আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
173 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)

আসসালামু 'আলাইকুম

আমি খুবই অনুতপ্ত , চিন্তিত আর লজ্জিত ব্যাপারটার জন্য
তাই আমাকে কোনো মাসআলা দেয়ার অনুরোধ রইলো

আমার মেঝ ভাই তার এক লকারে টাকা জমায় , তো সে যেভাবে টাকা জমায়/জমাচ্ছে (আলহামদুলিল্লাহ) , সেখান থেকে যদি এক হাজার/দুই হাজার নিয়ে নেয়াও হয় তা সে টের পায় না । কারণ , সে অনেক গুলো জমিয়ে তারপর গণনা করে একসাথে , আগে বারবার গণনা করে না ।
তো আমার বিভিন্ন প্রয়োজনে , যখন আমাকে আমার অভিভাবক টাকা দেয় না বা দিবে না এমন ভেবে আমার কাছে যখন কোনো টাকা থাকতো না আমি কোনো এক উপায়ে ভাইয়ের লকারটা খুলে সেখান থেকে টাকা নিয়ে নিতাম , আমার কাছে খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে , এটা চুরি করা (কারণ , কারোর জিনিস তাকে না জানিয়ে ব্যবহার করা/ নিয়ে নেয়া , চুরিই বটে) । এটা সম্ভবত ২০১৬ (সঠিক মনে নেই) থেকে আজ অব্দি করেছি (সবসময় নয় , মাঝে মধ্যে কিন্তু যদি না লাগে তাহলে নেয়া টাকা আবার তারই অগোচরে তার লকারে রেখে দিতাম)
এখন আমি এই কাজের জন্য খুবই অনুতপ্ত , অনুশোচনা আর লজ্জা বোধ করছি আর চু্রির ভয়াবহ শাস্তির কথা চিন্তা করে আরোও চিন্তিত হয়ে যাচ্ছি । আমি যদি ভাইকে ব্যাপারটা বলিও , আমাদের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ও সারাজীবন অবিশ্বাসের ছায়া বিরাজ করবে
আমি হিসেব করে রাখিনি যে কত টাকা বিগত ৫-৬বছরে তার থেকে তারি অগোচরে নিয়েছি
কিন্তু আমার এইও সামর্থ্য এখন নেই যে তাকে কোনো একটা অ্যামাউন্ট ধরে টাকা দিয়ে দিবো । আমি নিয়ত করেছিলাম যে আমার সামর্থ্য হলে তাকে দশ‌ হাজার টাকা দিয়ে , তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবো সেসময়

আমার এরূপ করা কি ঠিক হবে ? আর আমি সামর্থ্যবান হওয়া অব্দি কি করলে চিন্তামুক্ত থাকতে পারি , আমার খুবই ভয় হচ্ছে
মৃত্যুর পরে এই জবাবদিহিতা নিয়ে...

1 Answer

0 votes
by (63,080 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

যখন কোন মানুষ কারো সম্পদ নষ্ট করে বা চুরি করে এবং তার পক্ষে তাকে জানানো কঠিন হয়ে যায় কিংবা জানালে সংকট আরও বাড়ার আশংকা থাকে; যেমন— তাদের মাঝে সম্পর্ক নষ্ট হওয়া; সেক্ষেত্রে জানানোটা আবশ্যকীয় নয়। বরং সম্ভাব্য যে কোন পদ্ধতিতে তাকে সম্পদটা ফিরিয়ে দিবে; যেমন তার একাউন্টে জমা করে দেওয়া কিংবা এমন কাউকে দেওয়া যে তার কাছে পৌঁছিয়ে দিবে কিংবা এ ধরণের অন্য কোন মাধ্যমে।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯. (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

 

চুরি করা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৮) যথাসাধ্য চেষ্টার পরেও যদি মালিককে খুঁজে পাওয়া না যায়, তখন উক্ত টাকা তার নামে ছাদাক্বা করে দিতে হবে। তাহ’লে আশা করা যায় আল্লাহ ক্ষমা করবেন। উল্লেখ্য যে, মালিক শনাক্ত হওয়ার পরেও লজ্জা বা অপমান মনে করে তাকে তার সম্পদ ফিরিয়ে না দিলে এবং তার নিকট মাফ না চাইলে মনে রাখতে হবে যে, ইহকালের শাস্তি ও অপমান হ’তে পরকালের শাস্তি ও অপমান অনেক কঠিন এবং ভয়াবহ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৭)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যত টাকা চুরি করেছেন তা হিসাব করে ভাইয়ের জমানো টাকার মধ্যে রেখে দিবেন। আর সেখানে রাখা সম্ভব না হলে ভাইকে হাদিয়া দিচ্ছেন বলে সব টাকা পরিশোধ করে দিবেন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে মাফ চেয়ে নিবেন এবং জীবনে এমন কোন দিন করবেন না বলে তওবা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
জাযাকাল্লাহু খাইরান ফিদ্ দুনিআ ওয়াল আখিরাহ

আমি তো এখনো সামর্থ্যবানও নই আর হিসেবও নেই কত টাকা নিয়েছি । তাই আমি চাচ্ছিলায সামর্থ্যবান হলে ১০০০০ টাকা তাকে দিয়ে দিবো আর এর পূর্বে তাওবাহ করে নিবো । তাহলে কি হবে না ?? 

by (63,080 points)
জ্বী, যখন সামর্থ্যবান হবেন তখন পরিশোধ করে দিবেন৷ তবে আপনি আরো চিন্তা ভাবনা করুন আপনি কত টাকা মত নিয়েছেন? এরপর যথাসম্ভব তার থেকে পরিমাণে একটু বেশী দেওয়ারই চেষ্টা করবেন৷
by
আমি সবসময় নিই নাই । বড় জোড় খুব প্রয়োজনে নিতে হতো .... তবে হিসেব টা আসলেই মনে নেই । তাই ইনশা'আল্লাহ , আমি সামর্থ্যবান হলে তাকে দশ হাজারের সাথে কিছু বাড়িয়ে হাদিয়া স্বরূপ বা যেকোনো ভাবে পরিশোধ করে দিবো , ইনশা'আল্লাহ ।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...