আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (129 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমার ৩টিপ্রশ্ন

আমি ওয়াসোয়াসার রোগী,আমি ডাক্তারের কাছে মেডিসিন নিতাম মানসিক ডাক্তার পরর ডাক্তার চেঞ্জ করে আরেকজনের কাছে গেছি।উনিও কিছুদিন ট্রিটমেন্ট করেছেন।এখন অনেকটা কমেছে।কিন্তু তালাকের চিন্তা একবার ঢুকে গেলে অনেক কঠিন হয়ে যায় আমার চিন্তাভাবনা।

১,বেশ কিছুদিন পূর্বে আমি আর আমার স্ত্রী সফর করছিলাম।বাস যাত্রাবিরতি এমন এক জায়গায় দেয় যেখানে নারীদের নামাজ ও অযুর জায়গা নাই।এরপরেও অনেক যুদ্ধ করে আমার স্ত্রীকে এক সাইডে অযু করাচ্ছিলাম।এত সংকীর্নতায় অযু করতে গিয়ে স্ত্রী অনেক জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছিল,সে আমাকে বলে বসে তুমি অনেক কষ্ট দিচ্ছ আমাকে, আমার তখন অনেক রাগ লাগে।আমি তখন বলি, তোমার কি মনে হয় তোমাকে জোর করছি আমার জন্য? না তোমার জন্য? ঠিক আছে, এরপর থেকে নিজের টা নিজেই খুজে নিবা/নিজের কাজ নিজে করবা/নিজেরটা নিজে করবা/নিজেরটা নিযে দেখবা

সাধারণত এসব কথা বলার সময় হুট করে তালাকের চিন্তা মাথায় আসে(বা কোনো এক সত্তা/জ্বীন শয়তান আমাকে তালাকের কথা মনে করায়া দেয়)

আমার আমি তখন কথা বলা থামায়া দিয়ে একমুহুর্ত ভাবি যে আমি তালাকের নিয়তে এটা বলছিনা এরপর কথা বলি।কিন্তু তখন আমার এত রাগ লাগছিল যে আমি দম নেবার পরেও আমার বলাটা থামাতে পারিনি,রাগের বশে উক্ত কথা বলি এমন ভাবনা রেখে যে 'তালাকের নিয়াতটা একটু আগে যেটা মাথায় আসছে সেটা হলে হোক তবু আমি এই কথা বলব'।বাহ্যিক ভাবে উক্ত কথার মিনিং এটা হতে পারে যে নিজের অযুর কাজ বা নিজের ইবাদাতের ব্যাপারস্যাপাএ নিজে বুঝবা।কিন্তু এখানে তালাকের চিন্তা কতটুক বা সম্পূর্ণ চিন্তা ছিল কিনা মনে করতে পারছিনা,সন্দেহ লাগছে।তবে তালাকেএ চিন্তা এসেছিল এটা নিশ্চিত,যদিও আমি কখনো চাইনা তালাক হোক।কিন্তু রাগ এসে গেলে মাথায় ওমন চিন্তা আসে।

এখানে একটি বিষয় তা হল,যে আমি যখন স্ত্রীকে বলতে উদ্যত হই, 'নিজের টা নিজে বুঝ /এরপর থেকে নিজের নামাজ অযু নিজে বুঝবা',তখন আমার মাথায় তালাকের চিন্তা উপরোক্ত বর্ণিত মোতাবেক আসে,আমি একটু দম নিলেও এতটা রাগ লাগে যে আমি উক্ত নিয়ত নিয়ে বা নিয়তের রেশে বলেই ফেলি।('যে আমি তাকে ইবাদাত করতে এত সাহায্য করি,আর সে আমাকে এভাবে বলে,আমি যদি না থাকি,আমি এখন থেকে আমি আর তার ধার ধারবনা তার চিন্তা করবনা তার দায়িত্ব আমার নাই তালাক সে কিভাবে কি করে দেখা যাবে', আমি কথাটা শুরু করতে চেয়েছিলাম খুব সম্ভব এই নিয়াতে যে, 'আমি আর হেল্প করবনা নিজের টা নিজে কর'(তালাকের নিয়ত ছাড়া)। বলতে শুরু করার আগেই আমার মাথায় তালাকের নিয়াত আসে যেটা সম্ভবত উপোরক্ত টাইপ নিয়ত।এরপর একটু দম নিয়েও নিজেকে চুপ থাকতে না পেরে উক্ত কথা বলে ফেলি।যেহেতু আগ মুহুর্তে তালাকের নিয়াত মাথায় কেউ(শয়তান)ঢুকে দেয় তার পর উক্ত কথা বলি আর সাথে রাগ ও থাকে,তাই কথা গুলা সেই নিয়তের রেশ ধরে রাগ বশত হয়ে যায়। তারপর অসহায় লাগে যে কথাটা শতভাগ তালাকের নিয়তে হয়ে গেল কিনা।
এসব বেশ অনেকদিন পূর্বের,এখন লিখতে বসে মনে হচ্ছে তখন এরকম তালাকের নিয়তে হয়ত বলিইনি, নরম্যাল চিন্তা বা নিয়তে বলেছি যে নিজের অযু নামাজ এসব নিজে ম্যানেজ করবা,তুমি এসব ঠিকঠাক করতে পারলা কি না এসব আর আমি ভাবব না, এসবের পিছনে টাইম ও দিবনা, কেয়ার ও করবনা।কিন্তু তালাকের নিয়তে না।

