উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১) শরীয়তের বিধান হলো গুনাহের কাজে যে ব্যাক্তি সাহায্য সহযোগিতা করছে,তার সহযোগিতাই যদি সেই গুনাহের কাজ কায়েম করতে সরাসরি ভূমিকা পালন করে,তাহলে এমন সহযোগিতা করা হারাম।
পবিত্র কুরআন শরিফে আছেঃ
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}
আরো জানুন
★★সুতরাং কেহ যদি ওয়াই-ফাই কানেকশন নেয়, এথেকে যারা যারা ওয়াইফাই কানেকশান ব্যবহার করে গুনাহের কাজ করবে, তাদের গুনাহের ভার তাকেও নিতে হবে।
এটা হারাম।
,
তাই যারা যারা আপনার ওয়াইফাই ব্যবহার করে,তাদেরকে ব্লক মেরে দিতে।
অন্যের গুনাহের আশংকা থাকার কারনে শুধু নিজেই ব্যবহার করবে,
অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দিবেনা।
এটা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার,সেই কাজ করতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনি আপনার বড় ভাইকে নিষেধ করেছেন,তারপরেও তিনি অন্যদেরকে পাসওয়ার্ড দিয়েছে,এখন যদি এটা আপনার আয়ত্তের মধ্যে থাকে,তাহলে সকলকে ব্লক মেরে দিন।
আর যদি আয়ত্তের মধ্যে না থাকে,তাহলে আপনি আপনার বড় ভাই এবং আপনার অভিভাবকদের কে বলুন যে যেহেতু এই ওয়াইফাই নেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য আমার দ্বীন শিখা,অথচ এ থেকে গুনাহ হচ্ছে,
সুতরাং আমি স্পষ্ট আকারে জানাচ্ছি যে এ থেকে অন্য কেহ গুনাহ করলে সেটার দায়ভার আমার নয়।
আমি নিষেধ করেছিলাম।
,
এর পর থেকে আপনার আর কোনো সমস্যা হবেনা, ইনশাআল্লাহ
,
,তবে আপনার অভিভাবকরা যদি বলে যে এটা শুধু মাত্র তোমার দ্বীন শিখার জন্য নেওয়া হয়েছে,সুতরাং আমরা কেহই এর গুনাহের ভাগিদার হবোনা।
তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভাই এবং যারা যারা এ থেকে গুনাহের কাজ করছে,সকলকেই ব্লক মেরে দিতে হবে,নতুবা লাইন কেটে দিতে হবে।
অন্যথ্যায় তাদের গুনাহের ভার আপনাকে নিতে হবে।
(০২)
সুবহান আল্লাহ তায়ালার নাম।
এর শুরুতে আবদ সব্দটু উল্লেখ করে কাহারো নাম রাখা যাবে।
আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। এর যে কোনো একটির শুরুতে ‘আব্দ’ শব্দটি যোগ করে নাম রাখা যেতে পারে। হাদীস শরীফে আছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رِوَايَةً، قَالَ: لِلهِ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ اسْمًا، مِائَةٌ إِلَّا وَاحِدًا، لاَ يَحْفَظُهَا أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَ الجَنَّةَ، وَهُوَ وتْرٌ يُحِبُّ الوتْرَ
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। এক কম একশ। যে ব্যক্তি তা মুখস্থ করবে সে জান্নাতে যাবে। আল্লাহ তাআলা একক-অদ্বিতীয় (বেজোড়), তাঁর কোনো শরীক (জোড়) নেই। তিনি বেজোড় ভালোবাসেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪১০
পবিত্র কুরআনে সংখ্যা উল্লেখ করা ছাড়াই আসমায়ে হুসনার আলোচনা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
وَ لِلهِ الْاَسْمَآءُ الْحُسْنٰی فَادْعُوْهُ بِهَا وَ ذَرُوا الَّذِیْنَ یُلْحِدُوْنَ فِیْۤ اَسْمَآىِٕهٖ سَیُجْزَوْنَ مَا كَانُوْا یَعْمَلُوْن.
