আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
edited by
১)আমি যদি মনে করি,"ঠিক মত না পড়লে আমি বুয়েটে চান্স পাব না,'"

তবে কি শিরক হবে??
২)ধরুন কোনো ছেলে শিরক করল তারপর তার বাবা তাকে বলল যদি সে শিরক থেকে ফিরে না আসে তবে তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হবে। এরপর সে কালেমা পরে মুসলিম হল এবং তওবা করল।তবে যে আসলে শুধু সম্পদের লোভে তওবা করছে তা না। যদি সম্পত্তির না দিত তবুও সে আল্লাহর ভয়ে শিরক থেকে ফিরে আসত,এরকম মন মানসিকতা তার। তার তাওবা কবুল হবে বলে আশা করা যায়?? .
সে কি ওই সম্পত্তি গ্রহণ করতে পারবে??

৩)যখনই কোনো বিষয়ে সন্দেহ হয় যে হয়তোএটা শিরক, সাথে সাথে আমি সেই কাজ বাদ দিয়ে দিই।

কিন্তু সেদিন আমার অনেক পছন্দের একটা কাজ করছিলাম, তখন মনে হলো এটা কি শিরক? সন্দেহ হওয়ার পরেও আমি সেই কাজ বাদ দিলাম না। আমার এই মনোভাব কি শিরক??

৪)শিরক করে দুঃখিত না হওয়াও কি শিরক???

৫)একজন লোক শুনছেন যে যদি কোন বিবাহিত মুসলিম শিরক করে তবে তার স্ত্রীর সাথে তালাক হয়ে যায়।
তাই সে সবসময় শিরক থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে। তার এই মনোভাব কি শিরক??.
শিরক থেকে বিরত থাকতে হবে আল্লাহর জন্য। কিন্তু সে তো অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে শিরক থেকে বিরত থাকছে।

তার এই মনভাব কি শিরক???

৬)ধরুন কোনো ব্যক্তি বাথরুমে ঢোকার পর তার মনে পড়েছে সে পূর্বের জীবনে কোন শির্কে আকবার করেছে।

এখন সে সাথে সাথে বাথরুম থেকে বের হয়ে গিয়ে তওবা করবে নাকি বাথরুমের ভেতরেই তওবা করবে ??
নাকি নিজের প্রয়োজন শেষ করে বের হয়ে তারপর তাওবা করবে??

৭)ধরুন,কোন ব্যক্তি শুধু শিরক থেকে বিরত থাকে। অন্য কবিরা গুনাহ করে।
এই মনভাব কি শিরক??

৮)সেদিন ইউটিউব চালাচ্ছিলাম।

 হঠাৎ একটা কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত আসলো।
আমি ওই তেলাওয়াত না শুনে অন্য ভিডিও দেখছিলাম।

এতে কি শিরক হবে??

৯)সেদিন ইউটিউব চালানোর সময় "আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস" নামক একটি ভিডিও সামনে আসলো।

আমি সেটা স্কিপ করে "স্ত্রীর অধিকার" নামক একটি ভিডিও দেখা শুরু করলাম।
এতে কি শিরক হবে??

১০)সাধারণত আমি গোসল এর সময় সারা শরীরে সাবান লাগাই

কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলি।

কিন্তু লজ্জাস্থানের ত্বক পাতলা হওয়ায় আমার মনে হয়,বেশিক্ষন সাবান রাখলে হয়তো ক্ষতি হবে।।যদিও এমন কোন প্রমান আমি পাই নি।

এই আশংকায় আমি লজ্জাস্থানে সাবান লাগানোর সাথে সাথে ধুয়ে ফেলি।
এই যে কোন প্রমান ছাড়া আমি আশংকা করি যে লজ্জাস্থানে বেশিক্ষন সাবান রাখা যাবে না,আর তাই সাথে সাথে ধুয়ে ফেলি, এটা কি শিরক???

১১)ধরুন একটা ছেলের স্কুলে একটা পুরনো বটগাছ আছে। সে একদিন ওই গাছের সামনে গিয়ে সিজদা দিল,দুয়া করল।মানে শিরক করল।এরপর সে তাওবা করল।আর শপথ করল,যদি কখনো স্কুলে আর কোন শিরক করে,তবে স্কুল যাওয়া বাদ দিয়ে দিবে।

তখন থেকে সে সবসময় সতর্ক থাকে, যাতে স্কুল নিয়ে আর কোন শিরক না হয়,কেননা স্কুল নিয়ে শিরক করলে স্কুল যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে।
সে অন্যভাবে শিরক করা নিয়ে এতটা সতর্ক থাকে না, যতটা স্কুল নিয়ে শিরক এর ব্যাপারে সতর্ক থাকে।।
তার এই মনভাব কি শিরক??

