আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
190 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
edited by
আমার বাবার বাস্তবে দ্বীনের বুঝ নেই।বাস্তবেও বাবা আমাকে অনেক অপমান করেন, গালিগালাজ করেন।

বর্তমানে আমার একটা বিয়ের প্রস্তাব চলছে দ্বীনদার ছেলের সাথে। বাস্তবেও আব্বু এ প্রস্তাব টা নিয়ে আমার সাথে অনেক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে।আব্বু এ ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চায় না।
তবে আমি দুআ জারি রেখেছি আর ইস্তিখারা করছি রেগুলার এখন পর্যন্ত।
আজকে স্বপ্নে দেখি আমার বাবা এই প্রস্তাব টা নিয়েই আমাকে খুব নির্যাতন করছেন,খোলা বড় ময়দানে আমাকে পেটানো হচ্ছে আর সবাই তাকিয়ে আছে।আমি তখন দুআ ইউনূস পড়ছিলাম স্বপ্নে আর তাকবীর দিতে দেখেছি।

এরপর স্বপ্নের শেষ দৃশ্যে দেখলাম আমার বাবা আজান দিচ্ছেন। আমিও কেঁদে কেঁদে আজান দিচ্ছি বাবার সাথে ।কান্নাটা আমার মন থেকে এসেছিলো এরকম ফিলিংস পেয়েছি।  হাইয়া আলাল ফালাহ এর সময়টা বেশি হাইলাইট হয়েছে স্বপ্নে। উল্লেখ্য যে,আমি একজন মেয়ে।মেয়েদের তো আজান দেওয়া বিধান নেই কিন্তু স্বপ্নে আমি মেয়ে হয়েও বাবার সাথে  আজান দিয়েছি কেঁদে কেঁদে।
এর কিছু ক্ষণ পর দেখি আমার বাবাকে এরেস্ট করার জন্য লোক এসেছে আমার বাবা আমাকে এমন মারধোর করার কারণে।তারপর আমার বাবাকে এরেস্ট করতে দেখলাম না শেষপর্যন্ত  তবে সেই লোকদের সাথে কথা বলছিল এমন দেখলাম।তাতে স্বপ্নটা শেষ হলো।

1 Answer

0 votes
by (676,160 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
জবাবঃ-


ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নটি আপনার মনের কল্পনা থেকে হয়েছে।
তাই এই স্বপ্ন নিয়ে আপনার ভাববার কিছু নেই।
আপনি উক্ত স্বপ্ন নিয়ে টেনশন করবেননা।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লেখ আছে যে আপনার বিয়ের প্রস্তাব চলছে দ্বীনদার ছেলের সাথে। 
এক্ষেত্রে আপনার বাবার অসন্তুষ্টির কারন কি?
পাত্রের দ্বীনদার হওয়াটা সমস্যা?
আপনার বাবা কি আপনাকে বেদ্বীন পাত্রের সাথে বিবাহ দিতে চায়?

নাকি ছেলের চাকুরী, জমি জমা ইত্যাদি বিষয়ক সমস্যার কারনে আপনার বাবা অসন্তোষ প্রকাশ করছে?

যদি পাত্রের দ্বীনদার হওয়ার কারনেই এই সমস্যা করে,আপনাদের মাঝে যদি কুফু ঠিক থাকে,তাহলে এই বিবাহ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে।

আর যদি আপনার বাবা দ্বীনদার পাত্রের সাথেই বিবাহ দিতে চায়, এই পাত্রের চাকুরী, জমি জমা ইত্যাদি বিষয়ক সমস্যার কারনে আপনার বাবা অসন্তোষ প্রকাশ করে,তাহলে এই প্রস্তাবে এগিয়ে না গিয়ে আপনার বাবার পছন্দ মতো অন্য কোনো দ্বীনদার পাত্রের সাথে বিবাহের পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...