আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
218 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, শাইখ 

 

১/ আমার আব্বু কয়েক মাস আগে তার রবের কাছে চলে গেছেন। 

এর মাস দুয়েক পর আমার আম্মুর এক বান্ধবী জানায় তিনি নাকি আব্বুকে স্বপ্নে দেখেছেন। আব্বু নাকি উনাকে স্বপ্নে বলেছেন যে, " [আমার আম্মুর নাম ধরে] সে এত কান্নাকাটি করে কেন? তাকে বলবা সে যেন এত না কাদে।"

উল্লেখ্য: আব্বুর যাওয়ার পর থেকে আম্মু প্রচন্ড বেশি কান্নাকাটি করে। নামাজের পর দুয়ার সময় তো আছেই আর এমনিতেই অন্যান্য সময়ও। 

 

২/ আব্বুর সাওয়াবের নিয়তে আমরা গ্রামের মসজিদের নির্মাণকাজে কিছু টাকা সদকা করেছিলাম। কাজ তখন চলছিলো। আমার এক ফুফু [আপন না] স্বপ্নে দেখেছে, আব্বু মসজিদের সামনে সাদা পাঞ্জাবী-টুপি পরে দাঁড়িয়ে আছে। এরপর সেই ফুফু আব্বুকে জিজ্ঞেস করছে, ভাই আপনি এখানে? কেমন আছেন এখন? [আব্বু আগের ৬ মাস খুব অসুস্থ ছিলো] আব্বু উনাকে বলছে, মসজিদ বানাচ্ছে তো তাই দেখতে এলাম। 

 

৩/ আমার আপন চাচা স্বপ্নে দেখেছে যে, আব্বু সাদা পাঞ্জাবী-টুপি পরে একটা কুরআন শরীফ বুকে নিয়ে উনাদের বাসায় আসছে। এরপর উনাকে বলছে এই কুরআন শরীফের শেষে একটা পৃষ্ঠা ছিলো কই সেটা? [এইটা আব্বুর কুরআন, এই স্বপ্ন দেখার পর আব্বুর কুরআনটা আমরা সদকা করে দিই] 

 

৪/ আমি একদিন স্বপ্নে দেখি, আব্বু আমাদের ড্রয়িং রুমে বেডের উপর আমার পাশে বসে আছে। আমি আব্বুকে বললাম, আব্বু এখন কেমন আছেন?  উনি বললেন, আমি তোমার বিয়ে নিজের চোখে দেখে তারপর মারা যেতে চাই।

অসুস্থ অবস্থায় আব্বুর শরীর অনেক শুকিয়ে গিয়েছিলো। অথচ স্বপ্নে দেখেছি আব্বু একেবারে সুস্থ। সাধারণ অবস্থায় যেমন ছিলো ঠিক তেমন। 

 

এই স্বপ্নগুলো ব্যাখ্যা কি হবে? শাইখ 

1 Answer

0 votes
by (672,120 points)
উত্তর
وعليكمالسلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,
হাদীস শরীফে এসেছে  
خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
۔
.
★প্রিয় দ্বীনি ভাই আপনি যতগুলো স্বপ্নের কথা লিখেছেন,সবগুলোই আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো খবর।
যেহেতু এটা ভালো স্বপ্ন,তাই আল্লাহর শুকরিয়া স্বরুপ আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৫/৫৫৩)
,

হাদীস শরীফে এসেছে  
عن أبي سعید الخدري رضي اللّٰہ عنہ أنہ سمع النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم یقول: إذا راٰی أحدکم الرؤیا یحبہا، فإنما ہي من اللّٰہ، فلیحمد اللّٰہ علیہا، ولیحدِّثْ بما راٰی، وإذا راٰی غیر ذٰلک مما یکرہ فإنما ہي من الشیطان، فلیستعذ من شرہا ولا یذکرہا لأحد؛ فإنہا لا تضرہ۔ (صحیح البخاري، کتاب التعبیر / باب الرؤیا من اللّٰہ ۲؍۱۰۴۳ رقم: ۶۹۸۵ دار الفکر بیروت)

রাসুল সাঃ বলেন তোমাদের কেহ যদি ভালো স্বপ্ন দেখে,তাহলে সেটা আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সুতরাং তোমরা সেই স্বপ্নের কারনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো।,,,  


★★উল্লেখ্য যে আপনার বাবাকে নিয়ে আপনারা সকলেই বেশি টেনশন করতেছেন,তাই হয়তোবা এসব স্বপ্ন দেখেছেন। 
,
সময় সুযোগ মোতাবেক আপনার বাবার জন্য দোয়া ছওয়াব রেসানী অব্যাহত রাখবেন,সুবিধা মোতাবেক  সামর্থ থাকলে মাঝে মসজিদ মাদ্রাসা,গরিব মিসকিনদেরকে দান করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...