১২)গর্ভাবস্থায় সহবাস জায়েজ সেটা জানি।

কিন্তু যদি গর্ভবতি স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে গেলে সে ব্যাথা পায় আর করতে না চায়,তখন তাকে মারধোর করে, জোর করে করলে কি জুলুম হবে??(করার পর সে অনেক কাদে আর রক্তপাত হয়।)

এভাবে জোর করলে কি স্বামীর গুনাহ হবে???
১৩)স্বামি যদি স্ত্রীকে বিনা কারণে মারে,বা এমন শারীরিক শাস্তি দেয়,যা তার জন্য অনেক কষ্টকর,তবে কি সেই স্ত্রী ইসলামিক আদালতে অভিযোগ করতে পারে? এক্ষেত্রে স্বামীর কি কোন শাস্তি হবে??

(ইস্লামিক আদালত বলতে বুঝাইছি ((খিখি লা ফাত))

১৪)নামাজের সময় নামাজ পড়া বাদ দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করা কি শিরক???
১৫)ধরুন, কারও কুরআনের তিলাওয়াত এর চেয়ে গানের সুর বেশি ভাল্লাগে।সে ইউটিউবে কুরআন তিলাওয়াত শুনছিল।কিছুক্ষণ শুনে আর ভালো না লাগায় সে গান শুনতে শুরু করল।তবে কি শিরক হবে???

১৬)আল্লাহ কে সন্তুষ্ট না করে নিজের মন মত চলা কি শিরক??


১৭)মেঝে তে টুপি পরে গেলে কি তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তুলে রাখা যাবে??
নাকি এতে শিরক হবে??

আমি শুনেছি কোন বস্তুকে সম্মান দেখানো শিরক।

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ
بسم الله الرحمن الرحيم 



শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 

যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা স্পষ্ট ভুল। যে বিষয়ে যতটুকু কমতি আছে তাতে ততটুকু কমতির কথাই বলা উচিত। বাড়াবাড়ি করে বিদআতকে শিরক বলে দেওয়া অথবা তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিপন্থী বিষয়কে তাওহীদের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে শিরক বানিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
,
শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন।
  আল্লাহর কাছে সবচে’ ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ হল শিরক। কুরআন মাজীদে পুত্রের প্রতি লুকমান হাকীমের ওসিয়তগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি নিজ পুত্রকে ওসিয়ত করে বলেন-
وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ  اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.
স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে নিজ পুত্রকে বলেছিল, বৎস! তুমি আল্লাহ্র সাথে শরীক করো না। কেননা র্শিক নিশ্চয় মারাত্মক অবিচার ও পাপ। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৩

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

(০১)
না, এতে শিরক হবেনা।

(০২)
তার তাওবা কবুল হবে বলে আশা করা যায়।
সে ওই সম্পত্তি গ্রহণ করতে পারবে।

(০৩)
এই মনোভাব শিরক নয়।

(০৪)
না,এটি শিরক নয়।

(০৫)
এই মনোভাব শিরক নয়।

(০৬)
সে নিজের প্রয়োজন শেষ করে বের হয়ে তারপর তাওবা করবে।

(০৭)
এই মনোভাব শিরক নয়।

(০৮)
এতে শিরক হবেনা।

(০৯)
এতে শিরক হবেনা।

(১০)
এটি শিরক নয়।

(১১)
এই মনোভাব শিরক নয়।

(১২)
উল্লেখিত ছুরত জুলুমের অন্তর্ভুক্ত।   

(১৩)
হ্যাঁ সেক্ষেত্রে স্ত্রী ইসলামিক আদালতে অভিযোগ করতে পারে। এক্ষেত্রে আদালত বিবেচনা করে স্বামীকে শাস্তি দিবে।

(১৪)
এতে শিরক হবেনা।

(১৫)
এতে শিরক হবেনা।

(১৬)
এতে শিরক হবেনা।

(১৭)
হ্যাঁ তুলে রাখা যাবে।
এতে শিরক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...