এগুলা মাত্র ১/২ সেকেন্ডের মাঝে মাথায় আসে বা কেউ মনে করাই দেয়।(এর আগে পরে তালাকের নিয়ত একদম ই থাকেনা।)যাহোকএরপর অনেক সময় রাগ বশত পরের কথা বলে যাই।এখনসেই ক্ষুদ্র সময়ে ও রাগ বশত সেইনিয়তের রেশে পরের কথা বলতে আসলে কি নিয়ত থাকে বা শতভাগ থাকে কিনা এসব আমার মাথায় স্থির ভাবে ভাবতে পারিনা।এই মনে হয় হয়ত শতভাগ নিয়তে বলেছি এই মনে হয়না না বলিনি শতভাগ নিয়তে ।

উপরোক্ত সমস্ত বর্ণনা  আমার স্মৃতিতে যতটুকু খেয়াল আছে তার উপর বলা



এখন আমার কি এসবে তালাক পড়বে? পড়লে কত তালাক পড়বে।আর কেউ তালাকের আংশিক নিয়তে তালাক দিলে শতভাগ নিয়তে নয়।(শতভাগ অর্থ ১/২/৩ তালাক নয় বরং নিশ্চিত বা নিয়তের ক্ষেত্রে) তালাক হবে কিনা।।

২,কেউ যদি স্ত্রীকে বলে তালাকের নিয়তে এখন থেকে তোমার সাথে আমার সম্পর্ক নাই বা নিজের রাস্তা নিজে মাপো তাহলে কত তালাক পড়বে?এখানে কত তালাক তা নিয়ত করেনি

৩, প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে কেউ যদি বলে, 'হুজুর যদি আমি বলি আমি বলেছি আমার স্ত্রী তালক তাহলে কি তালাক হবে?',কিন্তু আদতে সে বলেইনি এমনি মজা করার জন্য প্রশ্ন করেছে?

1 Answer

+1 vote
by (709,320 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
তালাকের ওয়াসওয়াসা দ্বারা তালাক হয় না।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1379

সু-প্রিয় প্রশ্নকারি দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
আপনি উক্ত প্রশ্নটি ইতুপূর্বেও করেছেন, তখনও আমরা জবাবে বলেছিলাম, এভাবে তালাক হয় না।

"আমি তখন বলি, তোমার কি মনে হয় তোমাকে জোর করছি আমার জন্য? না তোমার জন্য? ঠিক আছে, এরপর থেকে নিজের টা নিজেই খুজে নিবা/নিজের কাজ নিজে করবা/নিজেরটা নিজে করবা/নিজেরটা নিযে দেখবা"

এসব শব্দ কেনায়া তালাকের শব্দ নয়, সুতরাং তালাকের নিয়ত থাকলেও তালাক হবে না।

(২)
কেউ যদি স্ত্রীকে বলে তালাকের নিয়তে এখন থেকে তোমার সাথে আমার সম্পর্ক তাহলে কেনায়া তালাক পতিত হবে।স্বামী যত তালাকের নিয়ত করবে, তত তালাকই পতিত হবে।স্বামীর কোনো নিয়ত না থাকলে সর্বশেষ এক তালাক পতিত হবে। নিজের রাস্তা নিজে মাপো,এই শব্দ দ্বারা তালাক পড়বে না। কেননা এটা কেনায়া তালাকের শব্দ নয়।

(৩)
প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে কেউ যদি বলে, 'হুজুর যদি আমি বলি আমি বলেছি আমার স্ত্রী তালাক, কিন্তু আদতে সে কিছুই বলেনি, তাহলে এমতাবস্থায় কোনো তালাকই পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...