আল্লাহর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। তোমরা এগুলোর মাধ্যমে তাঁকে ডাক এবং যারা তাঁর নামের মাঝে বক্রতা সৃষ্টি করে তাদেরকে পরিত্যাগ কর। তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের প্রতিদান দেয়া হবে। -সূরা আ‘রাফ (৭) : ১৮০
এ আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলার সুন্দর সুন্দর নাম আছে, যা তাঁর বড়ত্ব ও মহত্বে পূর্ণতার প্রমাণ বহন করে। এ সুমহান নামসমূহের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা ও স্মরণ করার আদেশ আমাদেরকে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে যারা আল্লাহর নামের মধ্যে বক্রতা অবলম্বন করে তাদের সংস্পর্শ ত্যাগ করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
উপমহাদেশের বিখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. তার সহজবোধ্য তাফসীরগ্রন্থ মাআরেফুল কুরআনে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় গুরুত্বপূর্ণ কথা লিখেছেন, যার দ্বারা অনুমতি হয়- ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অধিকাংশ মুসলমানই আল্লাহ তাআলার নামের মধ্যে বক্রতা করার গুনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
সূরা আরাফের উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি লিখেন-
“আল্লাহ তাআলার নামের মধ্যে বক্রতা সৃষ্টির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এবং তার বিভিন্ন সূরত, বিভিন্ন রূপ আল্লাহ তাআলার নামের অপব্যাখ্যা ও বিকৃতির কয়েকটি পন্থা হতে পারে। আর এগুলোর সবগুলোই এ আয়াতে বর্ণিত নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত।
প্রথমত : আল্লাহ তাআলার জন্য এমন কোনো নাম ব্যবহার করা, যা কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ব্যাপারে কারো এমন অধিকার নেই যে, যে যা ইচ্ছা নাম রাখবে। কিংবা যে গুণে ইচ্ছা তার গুণকীর্তন করবে। শুধুমাত্র সেসমস্ত শব্দই প্রয়োগ করা আবশ্যক, যা কুরআন ও সুন্নাহতে আল্লাহ তাআলার নাম কিংবা গুণ-ছিফাত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন আল্লাহকে ‘কারীম’ বলা যাবে, তবে সাখী (দাতা) বলা যাবে না। নূর বলা যাবে, কিন্তু ‘জ্যোতি’ বলা যাবে না। ‘শাফি’ বলা যাবে, কিন্তু ‘তবীব’ (ডাক্তার) বলা যাবে না। কারণ, এই দ্বিতীয় শব্দগুলো প্রথম শব্দের সমার্থক হলেও কুরআন-হাদীসে বর্ণিত হয়নি।
বিকৃতি সাধনের দ্বিতীয় পন্থা হল, আল্লাহর যে সমস্ত নাম কুরআন-হাদীসে উল্লেখ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কোনো নামকে অশোভন মনে করে পরিহার করা। এতে সে নামের প্রতি বেআদবী বা অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়।
কোনো লোককে আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত নামে সম্বোধন করা জায়েয নয়।
তৃতীয় পন্থা হল, আল্লাহর জন্য নির্ধারিত নাম অন্য কোনো লোকের জন্য ব্যবহার করা। তবে এখানে ব্যাখ্যা আছে। আসমায়ে হুসনার মধ্যে কিছু নাম এমন আছে, যেগুলো স্বয়ং কুরআন ও হাদীসে অন্যান্য লোকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। আর কিছু নাম রয়েছে, যেগুলো আল্লাহ ব্যতীত অন্যের জন্য ব্যবহার করা প্রমাণিত। সেসব নাম অন্যের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন- রাহীম, রাশীদ, আলী, কারীম, আযীয প্রভৃতি।
পক্ষান্তরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য যেসব নামের ব্যবহার কুরআন-হাদীসে প্রমাণিত নয় সেগুলো একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য ব্যবহার করাই উল্লেখিত ‘ইলহাদ ফী ইসমিল্লাহ’ তথা আল্লাহর নামে বিকৃতি সাধনের অন্তর্ভুক্ত এবং নাজায়েয ও হারাম। যেমন-, রহমান, সুবহান, রাযযাক, খালেক, গাফফার, কুদ্দুস ইত্যাদি। এই নির্দিষ্ট নামগুলো যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ক্ষেত্রে কোনো ভ্রান্ত বিশ্বাসের ভিত্তিতে হয় যে, যাকে এসব শব্দের দ্বারা সম্বোধন করা হচ্ছে তাকেই যদি খালেক (সৃষ্টিকর্তা) কিংবা রাযযাক (রিযিকদাতা) মনে করা হয় তাহলে তা সম্পূর্ণ কুফর। আর যদি ভ্রান্তবিশ্বাসের বশীভূত না হয়ে শুধুমাত্র অসচেতনতা কিংবা না বোঝার দরুন কাউকে খালেক, রাযযাক, রহমান কিংবা সুবহান বলে ডাকে তাহলে তা কুফরী না হলেও শিরকসুলভ শব্দ হওয়ার কারণে কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ভ্রান্তবিশ্বাসের বশীভূত না হয়ে শুধুমাত্র অসচেতনতা কিংবা না বোঝার দরুন কাউকে সুবহান বলে ডাকে তাহলে তা কুফরী না হলেও শিরকসুলভ শব্দ হওয়ার কারণে কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।
,
(০৩) যেই স্কুলে পড়তে গেলে শরয়ী পর্দা করা সম্ভব হয়না,সেই স্কুলে পড়াশোনা করা জায়েজ হবেনা।
(০৪) সামাজিক উন্নয়নের জন্য কোন কাজ করতে যদি কোন মেয়ের কোন গায়রে মাহরামের সাথে যোগাযোগ করার (কথা বলার) প্রয়োজন পড়ে প্রতিনিয়ত, এক্ষেত্রে পুরোপুরি শরয়ী পর্দা নিশ্চিত করে জরুরি কথা বলা যেতে পারে।
(০৫) মায়ের কোনো কর্মের কারণে যদি মেয়ের মনে কোন গুনাহের ফিতনা সৃষ্টি হয়, তাতে মা যেটা করছে,সেটা যদি সত্যিই গুনাহের কাজ হয়ে থাকে,তাহলে মায়ের গুনাহ্ হবে।
তবে সেটা যদি গুনাহের কাজ না হয়ে থাকে,তাহলে সেটার কারনে মেয়ের গুনাহের ফেতনায় পড়ার আশংকা থাকার দরুন সেই কাজটি থেকে মাকে ফিরিয়ে আসতে হবে।