ কোন প্রশ্নের জবাবে উক্ত বাক্য বলা হয়েছিলো,সেটি ধর্তব্য।

যদি স্ত্রী প্রশ্নে বলে যে "তুমি আমাকে তালাক দিলা?"
জবাবে যদি স্বামী বলে,হ্যাঁ/আচ্ছা/ঠিক আছে।
তাহলে নিয়ত ছাড়াই তালাক হয়ে যাবে।

আর যদি স্ত্রী স্বামীকে প্রশ্ন করে,আমি একেবারে বাবার বাসায় চলে যাবো?
বা অন্যত্রে বিবাহ বসবো?
তাহলে এর জবাবে স্বামী যদি বলে "হ্যাঁ/আচ্ছা/ঠিক আছে"
তাহলে এটি কেনায়া বাক্যের জবাবে হওয়ায় স্বামীর নিয়তে তালাক থাকলে তালাক হবে,স্বামীর নিয়তে তালাক না থাকলে তালাক হবেনা।

(০২)
না,এতে তালাকের নিয়ত যুক্ত হবেনা।

(০৩)
স্ত্রী যদি স্বামীকে নিয়ে মিথ্যা তালাকের স্বীকারোক্তি প্রদান করে,তাহলে তালাক হবেনা। 

তবে স্ত্রী যদি তালাকের ক্ষমতা পেয়ে স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক প্রদানের মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদান করে,তাহলে তালাক হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...